তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সাংবাদিকদের কল্যাণে ও গণমাধ্যমের বিকাশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে ভূমিকা রেখেছেন তা নজিরবিহীন।
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যকালে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, সাংবাদিকবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের কল্যাণে ও গণমাধ্যমের বিকাশে যে ভূমিকা রেখেছেন, তা নজিরবিহীন। আমরা মনে করি, সমালোচনা পথচলাকে শাণিত করে, কাজের জন্য সহায়ক এবং বাংলাদেশে গণমাধ্যমের যে স্বাধীনতা আছে, সেটি উন্নয়নশীল বিশ্বের জন্য একটি দৃষ্টান্ত।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘গত ১৫ বছরে দেশে পত্রিকার সংখ্যা সাড়ে ৪শ’ থেকে ১ হাজার ২৬০টিতে উন্নীত হয়েছে। বেসরকারি টেলিভিশন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত দিয়ে শুরু হয়েছিল এবং এরপর বিএনপি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমল শেষ হওয়া পর্যন্ত ১০টি ছিল। আজকে ৩৫টি টিভি চ্যানেল সম্প্রচারে আছে, আরও কমপক্ষে ৫টি খুব সহসা সম্প্রচারে আসবে। অনলাইন গণমাধ্যম কত হাজার সেটি একটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয়। এগুলোই প্রমাণ করে যে শেখ হাসিনা এবং তাঁর সরকার কতোটুকু গণমাধ্যমবান্ধব।’
আরও পড়ুন>> ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে মধ্যরাতে ইলিশ শিকারে নামছে জেলেরা
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘একজন সাংবাদিক মারা গেলে কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে তার পরিবার ৩ লাখ টাকা অনুদান পায়, অসুস্থ সাংবাদিকরা অনুদান পান। আমরা ট্রাস্টের বিধিমালা সংশোধন করেছি, এখন থেকে অসচ্ছল সাংবাদিকদের মেধাবী শিক্ষার্থী সন্তানেরাও অনুদান পাবেন। সবাইকে অবাক করে করোনাকালে আমরা ট্রাস্ট থেকে সাংবাদিকদের এককালীন সহায়তা দিয়েছি। দেশব্যাপী ৭ হাজারের বেশি সাংবাদিক অনুদান পেয়েছে। ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপালসহ উপমহাদেশের কোনো দেশে এটি হয়নি। এমনকি ইউরোপের কোনো দেশেও সাংবাদিকদের জন্য আলাদা কোনো বরাদ্দ ছিল না, যেটি জননেত্রী শেখ হাসিনা দিয়েছেন।’
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি সমাবেশের নামে ২৮ অক্টোবর কি করেছে আপনারা জানেন। সাংবাদিকরা কোনো দল করে না, তারা সংবাদ সংগ্রহের জন্য সেখানে গিয়েছিল এবং ৩২ জনের বেশি সাংবাদিক আহত হয়েছে, যারমধ্যে ২০ জনই বিএনপি বিটের। একজন সাংবাদিককে মাটিতে টেনে-হিঁচড়ে সাপকে যেভাবে মারা হয়, সেভাবে মারা হয়েছে, ভাগ্য ভালো তার মাথায় হেলমেট ছিল। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি অনুরোধ জানাব, সাংবাদিকদের যারা নির্যাতন করেছে আহত করেছে, পিটিয়েছে সেই দুষ্কৃতিকারী, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করুন, কলম ধরুন, পত্রিকার পাতায় লিখুন, টেলিভিশনে প্রতিবেদন পেশ করুন। তবে একইসাথে উদ্বেগ প্রকাশ করি যে, রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস এবং আরও যে সমস্ত সংগঠন আছে, তারা একজন সাংবাদিক নিয়েও অনেক সময় বিবৃতি দেয়, আর ২৮ তারিখ ৩২ জনকে পেটানো হলো, এত ঘটনা ঘটল, কোনো বিবৃতি নাই। আমি সাংবাদিকদেরকে অনুরোধ করব, তাদের কাছে চিঠি লেখার জন্য যে, তারা কেন নিশ্চুপ।
ওয়েজবোর্ড নিয়ে তিনি বলেন, ‘৯ম ওয়েজবোর্ড প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন, কিন্তু কিছু সংবাদপত্র মালিক মামলা করায় সেটি বন্ধ রয়েছে। মালিক পক্ষকে বিনীতভাবে অনুরোধ, ৯ম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন করা উচিত এবং কথায় কথায় ছাঁটাই উচিত নয়। আর ১০ম ওয়েজবোর্ড গঠন করার প্রক্রিয়া শুরু করার ইতোমধ্যেই মন্ত্রণালয়ে ফাইল উপস্থাপনের জন্য বলেছি।’
বিএফইউজে সভাপতি ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে এবং মহাসচিব দীপ আজাদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী ছাড়াও বিএফইউজের আঞ্চলিক নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন।
ইবাংলা/এসআরএস