দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির চত্বরে ১৩টি গ্রামের গ্রামবাসী ক্ষতিপুরনের দাবীতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ক্ষতিগ্রস্থ ১৩টি গ্রামের ৩হাজার গ্রামবাসী ক্ষতিপুরনের দাবীতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ক্ষতিগ্রস্থদের দাবি আদায় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি মোঃ গোলাম মোস্তফা নেতৃত্বে এই বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্টিত হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি বলেন, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ক্ষতিগ্রস্থদের দাবি আদায়ে গত ০৫/১১/২০২৩ইং তারিখে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লি: পার্বতীপুর, দিনাজপুর কে আমরা ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামবাসীরা লিখিতভাবে অভিযোগ করি। গত ২২/০১/২০২৪ইং তারিখে আবারও লিখিতভাবে অভিযোগ করি। গত ১২/০২/২০২৪ইং তারিখে খনি কর্তৃপক্ষকে সময় দেওয়া হলেও তারা তোয়াক্কা করেন নি।
এরপর আবারও ২২/০৮/২০২৪ এবং ০৮/০৯/২০২৪ইং তারিখে লিখিতভাবে অবগত করা হয়। আগামী ২০দিনের মধ্যে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি কর্তৃপক্ষের নিকট ঘর-বাড়ী সার্ভের মাধ্যমে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবী জানান। সেই মর্মে বৈগ্রাম-কাশিয়া ডাঙ্গা, মোবারকপুর, জব্বর পাড়া, দক্ষিণ রসুলপুর (বড়), দক্ষিণ রসুলপুর (ছোট), পূর্ব জ্জবর পাড়া, চক মহেশপুর, হামিদপুর, উত্তর চৌহাটি, চৌহাটি, সাহাগ্রাম, দূর্গাপুর সহ এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থদের পূণরায় ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবী জানিয়েছিলাম কিন্তু খনি কর্তৃপক্ষ আমাদের প্রতি কোন গুরুত্ব দিচ্ছে না। সেই কারণে আজ আমরা এই বিক্ষোভ সমাবেশ করতে বাধ্য হয়েছি।
আমাদের ৬দফা চুক্তির দাবীসমূহ:
(০১) খনি কর্তৃপক্ষের সমঝোতা চুক্তি মোতাবেক ক্ষতিগ্রস্থ প্রতিটি পরিবার হতে চাকুরী দেওয়ার কথা থাকলেও গত ৫ বছরেও তা দেওয়া হয়নি, দ্রæত ক্ষতিগ্রস্থদের স্থায়ী চাকুরী দিতে হবে।
(০২) ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার ১৩টি গ্রামের বাড়ীঘর ফাটল, কাঁপুনি, ঝুঁকিপূর্ণভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছে তাদেরকে দ্রত পুন:বাসন করতে হবে।
(০৩) ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার ভূমিহীন প্রতিটি পরিবারকে মাইনিং সিটি অথবা উন্নতমানের বাসস্থান তৈরি করে দিতে হবে। (০৪) ক্ষতিগ্রস্থদের এককালীন অবশিষ্ট ক্ষতিপূরণের টাকা দিতে হবে।
(০৫) ক্ষতিগ্রস্থদের সুপেয় পানির ব্যবস্থা করতে হবে এবং ক্ষতিগ্রস্থদের মসজিদ, মন্দির, স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল ও রাস্তা পূর্ণ নির্মান করে দিতে হবে।
(০৬) ক্ষতিগ্রস্থদের যাদের জমি থেকে কয়লা উত্তোলন করা হচ্ছে তাদেরকে কয়লা উৎপাদন বোনাস ৫% দিতে হবে।
তিনি বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বলেন, আমাদের এলাকা ধ্বংস হয়ে গেছে। এখন আমাদের কিছুই বাঁকি নাই। বর্তমান যে গ্রামগুলি রয়েছে সেই গ্রামগুলির জনসাধারণ আমরা রাতে ঘুমাতে পারছিনা। প্রতি মূহুতে সামনে বিপদ দেখছি। চৌহাটি গ্রামের মোছাঃ মোসলেমা বেগম, মালেকা বেগম বলেন, খনি হওয়ার কারণে আমাদের বাড়ীঘর ধ্বংস হয়ে গেছে। রাতে ঘুমাতে পারি না। প্রতিদিন বাড়ী ফেটে যাচ্ছে। কর্তৃপক্ষ আমাদের ক্ষতি পূরণ দিবে বলে আশ্বাস দিলেও এখন আর দিচ্ছে না। এভাবে আমরা কীভাবে বসবাস করব?
বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, আল বিরোনী, রবিউল ইসলাম, মোঃ আব্দুর রহমান, মোঃ আলী হোসেন, মোঃ রবিউল ইসলাম মন্ডল, আল বেরনী, সাতার ইকবার নয়ন, আবেদ আলী, সাইদুল ইসলাম, মনিরুজ্জামান, সাইফুল ইসলাম, গোলাম রব্বানী, আব্দুর রহমান বাচ্চু, রবিউল ইসলাম, রেজাউল ইসলাম, হোসেন আলী, মহারাজ, মেনহাজুল ইসলাম, আব্দুর রশিদ মন্ডল, বিপ্লব হোসেন ও মমিদুল ইসলাম ও এবং তোফাজ্জাল হোসেন, বাবু , মফিজুল ইসলাম প্রমুখ।
এ বিষয়ে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ সাইফুল ইসলাম সরকারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওযা যায় নি। আয়োজনে ছিলেন, বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি খনি ক্ষতিগ্রস্থ বাস্তবায়ন কমিটি। আগামী ২০ দিনের মধ্যে দাবী মেনে না নিলে খনি ঘেরাও করা হবে।
ই-বাংলাঃ সা/হা