ইন্টার মায়ামির জার্সিতে টানা ছয় ম্যাচে গোল করেছেন লিওনেল মেসি। আর্জেন্টাইন এই সুপারস্টারের ঝলকে ফিলাডেলফিয়া ইউনিয়নকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে লিগ কাপের ফাইনাল নিশ্চিত করেছে ইন্টার মায়ামি। সুবারো পার্কে উত্তেজনাকর সেমিফাইনালে গোল করে গত ছয় ম্যাচে ৯টি গোল করার কৃতিত্ব দেখিয়েছেন বিশ্বকাপ জয়ী মেসি।
মিয়ামির হয়ে স্কোরশিটে আরো নাম লিখিয়েছেন ভেনেজুয়েলার জোসেফ মার্টিনেজ, মেসির সাবেক বার্সা সতীর্থ জোর্দি আলবা ও বদলী খেলোয়াড় ডেভিড রুইজ। ফিলাডেলফিয়ার হয়ে সান্তনাসূচক গোলটি করেছেন আলেহান্দ্রো বেদোয়া।
শনিবার ফাইনালে নাশভিল এসসির মোকাবেলা করবে মিয়ামি। এনিয়ে ক্যারিয়ারে ৪২তম ফাইনাল ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা অর্জণ করবেন মেসি। মেক্সিকান ক্লাব মনটেরিকে আরেক সেমিফাইনালে ২-১ গোলে পরাজিত করে ফাইনালে উঠেছে নাশভিল। প্রথমবারের মত মেক্সিকো ও মেজর লিগ সকারের শীর্ষ ক্লাবগুলোকে নিয়ে আয়োজিত এই লিগ কাপের ফাইনালে যুক্তরাষ্ট্রের দুই দল মুখোমুখি হচ্ছে।
আরও পড়ুন…ইবিতে নওরীনের রহস্যজনক মৃত্যুতে সুষ্ঠু তদন্ত চায়- সহপাঠীরা
ফাইনাল নিশ্চিত করায় আগামী মৌসুমে কনকাকাফ চ্যাম্পিয়ন্স কাপ আঞ্চলিক টুর্নামেন্টে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে মিয়ামি। এর মাধ্যমে ২০২৫ সালে ফিফার বর্ধিত ক্লাব বিশ^কাপেও খেলারও সম্ভাবনা তৈরী করেছে মিয়ামি।
ম্যাচ শেষে মিয়ামি কোচ জেরার্ডো মার্টিনো বলেছেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ছিল আগামী মৌসুমে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে খেলার যোগ্যতা অর্জন করা, আমরা সেটা করে দেখিয়েছি। কনকাকাফ চ্যাম্পিয়ন্স কাপের বাছাইপর্বে খেলাটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এখন আমাদের লিগ কাপের ফাইনালে জেতার প্রস্তুতি নিতে হবে। এর মাধ্যমে পুরো দল দারুনভাবে উজ্জীবিত হবে।’
আরও পড়ুন…পৃথক পৃথক আয়োজনে জাতীয় শোক দিবস পালিত
পিএসজি থেকে গত ২১ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাবে যোগ দেবার পর ফিলাডেলফিয়ার বিরুদ্ধে সেমিফাইনাল ম্যাচটি ছিল সম্ভবত মেসির সামনে সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ। এমএলএস’এ অন্যতম শক্তিশালী দল ফিলাডেলফিয়া। ইস্টার্ন কনফারেন্স টেবিলে বর্তমানে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফিলডেলফিয়া, যেখানে মিয়ামির অবস্থান তলানিতে।
ঘরের মাঠে ইউনিয়নের রেকর্ডও খুব ভাল। এর আগে সুবারু পার্কে ৩৮ ম্যাচে মাত্র একটিতে পরাজিত হয়েছে তারা। কিন্তু আজ ম্যাচ শুরুর তিন মিনিটের মধ্যেই স্বাগতিকরা এলোমেলো হয়ে যায়। ইউক্রেনিয়ান ডিফেন্ডার সার্গেই ক্রিভসোভের লম্বা পাসে ইউনিয়নের ব্যাক-লাইন আগোছালো হয়ে পড়লে মার্টিনেজ জোড়ালো শটে গোলরক্ষক আন্দ্রে ব্লেককে পরাস্ত করেন। পাঁচ মিনিট পর ফিলাডেলফিয়া সমতায় ফেরার সুযোগ পেয়েছিল।
আরও পড়ুন…প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক সর্বজনীন পেনশন স্কীম নিয়ে রাঙ্গামাটিতে প্রেস ব্রিফিং
হাঙ্গেরিয়ান ড্যানিয়েল গাজডাগের শট সরাসরি মিয়ামি গোলরক্ষক ড্রেক ক্যালেন্ডারের হাতে জমা পড়ে। ১৯ মিনিটে গাজডাগ আরো একটি সুযোগ হাতছাড়া করেন। তার কার্লিং শটটি অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। ২০ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে লো স্ট্রাইকে মেসির গোলে ব্যবধান দ্বিগুন করে মিয়ামি। ফিলাডেলফিয়া চাপ সামলে নিজেদের এগিয়ে নিয়ে যাবার চেষ্টা করতে থাকে।
গাডজাগ ২৯ মিনিটে দুর পাল্লার শটে ক্যালেন্ডারকে পরীক্ষায় ফেলেছিলেন। ম্যাচের বেশীরভাগ পজিশন ছিল ইউনিয়নের দখলে। কিন্তু কাঙ্খিত গোলের অভাবে তারা এগিয়ে যেতে পারেনি। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে ফিনল্যান্ডের মিডফিল্ডার রবার্ট টেইলরের দারুন এক পাসে জোর্দি আলবা মিয়ামিকে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন।
আরও পড়ুন…লিবিয়ার সংঘর্ষে ২৭ জন নিহত, ১০০ জনেরও বেশি আহত
ম্যাচে ফিরে আসার তাগিদে ফিলাডেলফিয়ার কোচ জিম কার্টিন দ্বিতীয়ার্ধে অতিরিক্ত একজন স্ট্রাইকার নিয়ে মাঠে নামেন। ৫৫ মিনিটে ক্রিস ডোনোভানের শট বারের উপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। ৬৬ মিনিটে জ্যাকব গ্লেনসেনও একইভাবে সুযোগ নষ্ট করেন। ৭৩ মিনিটে কর্ণার থেকে বেদোয়া অবশ্য আর কোন ভুল করেননি। তবে ম্যাচ শেষের ৬ মিনিটের আগে রুইজের গোলে বড় ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে সফরকারীরা।