কনকনে শীতে কাঁপছে রাজধানীসহ সারদেশের জনজীবন

বিশেষ প্রতিবেদক

সারদেশে কনকনে শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত। দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রির ঘরে নেমে আসছে। প্রচণ্ড শীতে জবুথবু হয়ে পড়েছে জনজীবন। বিশেষ করে রাতে বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে। রাতে কুয়াশার ঘনত্বও বেশি থাকছে। এ কারণে রাতে সড়কগুলোয় ধীরগতিতে যান চলাচল করছে। হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।

ভোর থেকেই রাজধানীসহ সারাদেশ ঢেকে গেছে ঘন কুয়াশায়। এতে ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল। হেডলাইট জ্বালিয়েও মিলছে না সুফল। এরই মধ্যে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪

আরও পড়ুন…গাজায় তীব্র শীতে ইসরায়েলের হামলা চলছেই

কারওয়ান বাজার, তেজগাঁও, মহাখালী, মোহাম্মদপুর, কল্যাণপুর, মিরপুর, উত্তরা, বিমানবন্দর ও খিলক্ষেতসহ আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বৃষ্টির মতো ঝিরিঝিরি কুয়াশায় ভিজে গেছে রাস্তাঘাট। যানবাহন চলছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। তবে ছুটির দিন হওয়ায় রাস্তাঘাটে মানুষের আনাগোনা তুলনামূলক কম। আর যারাই জীবিকার টানে বের হচ্ছেন বৃষ্টির মতো কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডায় পড়ছেন ভোগান্তিতে। গরম পোশাক গায়ে জড়িয়েও যেন রেহাই মিলছে না।

তেজগাঁও রেলস্টেশনের পাশে আগুন জ্বালিয়ে তাপ নিচ্ছিলেন কয়েকজন শ্রমজীবী মানুষ। তারা বলেন, প্রচণ্ড শীত লাগার কারণে আগুন জ্বালিয়ে গরমের তাপ নিচ্ছি। প্রচণ্ড শীত থাকলেও আগুন জ্বালানোর পরে কিছুটা ভালো লাগছে।

কারওয়ান বাজার এলাকায় এই প্রতিবেদকের কথা হয় রিকশাচালক আব্দুল মজিদের সঙ্গে। তিনি বলেন, বৃষ্টির মতো কুয়াশা পড়ছে ঠিক, তাই বলে ঘরে বসে থাকলে হবে? খাবো কী? বৌ-বাচ্চারা কষ্ট পাবে, আর আমি চেয়ে চেয়ে দেখবো? এটা হতে পারে না। তাইতো বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমেছি।

এক টুকরো গরম কাপড় আর সূর্যের মান ভাঙার দিকে তাকিয়ে আছেন মোহাম্মদপুর এলাকার ছিন্নমূল মানুষ। তাদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, শীতে কষ্ট হচ্ছে। গরম কাপড় আর কম্বল হলে ভালো হতো। কিন্তু তা কেনার সামর্থ্য কোথায়?

বিদ্যমান আবহাওয়া আরও কিছুদিন অপরিবর্তিত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুকের স্বাক্ষর করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগামী রোববার (৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যা পর্যন্ত সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা বাড়তে পারে। যদিও ঘন কুয়াশার কারণে সারাদেশের কোথাও কোথাও তীব্র শীত অনুভূত হতে পারে।

এতে আরও বলা হয়, এ সময় মধ্যরাত থেকে দুপুর পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। এতে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নদী পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগ সাময়িকভাবে ব্যাহত হতে পারে।
অন্যদিকে,
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা রের্কড হয়েছে ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে সকাল ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২ জানুয়ারি সকাল ৯টায় রেকর্ড হয়েছে ১১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। তেঁতুলিয়া প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত সহকারী কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ রায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আরও পড়ুন…সেনাবাহিনীর উপর সশস্ত্র হামলা : পাল্টা গুলিতে ইউপিডিএফ সন্ত্রাসী নিহত

এদিকে শীতের কারণে বেড়েছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগব্যাধিতে আক্রান্তের পরিমাণ। প্রতিদিনই জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোর বহির্বিভাগে জ্বর, সর্দি, ডায়রিয়া,নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা।

জেলার প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ বলেন, আজ সকালে তেঁতুলিয়ায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১০০ শতাংশ, এবং বাতাসের গতি ছিল ঘণ্টায় ১২-১৩ কিলোমিটার।

ইবাংলা/ বা এ