দীর্ঘদিন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে বিএনপি আন্দোলন করে আসছে। এরই মধ্যে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক খালেদা জিয়া প্রসঙ্গে চিঠি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।
গত ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো এক চিঠিতে তিনি বলেন, আমি তাকে (খালেদা জিয়া) মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য আপনার (শেখ হাসিনা) সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, যাতে তিনি দেশের বাইরে জরুরি ও বিশেষ চিকিৎসা নিতে পারেন। খবর- এএফপির।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক চিঠিতে আরও বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি দুই পক্ষের রাজনৈতিক সংলাপ ও সমঝোতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে।
আরও পড়ুন>> আইসিএমএবি বেস্ট কর্পোরেট অ্যাওয়ার্ড পেল ইসলামী ব্যাংক
একই চিঠিতে বাংলাদেশ সরকারকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গ্রেপ্তারসহ সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে এমন সব স্বেচ্ছাচারী গ্রেপ্তার বন্ধের আহ্বান জানান হাইকমিশনার।
এদিকে, খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানিয়েছেন, মেডিক্যাল বোর্ডের তত্ত্বাবধায়নে চেয়ারপারসন কেবিনে সার্বক্ষণিক নিবিড় পর্যবেক্ষণে আছেন। চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে।
এর আগে, ২৫ অক্টোবর খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা দিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিন চিকিৎসকের নেতৃত্বে ২৬ অক্টোবর খালেদা জিয়ার যকৃতের রক্তনালিতে সফল অস্ত্রোপচার হয়।
ওই তিন চিকিৎসক হলেন— যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটির স্কুল অব মেডিসিনের লিভার ও কিডনি প্রতিস্থাপন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক হামিদ আহমাদ আবদুর রব, ইন্টারভেনশনাল অনকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ক্রিসটোস স্যাভাস জর্জিয়াডেস ও হেপাটোলজির অধ্যাপক জেমস পিটার হ্যামিলটন। অস্ত্রোপচারের ফলে লিভার সিরোসিসজনিত জটিলতা কিছুটা উপশম হবে বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসকরা।
গত ৯ আগস্ট থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন খালেদা জিয়া। এরপর থেকে কয়েক দফায় তাকে সিসিইউতে নেওয়া হয়েছে।
৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া হার্টের সমস্যা ও লিভারসিরোসিস ছাড়াও নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। এ ছাড়া আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, দাঁত ও চোখের সমস্যাসহ নানান জটিলতা রয়েছে তার। এরই মধ্যে কয়েক দফা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন তিনি। গত বছরের জুনে খালেদা জিয়ার এনজিওগ্রাম করা হলে তার হৃদ্যন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর একটিতে রিং পরানো হয়।
খালেদা জিয়ার জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পাঁচ বছরের সাজা হয়। সেদিন থেকে তিনি কারাবন্দী হন। ২০২০ সালের মার্চে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে সরকার খালেদা জিয়ার দণ্ড ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে মুক্তি দেয়। এরপর দফায় দফায় তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে।
ইবাংলা/এসআরএস