বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে চাইছেন তার পরিবার ও দলের নেতাকর্মীরা। এজন্য সকরারের কাছে আবেদন করাসহ নানা চেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হয়েছেন।
সোমবার (২২ নভেম্বর) কে দেশব্যাপী আন্দোলনে নেমেছে দলটি। তবে এতে কতটা সুফল আসবে তা নিয়ে সন্দিহান দলের লোকজনই। তাই বাইরে আন্দোলন করলেও ভেতরে ভেতরে তারা সরকারের সুদৃষ্টির দিকে তাকিয়ে আছেন। খবর বিবিসির।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, তারা চাইছেন মানবিক বিবেচনায় হলেও বেগম জিয়াকে দেশের বাইরে গিয়ে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হোক। বিএনপি এখন কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে নামার পর তা অব্যাহত রাখার কথা বলেছে। বিএনপি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। ঢাকার বাইরে কয়েকটি জায়গায় সমাবেশ করার সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। এখন রাজপথে কর্মসূচি অব্যাহত রাখার পাশাপাশি সরকারের সাথে দেনদরবার করাসহ সব ধরনের চেষ্টা চালানোর কথা বলছেন বিএনপি নেতারা।
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে তার ভাইয়ের আবেদনের ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে এখনও লিখিতভাবে কোন জবাব দেওয়া হয়নি। কিন্তু সংবাদমাধ্যমে আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের পর প্রধানমন্ত্রীও বক্তব্য দিয়েছেন যে, আইনে এই অনুমতি দেওয়ার সুযোগ নেই। যেহেতু সরকারের নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে ৭৬ বছর বয়স্ক খালেদা জিয়া শর্তসাপেক্ষে মুক্ত রয়েছেন। সরকারের শীর্ষপর্যায়ের এ ধরনের বক্তব্যের মুখে বিএনপি এখন কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে নেমেছে।
শেষ পর্যন্ত সরকারের ওপর কতটা চাপ সৃষ্টি করা সম্ভব হবে-সেই প্রশ্নে দলটির ভেতরে সন্দেহ রয়েছে। দলটির নেতারা পরিস্থিতিটাকে তাদের দলের জন্য একটা সংকট হিসাবে দেখছেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন, এই ইস্যুতে সরকারকে নমনীয় করতে কর্মসূচি অব্যাহত রাখা এবং পরিবারের আবেদন নিয়ে এগুনোসহ সব চেষ্টা তারা চালাবেন। মানুষের জীবনের সংকটের চেয়ে বড় সংকট আর কী হতে পারে-আমরা সেই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখে আমরা সব ধরনের চেষ্টা করছি। বিদেশে চিকিৎসার অনুমতির জন্য তার পরিবারের আবেদন রয়েছে। আমরা রাজনৈতিকভাবে চেষ্টা করছি। অন্যান্য রাস্তা যা আছে- আমরা সবদিক থেকেই চেষ্টা করছি ।’
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলায় সাজা থাকায় তিনি তার মায়ের এমন অসুস্থতার সময়ও দেশে আসতে পারছেন না। এ ব্যাপারে দলটি এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না এবং এটিও তাদের সংকট বাড়িয়েছে।
তবে বিশ্লেষকদের অনেকে বলেছেন, বিএনপির দুর্বলতার কারণে দলটি এমন পরিস্থিতিতে এসে ঠেকেছে।
বিএনপির একজন সিনিয়র নেতা জানিয়েছেন, তাদের দলের নেতৃত্ব সমাধান চাইছে খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদনের ওপর ভিত্তি করে। কিন্তু পরিবারের পক্ষ থেকে তাদের বলা হয়েছে, বিষয়টাতে সরকারকে নমনীয় করার জন্য এখন দলকেই দায়িত্ব নিতে হবে। সে প্রেক্ষাপটে কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে নামার পাশাপাশি সংসদে বিএনপির যে সাতজন সদস্য রয়েছেন, প্রয়োজনে তারা পদত্যাগ করবেন-এই চিন্তাও এখন দলটির নেতৃত্বের রয়েছে।
বিএনপির একজন সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা বলছেন, খালেদা জিয়ার কোন খারাপ পরিস্থিতি হলে তার দায় সরকারও এড়াতে পারবে না, এই আলোচনাও তাদের নেতাকর্মীদের বড় অংশের মাঝে রয়েছে।
বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলছেন, সরকার মানবিক দৃষ্টিতে এবং রাজনৈতিক দিক থেকে ইতিবাচক সাড়া দেবে, এখনও তারা সেটা চাইছেন।
ইবাংলা /টিআর /২৩ নভেম্বর ২০২১