‘রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ সাম্যবাদী সমাজ চেয়েছিলেন’

কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ ছোট বেলা থেকেই ছিলেন ন্যায়ের পথে আপসহীন। সাহিত্যকর্মেও তার সেই আপসহীনতার ছাপ পাওয়া যায়। এদেশে রুদ্রকে খণ্ডিতভাবে উপস্থাপনের রাজনীতি চলেছে। রুদ্র যেন তার প্রাপ্য সম্মান পায়, আমাদের সে খেয়াল রাখতে হবে। অভিমানের খেয়ায় চড়ে রুদ্র চলে গেছেন অনন্তের পথে। তিনি মানুষের জন্য সাম্যবাদী এক সমাজ প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন।

বুধবার (৩০ অক্টোবর) বিকেল ৪টায় একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ’র ৬৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা একথা বলেন।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজমের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির সচিব মোহা. নায়েব আলী। ‘নতুন রাজধানীর কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কবি সাখাওয়াত টিপু।

আলোচনায় অংশ নেন কবি মোহন রায়হান এবং রুদ্র স্মৃতি সংসদের সভাপতি সুমেল সারাফাত। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলা একাডেমির উপপরিচালক ড. সাহেদ মন্তাজ।

অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম বলেন, বেঁচে থাকতে যেমন, অকালপ্রয়াণের পরও তেমনি রুদ্র ঢাকার সাহিত্যজগতের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিগণিত হয়েছেন। কবিতা ও গানে তার স্বাতন্ত্র্য অল্পায়ু জীবনেই তৈরি হয়ে গেছে। রুদ্রের কবিতা বুঝতে হলে তার গণমুখী রাজনীতিকেও বুঝতে হবে। আশি-নব্বই দশকের প্রতিরোধী সাংস্কৃতিক আবহের আলোকেও তাকে আমাদের মূল্যায়ন করতে হবে।

মোহা. নায়েব আলী বলেন, রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ ছিলেন প্রেম ও দ্রোহের কবি। অতি অল্প বয়সে তিনি বাংলা কবিতায় যে প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন তা পাঠকের মাঝে তাকে অমরতা দিয়েছে।

কবি সাখাওয়াত টিপু বলেন, রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ স্বল্পায়ুর বহুপ্রজ লেখক। বেঁচে ছিলেন মাত্র ৩৫ বছর। স্বল্প লেখক-জীবনে তিনি অবিরল লিখেছেন কবিতা, গান, গল্প, নাটক, চিত্রনাট্যসহ নানা ধরনের লেখা। কম বয়সে চলে যাওয়ায় আমরা রুদ্র’র সাহিত্যের পূর্ণ বিকাশ দেখতে পাইনি। ফলে তিনি আমাদের কাছে তরুণই রয়ে গেছেন। তিনি আমাদের কাছে প্রৌঢ় নন, চিরতরুণ এক কবি।

তিনি বলেন, উত্তাল সময়ের সাহসের অনন্য নজির রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ। কবির কাজ মানুষের মনের কথা বলা। তিনি সাহিত্যে সেই কর্মটি করেছেন। মূলত তার ধ্বনি-আশ্রয়ী কবিতা ও গান তাকে গণমানুষের কাছাকাছি নিয়ে গেছে। আমাদের সাহিত্যক্ষেত্রে তার সত্যিকারের মূল্যায়ন হয়নি কিন্তু রুদ্র তো সব পুরস্কার-সম্মাননার ঊর্ধ্বে, গণমানুষের মনে বেঁচে আছেন আমাদের প্রিয় কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ।