টানা ৪৩ ঘণ্টা চেষ্টায় সুন্দরবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে

বাগেরহাট প্রতিনিধি

দীর্ঘ ৪৩ ঘণ্টা চেষ্টার পর সুন্দরবনে লাগা আগুন শতভাগ নিয়ন্ত্রণে। সোমবার (৬ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় ঘটনাস্থল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সাংবাদিকদের কাছে এই তথ্য জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (প্রশাসন) ও মেইনটেন্স লেফটেন্যান্ট কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘বনের আগুন নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয়। এটা সাধারণ কোনো আগুন নয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে অক্লান্ত পরিশ্রম করে এই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে হয়। এ কাজে সব সংস্থা থেকে সহযোগিতা পেয়েছি। সবাই মিলে একযোগে কাজ করে আগুন শতভাগ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। তবে আগুন পুরোপুরি নেভতে আরও দুই থেকে তিন দিন সময় লাগতে পারে বলে জানান তিনি। এখন পরিস্থিতি তীক্ষ্ণভাবে পর্যবেক্ষণ করছি, চারদিকে নজর রাখা হচ্ছে।’

আরও পড়ুন…ঝড়বৃষ্টি থাকবে আরও ছয়দিন

তাজুল ইসলাম চৌধুরী আরো বলেন, ‘এখানে প্রতিবছরই এরকম সময়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে। আর এ ঘটনায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে অনেক প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হয়। তাই সবাইকে সতর্ক থাকবে হবে। যেহেতু সুন্দরবন আন্তর্জাতিক একটি ঐতিহ্য, তাই এই বনকে রক্ষার দায়িত্ব সবার।’

খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষণ মিহির কুমার দো জানান, আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ আনতে সোমবার (৬ মে) ভোর থেকে তৃতীয় দফায় কাজ শুরু করা হয়। এখন আর কোথাও আগুন এমনকি ধোঁয়াও বের হচ্ছে না। কাজেই আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে যেতেতু বনের আগুন তাই বন বিভাগের পক্ষ থেকে আরও কয়েকদিন এই এলাকা পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।

এর আগে সুন্দরবনের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে তৃতীয় দিনের মতো সোমবার ভের থেকে বনবিভাগ, নৌবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা কাজ করেছেন। আগুন নেভানোর কাজে সহায়তা করেছেন স্থানীয়রাও।

সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জ সহকারী বন সংরক্ষক রানা দেব জানান, গতকাল রাত ১টা পর্যন্ত বন বিভাগ এককভাবে আগুন নেভাতে পাম্প মেশিন দিয়ে পানি স্প্রে করেছে। এর ফলে এখন আর কোথাও তেমন একটা আগুন দেখা যাচ্ছে না। যেখানে ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে সেখানেই পানি দেওয়া হচ্ছে। নিয়ন্ত্রিত আগুন পুরোপুরি নেভাতে সোমবার সকাল ৭টা থেকে বন বিভাগকে সহায়তায় কাজ শুরু করেছেন নৌবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।

আরও পড়ুন…৪ টাকার টমেটো ঢাকায় ৪০-১০০ টাকা

তিনি আরও বলেন, ‘আগামী দুই দিন ধরে এ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রেখে পানি ছিটানো হবে। আপাতত আর ভয়ের কোনো কারণ নেই। কারণ আগুন যাতে আর ছড়াতে না পারে সেজন্য রোববার ফায়ার লাইন কেটে সেখানে পানি দিয়ে রাখা হচ্ছে। আর আগুনের অস্তিত্বের তেমন একটা নেই, শুধু কিছু কিছু জায়গায় ধোঁয়া রয়েছে।’

গত শনিবার দুপুরে সুন্দরবনের আমরবুনিয়ার লতিফের ছিলা এলাকায় আকস্মিক এ আগুন লাগে। এদিকে আগুন লাগার কারণ এখনও পর্যন্ত জানাতে পারেনি বনবিভাগ। তবে তা উদঘাটনে কাজ করছে বনবিভাগের তদন্ত কমিটি। আগুনে পুড়ে গেছে ৫ একর বনভূমি।

ইবাংলা/বা এ

আগুননিয়ন্ত্রণেসুন্দরবনের