মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান খানের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে উঠে আসা অবৈধ সম্পদের অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণের চেষ্টা করছে দুর্নীতি দমন কমিশনের(দুদক) অনুসন্ধান টিম। গনমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে আতিকুর রহমানের ৯৭ টি একাউন্ট রয়েছে।
আরও পড়ুন…বিমানবন্দরে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিদায় জানান আব্দুল মোমেন
দুদক কর্মকর্তারা বলছেন, তার ১৫/২০ টি ব্যাংক হিসেবের প্রমাণ মিলেছে। টাকার লেন-দেনও কম রয়েছে। কিন্তু ভিডিও ফুটেজে আতিকুরের ব্যাংক হিসেবের যথাযথ প্রমান রয়েছে।১৫ জুলাই আতিকুর রহমানের সম্পদের অনুসন্ধান প্রতিবেদন কমিশনের কাছে জমা দেয়া হয়েছে। দুই সপ্তাহ পার হলেও প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখেনি। প্রতিবেদনটির পূর্ণাঙ্গ তথ্য জানতে ৩ আগষ্ট তদন্ত কর্মকর্তা এবং কমিটির আহবায়ককে ফোন করা হয়। সহকারী পরিচালক মাহাবুবুল আলম মুখ খুলতে নারাজ ।
আরও পড়ুন…বিষ্ফোরনে কেপে উঠল উত্তরার কামারপাড়া,মৃত্যু বেড়ে দুই (০২)
তিনি ইবাংলাকে বলেন আপনি সফিকুর রহমান এর সাথে কথা বলেন। আতিকের দুর্নিতির তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে পরিচালক সফিকুর রহমান ভূঁইয়াকে প্রশ্ন করা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, সচিব ছাড়া আমাদের গনমাধ্যমের সাথে কথা বলার সুযোগ নেই।তারপরেও কোনো অবস্থায় দুর্নীতি করে কেউ ছাড় পাবেনা। আমরা বিবেক বিসর্জন দিয়ে কোন কিছু করবনা, আপনি নিম্চিত থাকেন।
অনুসন্ধান কর্মকর্তার তদন্ত নিয়ে সন্দেহের কথা জানালে সচিব বলেন, সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে কেউ অপরাধী হলে ছাড় পাওয়ার কোন সুযোগ নাই। দেশের ১৫টি ব্যাংকে আতিকুর রহমানের ৯৭টি ব্যাংক হিসেব আছে। ব্যাংকগুলো হলো, আল আরাফাহ ইসলামি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, ডাচ বাংলা ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক ও ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড।
আরও পড়ুন…বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় চুক্তি
এসব ব্যাংকে ২০০৭ সাল থেকে চলতি বছরের ২৮ মার্চ পর্যন্ত ১১০ কোটি ৬৯ লাখ ৯২ হাজার ৩৯২ টাকা লেনদেন হয়েছে। আইডিয়াল স্কুলে ভর্তি বাণিজ্যের অর্থ দিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। রামপুরার বনশ্রী মসজিদ মার্কেটে বিশ্বাস লাইব্রেরি রয়েছে। আফতাবনগরে বি-ব্লকে বিশ্বাস বাজার নামে একটি প্রতিষ্ঠান, একই এলাকার ৫ নম্বর সড়কের ১২ নম্বর প্লটে ভিশন-৭১ নামে একটি রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠান, আফতাবনগরে চারটি বাড়ি এবং বনশ্রীতে আরেকটি বাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে। এ ছাড়া বনশ্রী এলাকায় খান ফিলিং অ্যান্ড এলপিজি, আফতাবনগরে ন্যাশনাল ফ্রায়েড কিচেন নামে একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এরমধ্যে আতিকুর রহমানের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান, স্ত্রী নাহিদা আক্তার নীপা, বড় ভাই আবদুস সালাম খান, ফজলুর রহমান খান ও শ্বশুর নুরুল ইসলামের নামেও লেনদেনও রয়েছে।
আরও পড়ুন…দৃশ্যমান হচ্ছে বঙ্গবন্ধু রেল সেতু
দুদকে আসা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আতিকুর রহমান খানের মালিকানাধীন ন্যাশনাল ফ্রায়েড চিকেনের নামে সাউথইস্ট ব্যাংকে ২০১৫ সালে একটি হিসাব খোলা হয়। ওই হিসাবে প্রায় সোয়া ২ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। এ ছাড়া তার মালিকানাধীন এইচ কে খান এন্টারপ্রাইজের নামে প্রাইম ব্যাংকের একটি হিসেবে ৮ কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায়। খোঁজ নিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানের ঠিকানায় বনশ্রীর মসজিদ মার্কেটের বিশ্বাস লাইব্রেরি তথ্য মিলেছে। শত কোটি টাকার বেশি সম্পদের মালিক হলেও মাত্র ৩৫ লাখ টাকা আয়কর রির্টান দাখিল করেছে।দুর্নীতিগ্রস্ত তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী আতিকুর রহমান খান মাত্র ৩০ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করে, ২০০৪ সাল থেকে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির অবৈধ ভর্তি ও নিয়োগ বাণিজ্যের সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত হয়ে শত শত কোটি টাকার সম্পদ গড়ে তুলেছেন।
আরও পড়ুন…রাজধানীতে সর্বোচ্চ ৩ ঘন্টা লোডশেডিং দেবার পরিকল্পনা!
তার নামে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন ব্যাংকে ৯৭টি হিসাব রয়েছে এবং ২০০৭ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত এসব হিসাবে ১১০ কোটি টাকার লেনদেন রয়েছে। আতিক, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের সব ধরনের অনিয়ম, অবৈধ কর্মকাণ্ড ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত।
ইবাংলা/তরা/৭ আগস্ট ২০২২
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.