দুবাইতে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৫ উইকেটে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিলো পাকিন্তান।
শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ডেভিড ওয়ার্নারের ৪৯ রানে বিদায় নেওয়ার পর দল যখন ব্যাটিং বিপর্যয়ে। সেই মুহূর্তে ম্যাচের গল্পটা শুধুই ম্যাথ্যু ওয়েডের। ক্যাচ ড্রপের ফলে যে জীবন পেলেন, তাকে কাজে লাগালেন পরের তিন বলে টানা তিনটি ছক্কা মেরে। তাও শাহিন শাহ আফ্রিদির মতো বোলারকে।
আরও পড়ুন : একনজরে বাংলাদেশের ভরাডুবির বিশ্বকাপ
এক ক্যাচ ড্রপের পর টানা তিন ছক্কাতেই সেমিফাইনালে শেষ হয়ে গেলো পাকিস্তানের বিশ্বকাপ স্বপ্ন। ৫ উইকেটে হেরে বিদায় নিতে হলো বিশ্বকাপ থেকে।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ওভার শেষে ১৭৬ রান সংগ্রহ করে বাবর আজমরা। জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ডেভিড ওয়ার্নার ৪৯ রান করে বিদায় নেওয়ার পর অস্ট্রেলিয়া যখন ব্যাটিং বিপর্যয়ে, সেই মুহূর্তে মাঠে নেমে ঝড়ো ইনিংস খেলে শেষ ওভারে তিন ছক্কা মেরে দলকে জয় এনে দেন ম্যাথু ওয়েড।
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করেন পাক ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ান ও বাবর আজম। অপরদিকে দারুণ ফিল্ডিং করে পাকিস্তানকে চাপে রেখেছে অস্ট্রেলিয়া। অবশ্য তৃতীয় ওভারে রিজওয়ানের তুলে দেওয়া বল ধরতে পারলে অসাধারণ এক ক্যাচের মালিক হতে পারতেন ডেভিড ওয়ার্নার। তবে সে সুযোগ হারায় অজি ওপেনার।
আরও পড়ুন : নেটিজেনদের ঘুম কেড়েছেন এই গলফার
অষ্টম ওভারে চতুর্থ বলে মার্শের বলে ২ রান নিয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সবচেয়ে কম ম্যাচ খেলে ২৫০০ রান করার কীর্তি গড়েন পাক অধিনায়ক বাবর আজম। ৬২ ম্যাচ খেলে এই অর্জনে শীর্ষে থাকা ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলিকে ছাড়িয়ে যান তিনি। এরপর দশম ওভারে অ্যাডাম জাম্পার বলে ওয়ার্নারের হাতে ক্যাচ তুলে দেন এ ব্যাটার। ৩৪ বলে ৩৯ রান করে বিদায় নেন বাবর।
বাবরের বিদায়ের পর ফখর জামানকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরেন রিজওয়ান। ৩ ছয় ও ২ চারে ৪১ বলে অর্ধশতক তুলে নেন তিনি। তবে শেষদিকে এসে স্টার্কের বলে উইকেট হারান এ ব্যাটার। ৫২ বলে ব্যক্তিগত ৬৭ রান করে বিদায় নেন রিজওয়ান। গত ম্যাচগুলোতে ক্যামিও ইনিংস খেলা আসিফ আলী অবশ্য এ ম্যাচে কোনো রান না নিয়েই সাঝঘরে ফেরেন।
শেষ ওভারে স্টার্কের বলে উইকেট হারান শোয়েব মালিক। তবে থিতু হয়ে থাকা ফখর জামান ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৩১ বলে অর্ধশতক তুলে নেন। ৫৫ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। অপরপ্রান্তে ১ রানে অপরাজিত থাকেন হাফিজ।
জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই উইকেট হারান অজি অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। শাহিন আফ্রিদির দুর্দান্ত বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ডাক মেরে সাঝঘরে ফেরেন তিনি। এরপর ব্যাট করতে নামা মিচেল মার্শকে নিয়ে দলের হাল ধরেন ডেভিড ওয়ার্নার। তবে মার্শকে ফিরিয়ে ভালো সংগ্রহের দিকে এগিয়ে যাওয়া এ জুটি ভাঙ্গেন শাদাব খান। ২২ বলে ২৮ রান করে বিদায় নেন মার্শ।
আরও পড়ুন : ভারতীয় ক্রিকেটে শুরু দ্রাবিড় যুগ!
তৃতীয় উইকেটে ব্যাট করতে নেমে বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেননি স্মিথ। ব্যক্তিগত ৫ রানে শাদাব খানের দ্বিতীয় শিকার হন তিনি। ব্যাট হাতে থিতু হয়ে থাকা ওয়ার্নার অর্ধশতকের এক রান আগে উইকেট হারান। ৩ ছয় ও ৩ চারে ৩০ বলে ৪৯ রান নিয়ে সাঝঘরে ফেরেন তিনি।
নিজের শেষ ওভারে ম্যাক্সওয়েলকে ফিরিয়ে চতুর্থ উইকেট পূর্ণ করেন শাদাব। ব্যক্তিগত ৭ রানে বিদায় নেন অজি অলরাউন্ডার। এরপর বিপর্যয়ে পড়া দলকে টেনে তোলেন মার্কান স্টয়নিস ও ম্যাথু ওয়েড। শেষদিকে এসে জড়ো ইনিংস খেলে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান এ দুই ব্যাটার। ১৮তম ওভারের শেষ তিন বলে পরপর ৩ ছক্কা মেরে দলের জয় নিশ্চিত করেন ম্যাথু ওয়েড।
ইবাংলা/এএমখান/১২ নভেম্বর, ২০২১