ইন্টারনেট দাম কমাতে ও সেবার মান বাড়াতে আইনি নোটিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

গুণগত মানসম্পন্ন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের পূর্ণাঙ্গ সেবার জন্য আইআইজি ও এনটিটিএনের দাম কমানো ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের মান নির্ধারণী বেঞ্চমার্ক নির্ধারণ করতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. মহিউদ্দিন আহমেদ নোটিশটি ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব এবং বিটিআরসি চেয়ারম্যানসহ মোট ছয়জনকে পাঠিয়েছেন।মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি তানিজিলা রহমান জুঁই তার পক্ষে এই আইনি নোটিশ পাঠান।

বিষয়টি নিয়ে মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান দুটি লেয়ার আইআইজি ও এনটিটিএনর প্রাইজ এখনো অনেক বেশি।

এক দেশ এক রেট এর আওতায় যখন ৫০০ টাকায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের প্যাকেজ নির্ধারণ হয়, তখন এই দুইটি লেয়ারে প্রাইজ কমানোর কথা ছিল। কিন্তু তা কমানো হয়নি।

এখন আবার ৪০০ টাকায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের প্যাকেজ দিতে চাচ্ছে সরকার। ঢাকায় এখনো ৪০০ টাকায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পাওয়া যায়। কিন্তু সেটি কোনো কাজের নয়।’

তিনি বলেন, ‘আমরা চাচ্ছি আইআইজি ও এনটিটিএনর লেয়ারে প্রাইজ কমাতে ও ইন্টারনেটের গুণগত মান নির্ধারণ করে কোয়ালিটি সেবা দেওয়া হোক।

৫ এমবিপিএস কোনো ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটই নয়, বরং ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের সর্বনিম্ন গতি হতে হবে ২০ এমবিপিএস। গ্রাহক স্বার্থ বিবেচনায় এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে।’

এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব ড. মো. মুশফিকুর রহমান, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. এমদাদ উল বারী, বিটিআরসির মহাপরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ খলিল-উর-রহমান, বিটিআরসির মহাপরিচালক আশিস কুমার কুণ্ডু, আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ে অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (আইআইজিএবি) সভাপতি আমিনুল হাকিম ও ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি ইমদাদুল হককে।

নোটিশে বলা হয়, গ্রাহকের প্রয়োজন মানসম্পন্ন এবং সর্বনিম্ন ২০ এমবিপিএস গতিসম্পন্ন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট। কিন্তু, সেবার মান নির্ধারণ করার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আইআইজি ও এনটিটিএনর সেবার মূল্য নামিয়ে আনা।

যেহেতু, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হচ্ছে আইআইজি (ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে) এবং এনটিটিএন (ন্যাশন ওয়াইড ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক)। যা গ্রাহক পর্যায়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগের জন্য এই মাধ্যম দুটির কোয়ালিটি এবং মূল্য পুনর্নির্ধারণ করা অতি আবশ্যক।

কিন্তু, নিয়ন্ত্রক কমিশন যদি গ্রাহক পর্যায়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের মূল্য কমিয়ে দেয় তাহলে অর্থের দিক থেকে হয়ত গ্রাহক উপকৃত হবে; কিন্তু সেবার মান আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

নোটিশে আরও বলা হয়, যেহেতু, নিয়ন্ত্রক সংস্থা কিছু আইআইজিকে মনোপলি ব্যবসার লক্ষ্যে ২০২১ সালে ৩৬৫ টাকা ব্যান্ডউইথ রেট ধার্য করে। তাছাড়া, বর্তমানে সকল আইআইজি ১৭০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে সেল করে। একইভাবে ২০২১ সালে এনটিএন এর প্রতি এমবি সর্বনিম্ন ২৫ টাকা ধার্য করে রেখেছে।

অথচ এনটিটিএনরা ৯ থেকে ১২ টাকার মধ্যে বর্তমানে ডাটা ক্যাপাসিটি বিক্রি করছে। মুক্তবাজার অর্থনীতিতে কম্পিটিশনের মাধ্যমে প্রাইস কমে যাচ্ছে, অথচ বিটিআরসি কিছু অসাধু ব্যবসায়ী গোষ্ঠীকে অনৈতিক সুবিধা দিয়ে বাবসা করার জন্য প্রাইজ বেধে দিচ্ছে যা মোটেও কাম্য নয়।

ওই নোটিশে আরও বলা হয়, আইআইজি ও এনটিটিএনের মূল্য পুনর্নির্ধারণ করে ব্রডব্যান্ড সেবা প্রদানকারীদের সামর্থ্যের মধ্যে এনে দেওয়া হলে গ্রাহক পর্যায়ে মূল্য কমিয়ে এনে মান নির্ধারণ করা গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী সম্ভব।

ইবাংলা বাএ

ইন্টারনেটনোটিশবাড়াতে