মোবাইলে বেশি সময় চার্জ না থাকা নিয়ে অভিযোগ বেশির ভাগ স্মার্ট ফোন ব্যবহারকারীর। বিশেষ করে পুরনো ফোনগুলো চার্জ হতে অনেকটা বেশি সময় নেয়। নতুন ফোনেও কিছুদিন পর থেকে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। আজ আপনাকে জানাবো মোবাইল ফোন দ্রুত চার্জ করার ৭ উপায়।
জিপিএস, ওয়াই-ফাই অফ রাখুন : জিপিএস, ওয়াই-ফাই এবং ব্লুটুথ অন থাকলে প্রচুর ব্যাটারি অপচয় হয়। তাই ফোন চার্জ দেওয়ার সময় ওই অপশনগুলো অন থাকলে চার্জ হতে অনেক বেশি সময় লাগে। সেই কারণে ফোন চার্জে বসানোর আগে জিপিএস, ওয়াই-ফাই এবং ব্লুটুথ অপশনগুলো টার্ন অফ করে দিন।
চার্জিংয়ের সময় স্মার্টফোন ব্যবহার এড়িয়ে চলুন : ফোন চার্জে বসিয়ে ব্যবহার করা একদমই উচিত নয়। কল, মেসেজ, বিভিন্ন শপিং অ্যাপের ব্যবহার, এমন কি ক্রমাগত গেমও খেলে থাকেন অনেকেই। চার্জে থাকাকালীন ফোন ব্যবহার করলে খুব স্বাভাবিকভাবেই ফোনের চার্জ হতে সময় বেশি লাগে। এমনকি ফোন তাড়াতাড়ি খারাপ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও অনেকটাই বেড়ে যায়। তাই চার্জ দেওয়ার সময় ফোন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
অরিজিনাল কেবল ও অ্যাডাপ্টার ব্যবহার করুন : স্মার্টফোন কেনার সময় তার সঙ্গে যে কেবল এবং অ্যাডাপ্টার দেওয়া হয়, সবসময় সেটি দিয়েই ফোন চার্জ করা উচিত। আপনি যদি অন্য কোনো ব্র্যান্ডের চার্জার ব্যবহার করেন, তাহলে আপনার ডিভাইসের ব্যাটারি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং সেই সাথে চার্জিং স্পিডের ওপরেও তার বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। তাই সবসময় অরিজিনাল কেবল ও অ্যাডাপ্টার ব্যবহার করুন।
ব্যাকগ্রাউন্ড প্রসেসিং অ্যাপগুলো বন্ধ করুন : ফোনের স্ক্রিন লক করার পরেও কিছু অ্যাপ ব্যাকগ্রাউন্ডে চলতে থাকে। আপনি ব্যবহার না করলেও সেগুলো আপনার অজান্তেই ফোনের ব্যাটারি ক্ষয় করতে থাকে। তাই আপনি ফোনের সেটিংসে গিয়ে দেখতে পারেন যে কোন কোন অ্যাপ ব্যাকগ্রাউন্ডে চলছে এবং চার্জ দেওয়ার আগে সেই অ্যাপগুলো টার্ন অফ করে দিতে পারেন। এতে আপনার স্মার্টফোনের চার্জিং স্পিড অনেকটাই বেড়ে যাবে।
এয়ারপ্লেন মোড ব্যবহার করুন : ফোনের এয়ারপ্লেন মোড অন করে রাখলে ফোনের নেট কানেকশন এবং কলিং ফেসিলিটি বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া এই মোড অন করলে একাধিক অ্যাপও কাজ করা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়। এর ফলে ফোনের ব্যাটারির অপচয় অনেক কম হয়, ফলে খুব স্বাভাবিকভাবেই চার্জিং স্পিড বেড়ে যায়। তাই ফোন চার্জ দেওয়ার সময় অবশ্যই এয়ারপ্লেন মোড অন করে রাখুন।
ফাস্ট চার্জিং অ্যাডাপ্টার ব্যবহার করবেন না : মার্কেটে এমন অনেক চার্জার পাওয়া যায় যেগুলো ব্যবহার করলে ফোন অতি দ্রুত চার্জ হয়। আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে যে এই চার্জারগুলো ব্যবহার করলে আপনি খুব লাভবান হবেন। কিন্তু মনে রাখবেন, প্রতিটি ফোনের ব্যাটারির একটি নির্দিষ্ট ক্যাপাসিটি থাকে এবং সেই ক্যাপাসিটি অনুযায়ী ওই স্মার্টফোনের সাথে উপযুক্ত চার্জারটি সরবরাহ করা হয়।
আর স্মার্টফোনের ব্যাটারিকে দীর্ঘস্থায়ী এবং সুস্থ সবল রাখার জন্য বিশেষজ্ঞরা সেই কারণেই সবসময় স্মার্টফোনের সাথে প্রদত্ত চার্জারটি ব্যবহার করতে বলেন। কিন্তু অযথা ফাস্ট চার্জার ব্যবহার করলে আপনার ফোনের ব্যাটারির কার্যক্ষমতা দিন-কে-দিন কমতে থাকে, পাশাপাশি ফোনের চার্জ ধরে রাখার ক্ষমতাও কমে যায় এবং ধীরে ধীরে ফোনটিও খারাপ হয়ে যায়। তাই এই ধরনের চার্জার কখনোই ব্যবহার করবেন না।
সারারাত ধরে ফোন চার্জে বসিয়ে রাখবেন না : সারাদিন কাজকর্মের পর অনেকেই রাতে শুতে যাওয়ার আগে ফোন চার্জে বসিয়ে দেন। কারণ সেই সময় যেহেতু ফোনের ব্যবহার হয় না, তাই অনেকেই সেটিকেই চার্জ দেওয়ার উপযুক্ত সময় বলে মনে করেন।
এর ফলে ফোনটি ফুল চার্জ হয়ে যাওয়ার পরেও অ্যাডাপ্টারের সাথে সংযুক্ত থাকে। এর ফলে ধীরে ধীরে ব্যাটারির ক্ষতি হতে থাকে, ঠিক যেমন ভরপেট খাওয়ার পর আরও খেলে বিপদ হয়ে যায়, অনেকটা সেরকম সমস্যাই এক্ষেত্রে দেখা যায়। তাই সারারাত ধরে ফোন চার্জে বসিয়ে রাখা কখনোই উচিত নয়।
ইবাংলা /টিপি/২৬ ডিসেম্বর