নারী শিক্ষা অধিকার নিয়ে কাজ করেন পাকিস্তানের নারী অধিকার কর্রী ও শান্তিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী মালালা ইউসুফজাই। এজন্য তাকে হামলারও শিকার হতে হয়। ২০১২ সালে তার মাথায় গুলি করে পাকিস্তানি তালেবানের সদস্যরা। তবে এতেও দমে যাননি তিনি। এরপর থেকে নিরলসভাবে নারী শিক্ষার অগ্রগতিতে কাজ করছেন মালালা।
এবার আফগানিস্তানের কিশোরীদের শিক্ষা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করলেন মালালা। আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী তালেবান স্থায়ীভাবে স্কুলের বাইরেই রেখে দিতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
তার আশঙ্কা, মেয়েদের শিক্ষার ব্যাপারে তালেবানের আরোপিত নিষেধাজ্ঞা সাময়িক নাও হতে পারে। রোববার (১৪ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির অ্যান্ড্রু মার শো’তে মালালা বলেন, ‘আমি খুব ভীত যে, মেয়েদের শিক্ষার ব্যাপারে তালেবানের আরোপিত সাময়িক নিষেধাজ্ঞা কার্যত সাময়িক নাও হতে পারে। যদিও তালেবান এই নিষেধাজ্ঞাকে সাময়িক বলে দাবি করেছে।’তিনি বলেন, নারী শিক্ষার ব্যাপারে ১৯৯৬ সালে আরোপ করা একই ধরনের একটি নিষেধাজ্ঞা ৫ বছর স্থায়ী ছিল।
দীর্ঘ ২০ বছর পর গত ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান দখলে নেয় তালেবান। এরপর সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে তালেবান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভার ঘোষণা দেয়। আফগানিস্তানের সব সম্প্রদায় ও গোত্রের প্রতিনিধিত্বমূলক প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি দেয়া হলেও প্রধান প্রধান মন্ত্রণালয়গুলোতে তালেবানের কট্টরপন্থি এবং অনুগতদেরই নিয়োগ দেয়া হয়।
আরও পড়ুন : মালালার জীবনসঙ্গী মালিক
সরকার গঠনের পর সেপ্টেম্বরে মাধ্যমিক পর্যায়ের ছেলে শিক্ষার্থীদের স্কুলে ফেরার অনুমতি দেয়া হলেও মেয়েদের এখনও শিক্ষাকার্যক্রমের বাইরে রাখা হয়েছে। তালেবানের দাবি, ইসলামিক আইন মেনে মেয়েদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পরই তাদেরকে স্কুলে ফেরানোসহ শিক্ষা কর্মকাণ্ডে যুক্ত করা হবে। তবে এর পরই প্রায় দুই মাস অতিবাহিত হতে চললেও এ বিষয়ে এখনও কোনো অগ্রগতি হয়নি।
মালালা বলছেন, ‘অবিলম্বে আফগান মেয়েদের শিক্ষাকার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করতে তালেবানের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। এছাড়া আফগানিস্তানে মেয়েদের শিক্ষাসহ সকল অধিকার নিশ্চিত করতে জি-২০ সদস্যভুক্ত দেশগুলোসহ বিশ্ব নেতাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।’
আরও পড়ুন : সোনার মাস্ক বানালেন ব্যবসায়ী
তালেবানের অগ্রাভিযানের মুখে গত ১৫ আগস্ট পশ্চিমা সমর্থিত আফগান সরকারের পতন হয়। দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি সেদিনই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। পরে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে তালেবান।
বিশ্বের কোনো দেশই এখনও তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। প্রতিশ্রুতি নয়, তালেবানকে তাদের কাজের মাধ্যমেই বিচার করা হবে বলে জানিয়েছে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা।
ইবাংলা/এএমখান/১৫ নভেম্বর, ২০২১