কমছে কর্মঘণ্টা, সপ্তাহে ছুটি ৩ দিন!

ইউরোপের অধিকাংশ দেশই ভুগছে কর্মী সংকটে। নানা পদক্ষেপেও সমাধান মিলছে না। এজন্য নেয়া হয়েছে নতুন পদক্ষেপ। কমিয়ে আনা হয়েছে কর্মঘণ্টা। একইসঙ্গে ছুটিও বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। যার মাধ্যমে না কি মিলবে কর্মী সংকটের সমাধান!

বুধবার (৩১ জানুয়ারি) জার্মানির সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।

উৎপাদনশীলতা ঠিক রেখে কর্মীদের ওপর চাপ কমানোসহ নানা বিষয়কে মাথায় রেখে বিভিন্ন কোম্পানি নানা পদক্ষেপ নেয়। প্রচলিত নিয়মকেও অনেক সময় পিছনে রেখেও নতুন ব্যবস্থা নেয়া হয়। যুগের সঙ্গে তাল মেলাতেও পরিবর্তন হয় চাকরির ক্ষেত্রে।

তবে জার্মানির এবারের গল্পটা একটু ভিন্ন। দীর্ঘ সময় ধরে তারা কর্মী সংকটে রয়েছে। এজন্য নানা পদক্ষেপ নেয়া হলেও তা তেমন ফলপ্রসূ হয়নি। ফলে দেশটিতে এবার নতুন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। দেশটিতে এবার পরীক্ষামূলকভাবে কর্মীদের কাজের সময় কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

বেশকিছু কোম্পানি এমন সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে চলেছে। এতে করে একদিকে উৎপাদনশীলতা বাড়বে, অন্যদিকে বেশি সংখ্যক কর্মীকে কাজে সম্পৃক্ত করা যাবে। আর তাতে করেই মিলবে সংকটের সমাধান। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকেই দেশটির ৪৫টি কোম্পানি ও সংস্থা এ সিদ্ধান্ত চালু করছে।

আরও পড়ুন>>রিজার্ভ নামলো ১৯ বিলিয়নের ঘরে 

ডয়েচে ভেলে জানিয়েছে, আগামী ছয় মাসের জন্য এসব কোম্পানি সপ্তাহে চার দিনের কর্মদিবসের সপ্তাহ চালু করতে যাচ্ছে। সময় কমিয়ে দিলেও কর্মীদের বেতনে এর কোনো প্রভাব পড়বে না। কর্মীদের প্রাপ্য বেতনের সবটাই প্রদান করবে কোম্পানি।

ফোর ডে উইক গ্লোবাল’র (৪ ডিডব্লিউজি) সঙ্গে উদ্যোগে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে রয়েছে এন্ট্রারপ্রেনার। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, সপ্তাহে চারদিনের কর্মদিবসের ফলে কর্মীদের উৎপাদনশীলতা বাড়বে। এতে করে দেশের কর্মী সংকট সমস্যার সমাধান হবে।

দেশটি এমনিতে পরিশ্রম ও দক্ষতার জন্য বিখ্যাত হলেও কয়েক বছর ধরে তাদের উৎপাদশীলতা কমে গেছে। উদ্যোগের পক্ষের লোকরা বলছেন, সপ্তাহে পাঁচ দিনের বদলে চার দিন কাজ করলে কর্মীরা বেশি চঞ্চল থাকেন। এর ফলে কাজে উৎপাদনশীলতা বাড়ে।

এ ছাড়া যারা পাঁচ দিন কাজে আগ্রহী না তারাও এর মাধ্যমে কর্মক্ষেত্রে যুক্ত হবেন। ফলে কর্মী সংকট অনেকটাই কমে আসবে।

কেমব্রিজ ও বোস্টনের গবেষকরা চার দিনের কর্মঘণ্টা নিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রায় তিন হাজার কর্মীর ওপর গবেষণা চালিয়েছিলেন। এতে দেখা গেছে, এমন পদক্ষেপের কারণে ৪০ শতাংশ কর্মী কাজে কম চাপ অনুভব করছেন। এ ছাড়া কর্মীদের মাঝে চাকরি ছাড়ার প্রবণতাও প্রায় ৫৭ শতাংশ কমেছে।

গবেষণায় আরো দেখা গেছে, কর্মঘণ্টা কমানোর ফলে কর্মীদের অসুস্থতাজনিত ছুটি নেয়ার প্রবণতাও কমেছে। এতে অংশ নেয়া ৬১টি কোম্পানির মধ্যে ৫৬টি কর্মীর আয় বেড়েছে। অধিকাংশ কোম্পানিই পরীক্ষামূলক সময়ের পরও এ কার্যদিবস চালু রাখতেও আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

ইবাংলা/এসআরএস