প্রধান উপদেষ্টা – কারখানা চালু রেখে সমস্যার সমাধান করুন

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিশেষ করে পোশাক ও ওষুধ শিল্পের শ্রমিকদের উদ্দেশে কারখানা চালু রেখে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘শ্রমিক ভাইবোনদের অনেক দুঃখ আছে। কিন্তু সেই দুঃখ প্রকাশ করতে গিয়ে আপনাদের মূল জীবিকাই বন্ধ হওয়ার উপক্রম হলে সেটা ঠিক হবে না। দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হলে সেটা ঠিক হবে না। আপনারা কারখানা খোলা রাখুন। অর্থনীতির চাকা সচল রাখুন।’
প্রধান উপদেষ্টা দৃঢ়তার সাথে উল্লেখ করেন কোথাও কোনো বাধা থাকলে শ্রমিক-মালিক উভয় পক্ষের সাথে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান অবশ্যই বের করা হবে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এক মাস পূর্তি উপলক্ষ্যে বুধবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে এ কথা বলেন। গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর আজ তিনি দ্বিতীয় বারের মত জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন।

ড. ইউনূস জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে বলেন, তৈরি পোশাক ও ওষুধ শিল্প এলাকায় শ্রমিক ভাই-বোনেরা তাদের অভিযোগ জানানোর জন্য ক্রমাগতভাবে এই শিল্পের কার্যক্রম পরিচালনা বন্ধ রাখতে বাধ্য করছেন। এটা আমাদের অর্থনীতিতে যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে সেটা মোটেই কাম্য নয়। এমনিতেই ছাত্র-শ্রমিক-জনতার বিপ্লবের পর যে অর্থনীতি আমরা পেয়েছি সেটা নিয়ম-নীতিবিহীন দ্রুত ক্ষীয়মাণ একটা অর্থনীতি। প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো প্রায় ধ্বংস প্রাপ্ত। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। আমরা এই অর্থনীতিতে প্রাণ সঞ্চারের চেষ্টা করছি। ঠিক এই সময়ে আমাদের শিল্প কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে গেলে দেশের অর্থনীতিতে বিরাট আঘাত পড়বে। সেটা কিছুতেই কারো কাম্য হতে পারে না।’

শ্রমিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘দেশের অর্থনীতিকে সোজা হয়ে দাঁড়াতে দিন। আমরা আপনাদের সমস্যার স্থায়ী সমাধান বের করার জন্য সর্বশক্তি প্রয়োগ করবো।’

তিনি মালিক পক্ষের কাছে শ্রমিকদের সঙ্গে বোঝাপড়া করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা ‘কারখানা সচল রাখুন। অর্থনীতির দুর্বল স্বাস্থ্যকে সবল করে তুলুন।’

পোশাক ও ওষুধ শিল্প দেশের গৗরব উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা এই দুই শিল্পকে বিশ্বের শীর্ষ পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই। এই দুই শিল্পের কোথায় কোথায় বাধা আছে, সমস্যা আছে সেগুলো চিহ্নিত করে তাকে বাধা মুক্ত করতে চাই।’

তিনি বলেন, শ্রমিক মালিক সম্পর্কটা একটা নির্ভরযোগ্য, আনন্দদায়ক করে গড়ে তুলতে পারলে সব কিছুই সম্ভব।

তিনি আরো বলেন, আমাদের সরকারের প্রথম মাস কাটলো। দ্বিতীয় মাস থেকে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়ার ভিত্তি হিসেবে নতুন শ্রমিক-মালিক সম্পর্কের সূচনা করতে চাই। এটা দেশের সবার কাম্য। দেশের নতুন প্রজন্ম নির্ভয়ে যেন তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে এগিয়ে যেতে পারে আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করছি।