মহব্বত কিংবা মান অভিমান যেভাবেই হোক, স্বামীকে ভাই বলে সম্বোধন করা ইসলামের বিধান অনুযায়ী উচিত নয়। কেননা হাদিস শরীফে এ বিষয়ে নিষেধ করা হয়েছে। তদরুপভাবে স্ত্রীকে বোন বলেও বলা যাবে না। তবে এক্ষেত্রে বৈবাহিক সম্পর্কে কোনো প্রভাব অবশ্য পড়বে না।
স্বামী-স্ত্রী সুখে-দুঃখে একসঙ্গে কাটিয়ে দেন পুরো জীবন। জীবনের অনেক চড়াই-উতড়াইয়ের সাক্ষী হন তারা। একে-অপরকে সম্বোধন করেন বিভিন্ন নামে।
অনেক সময় স্বামী তার স্ত্রীকে বোন এবং স্ত্রী তার স্বামীকে ভাই বলে সম্বোধন করেন। ইসলামে এই বিষয়টিকে অনুৎসাহিত করা হয়েছে। দুজনের পারস্পরিক এমন সম্বোধনকে মাকরুহ বলা হয়েছে।
আলেমদের মতে, স্ত্রীকে বোন বা আপু বলে ডাকা মাকরুহ। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘এক ব্যক্তি নিজ স্ত্রীকে বলল, হে আমার বোন। রাসুল (সা.) তা শুনে জিজ্ঞেস করলেন, ‘সে কি তোমার বোন?’ তিনি তা অপছন্দ করেন এবং তাকে এভাবে ডাকতে নিষেধ করেন।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ২২০৪)
একইভাবে স্বামীকে ভাই বলে সম্বোধন করাও অনুচিত। তবে কেউ এমন বলে ফেললে এর কারণে বৈবাহিক সম্পর্কের কোনো ক্ষতি হবে না। (ফাতহুল কাদির ৪/৯১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫০৭; রদ্দুল মুহতার ৩/৪৭০)
তবে স্বামী স্ত্রীকে বোন বলে সম্বোধনের মাধ্যমে এমন ইচ্ছা করে যে, আমার বোন যেমন আমার জন্য হারাম, তুমিও তেমনি আমার জন্য হারাম; তাহলে তা ‘জিহার’-এর অন্তর্ভুক্ত হবে। এমতাবস্থায় স্ত্রী-স্বামীর মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক বহাল থাকবে না যতক্ষণ না স্বামী ‘কাফ্ফারা’ আদায় করে।
আর জিহারের কাফ্ফারা হলো ধারাবাহিকভাবে দুই মাস রোজা রাখা বা ৬০ জন অসহায় ব্যক্তিকে খাওয়ানো। (সুরা মুজাদালাহ, আয়াত : ৩)
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা নিজেদের স্ত্রীদের ‘জিহার’ করে তারা যেন জেনে রাখে যে, তারা তাদের মা নয়, তাদের মা তো তারাই যারা তাদেরকে প্রসব করেছে, তারা তো কেবল অশালীন ও মিথ্যা কথা বলে, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ ক্ষমাশীল ও মার্জনাকারী।’ (সুরা মুজাদালাহ, আয়াত : ২) তাই এ ধরনের অহেতুক ঝামেলা এড়াতে স্ত্রীকে বোন এবং স্বামীকে ভাই সম্বোধন করা থেকে বিরত থাকাই নিরাপদ।