মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম এক পরিবারের সন্তান ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের আওয়ামী লীগ কর্মী শাহরিয়ার লিয়নের ওপর পুলিশের উপস্থিতিতে অতর্কিত হামলা করেছে আওয়ামী লীগের একদল উচ্ছৃঙ্খল কর্মী। গত সোমবার রাত ১০টার দিকে মেহেরপুর সদর উপজেলার রাধাকান্তপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন…তথ্য পেতে কেউ যেনো হয়রানির শিকার না হয়: রাষ্ট্রপতি
হামলার খবর পাওয়ার পরে রাত ১১টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়- লিয়নের ওপর অতর্কিত হামলা করলে স্থানীয় জনগণ হামলাকারীদের উপর চড়াও হয়। এতে উভয় পক্ষের আরও ছয়জন আহত হয়।
আহতরা হলেন- মেহেরপুর জেলা বর্তমান আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি, সাবেক যুবলীগের কেন্দ্রীয় সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাসেম মাস্টারের ছেলে শাহরিয়ার লিয়ন (৪০), একই গ্রামের আনসার আলীর ছেলে আরিফ হোসেন (৩৯) পালু শেখের ছেলে মোছাব আলী (৪৫) এবং নজরুল ইসলাম (৪০)। অপর পক্ষের আহতরা হলেন- একই গ্রামের রেজাউল হকের ছেলে আনারুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর আলম ও মহসিন আলীর ছেলে ফারুক হোসেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা আহতদের উদ্ধার করে মেহেরপুর ২৫০শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ও মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে শাহরিয়ার লিয়নের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানান কর্তব্যরত চিকিৎসক।
আরও পড়ুন…ভিন্নধর্মী ঈদ উপহার মেঘনা বাংলাদেশের
এবিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য ইসমাইল হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষে নৈাকা মার্কা পক্ষের নেতাকর্মীরা অধিপত্য বিস্তারের জন্য গ্রামের মসজিদ, ঈদগাহ ও গোরস্তানের কমিটি পুনর্গঠন করে দখল নিতে চাই। আমাদের ইদগাহ কমিটির মেয়াদ এখনো ১ বছর আছে। তারা আমাকে, মসজিদ কমিটিকে এবং গ্রামের মুরুব্বিদের না জানিয়ে গোপনে কমিটি করে ঈদগাহ মাঠ রং করে।
এ অনিয়মের বিরুদ্ধে গ্রামের মানুষ প্রতিবাদ করলে পরিবেশ উতপ্ত হয়। সোমবার (১লা এপ্রিল) তারাবি নামাজ শেষে গ্রামবাসির সাথে মহসিন আলীর ছেলে ভনা ও ফারুক, রানা, হামিদুল ও অন্যান্যদের বাকবিতান্ডা হয়। এ সময় লিয়ন এসে উভয়পক্ষকে শান্ত করে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়।
এর কিছুক্ষন পর গ্রামে পুলিশ আসে এবং লিয়ন’কে ডেকে নিয়ে যায়। লিয়ন পুলিশের সাথে কথা বলার সময় আমজাদ হোসেনের ছেলে সেলিম, রেজাউল হকের ছেলে রানা হোসেন ও জাহাঙ্গীর, কিতাব আলীর ছেলে মিলটন, মহসিন আলীর ছেলে উজ্জ্বল মিয়া (ভনা)।
আরও পড়ুন…সোমবার ঢাকায় আসছেন ভুটানের রাজা ওয়াংচুক
ও ফারুক এবং মোজাম্মেল হকের ছেলে হামিদুল ইসলামের নেতৃত্বে ২৫/৩০ জন লোক আগে থেকে প্রস্তুত রাখা দেশীয় তৈরী অস্ত্র দিয়ে তার (লিয়ন) ওপর অতর্কিত হামলা করে। পুলিশের সামনে লিয়নের মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলে লিয়ন রক্তাক্ত জখম হয়ে মাটিতে লুটাইয়া পড়ে। গ্রামের সবচেয়ে শান্ত-ধীর এবং জনপ্রিয় ছেলে লিয়নের জখম দেখে স্থানীয় জনতা হামলাকারীদের ওপর চড়াও হয়। এতে উভয় পক্ষে আরও ছয়জন আহত হয়।
এসময় উপস্থিত পুলিশের সদস্যরা হামলাকারীদের আটক করার পরিবর্তে স্থানীয় জনতার উপর চড়াও হয় এবং মার-ধর করে। পরে লিয়নের আপনভাই সোহান ও চাচাতো ভাই আরিফ, ফুপাতোভাই মোছাব, নজরুলসহ অন্যান্য আত্মীয়-সজন এবং পাড়া-প্রতিবেশিরা আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পুলিশ তখন লিয়নের আত্মীয়-সজনদের উপর লাঠিচার্য করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এর কিছুক্ষণ পরে পুলিশের সঙ্গে ভনা ও ফারুকদের আবারও ঘুরতে দেখা যায়।
স্থানীয় জনগণ বলছে- গন্ডগোল থামিয়ে বাড়ি যাওয়া লিয়নকে পুলিশের ইন্ধনে বাড়ি থেকে ডেকে এনে পুলিশের সামনেই মারার জন্য এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। কিন্তু লিয়নের বাবা, মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সবচেয়ে সৎ ব্যক্তি, আদর্শ শিক্ষক ও।
আরও পড়ুন…শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ইন্দোনেশিয়া
সাদামনের মানুষ বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাসেম সবাইকে থামিয়ে রেখেছেন। তিনি (আবুল কাসেম মাস্টার) বলছেন- রক্তের বদলে রক্ত ঝরানোর প্রয়োজন নেই; দেশে সংবিধান আছে-আইন আছে, আইনের মাধ্যমে যা হবার হবে। এদিকে এ ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ কনি মিয়া বলেন, পরবর্তি পিরস্থিতি শান্ত রাখতে বর্তমানে এলাকায় বিপুল পরিমান পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।