ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রোকেয়া হলে ম্যানেজমেন্ট বিভাগে অধ্যায়নরত প্রথম বর্ষের এক ছাত্রী র্যাগিংয়ের শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছেন। ওই ছাত্রীকে হলে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে নাচতে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
অভিযুক্তরা হলেন- ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী নাসরিন জাহান খুশি, জুলি মারমা, রিনাকী চাকমা, জান্নাত নিপু ও পূজা দাস।
লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী ছাত্রী জানান, মঙ্গলবার আনুমানিক রাত সাড়ে ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত তৃতীয় বর্ষের ৫ শিক্ষার্থী তাকে মানসিকভাবে নির্যাতন করেন।
আরও পড়ুন: পরীক্ষা না দিয়ে সব ছাত্রীর বিয়ে!
লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, আড়াই ঘণ্টা ধরে ইচ্ছার বিরুদ্ধে তারা আপত্তিকর একটা গানে নাচতে বাধ্য করেন। কোনো উপায় না পেয়ে তাদের কথা মানতে বাধ্য হই। রাত ১টা পর্যন্ত আমদের ওপর নির্যাতন চলে। সে সময় অভিযুক্তরা বিভিন্ন রকম হুমকি-ধামকিও দেন বলে জানান তিনি।
লিখিত অভিযোগে এই ছাত্রী আরও বলেন, গত ২৫ অক্টোবর আমি আমার মায়ের পর বাবাকে হারাই। সেই ট্রমাটাই আমি এখনো কাটিয়ে উঠতে পারিনি। আমার সেমিস্টার ফাইনাল চলছে। এ অবস্থায় এ ধরনের অমানবিক নিপীড়নের শিকার হয়ে আমি নিরাপত্তা শঙ্কায় ভুগছি।
ভুক্তভোগী ছাত্রী জানান, তিনি প্রশাসনিকভাবে হলে উঠেছেন বললে অভিযুক্তরা তাকে ধমক দেন। অভিযুক্তরা বলেন, ‘প্রশাসন আবার কিসের? আমরা থাকতে দেই বলে তোরা থাকতে পারিস। ’
তবে একটি গণমাধ্যমের কাছে অভিযুক্ত জান্নাত নিপু বলেন, র্যাগিংয়ের কোনো ঘটনার কথা তো আমরা জানি না। কাল রাতে আমরা সিনিয়র জুনিয়র মিলে নেচেছিলাম। সেখানে র্যাগিংয়ের কথা কেন এলো তা তো জানি না।
এ বিষয়ে রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা বলেন, বিষয়টি হলের সুতরাং হলের অভ্যন্তরে মীমাংসা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ইতোমধ্যে গণমাধ্যম ও প্রক্টর অফিস পর্যন্ত গড়িয়েছে। আমি ভুক্তভোগী ছাত্রী ও অভিযুক্তদের নিয়ে বসেছিলাম। অভিযুক্তরা র্যাগের ঘটনা অস্বীকার করেছে আর তারা পলিটিক্যাল কেউ না।
রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ আরও বলেন, অভিযুক্তদের সতর্ক করার পাশাপাশি শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আর ভুক্তভোগীর কক্ষ নম্বর পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে।
ইবাংলা/ নাঈম/ ১৯ নভেম্বর, ২০২১