নামাজ আদায়ের জন্য পবিত্র হওয়া জরুরি। পবিত্রতা ছাড়া নামাজ আদায় সম্ভব নয়। কারণ, নামাজের বাহির ও ভেতর মিলিয়ে মোট ১৩টি ফরজ রয়েছে। এর মধ্যে নামাজ শুরুর আগেই সাতটি ফরজ কাজ করতে হয়। এর তিনটিই হলো পবিত্রতা সংক্রান্ত। অর্থাৎ, নামাজ শুরুর আগে শরীর, কাপড় ও নামাজের স্থান পবিত্র হওয়া জরুরি। -(তিরমিজি, হাদিস : ১, ৩)
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘হে মুমিনগণ, যখন তোমরা নামাজের জন্য দাঁড়াতে চাও তখন তোমরা তোমাদের মুখমণ্ডল ও হাতগুলো কনুই পর্যন্ত ধুয়ে নাও এবং তোমাদের মাথা মাসেহ কর এবং পায়ের টাখনু পর্যন্ত ধুয়ে নাও। যদি তোমরা অপবিত্র থাক, তবে বিশেষভাবে পবিত্র হবে।
আর যদি তোমরা অসুস্থ হও বা সফরে থাক বা তোমাদের কেউ টয়লেট থেকে আসে বা তোমরা স্ত্রীর সাথে সংগত হও এবং পানি না পাও তবে পবিত্র মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করবে। সুতরাং তা দ্বারা মুখমণ্ডলে ও হাতে মাসেহ করবে। আল্লাহ তোমাদের উপর কোন সংকীর্ণতা করতে চান না; বরং তিনি তোমাদেরকে পবিত্র করতে চান এবং তোমাদের প্রতি তার নেয়ামত সম্পূর্ণ করতে চান, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কর। -(সুরা মায়েদা, আয়াত, ৬)
পবিত্র অবস্থায় নামাজ শুরু করার পরও অনেক সময় নামাজের মধ্যে শরীর বা কাপড় অপবিত্র হয়েছে কি না এমন সন্দেহ হয়, আবার কখনো ভেজা ভেজা অনুভব হয়। এ নিয়ে সঠিক ইসলামী সমাধান জানা না থাকলে বিপাকেও পড়তে হয়। এমন পরিস্থিতির ক্ষেত্রে ইসলামী আইন ও ফেকাহ শাস্ত্রবিদদের মতামত হলো, পাক-নাপাকের ব্যাপারে মূলনীতি হল, যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি নাপাকি লাগার ব্যপারে নিশ্চিত হবেন না ততক্ষণ পর্যন্ত কেবল সন্দেহের বশে নাপাকি লেগেছে বলা যাবে না। আর যদি নিশ্চিত হন, শরীরে বা কাপড়ে নাপাকি লেগেছে, তাহলে যতটুকুতে লেগেছে, ততটুকু ধুয়ে ফেলা জরুরি। পুরো শরীর বা কাপড় ধোয়া জরুরি নয়। -(হিন্দিয়া: ১/৪৫)
সুতরাং নামাজ শুরুর পর যতক্ষণ পর্যন্ত কিছু বের হওয়ার ব্যাপারে নামাজী নিশ্চিত না হবেন ততক্ষণ পর্যন্ত কেবল সন্দেহের বশে কিছু বের হয়েছে বলা যাবে না। আর যদি নামাজী ব্যক্তি নাপাক কিছু বের হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হন তাহলে নামাজ ছেড়ে যতটুকুতে লেগেছে, শুধু সেই অংশটা ধুয়ে নিয়ে পুনরায় অজু করে নামাজ আদায় করবেন।
হাদীস শরিফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, হে আল্লাহর রাসূল, যদি কোন ব্যক্তি সন্দেহ করে যে, তার নামাজে কিছু বের হয়েছে। উত্তরে তিনি বলেন, ‘নামাজ ছেড়ে দিবে না, যতক্ষণ না সে আওয়াজ শোনে, অথবা গন্ধ পায়। -(বুখারী ১৩৭)
এ হাদিস থেকে আলেমরা বলেন– এমন পরিস্থিতিতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিশ্চয়তার উপর নির্ভর করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং শুধু সন্দেহের কারণে নামাজ ত্যাগ করতে নিষেধ করেছেন।
ইবাংলা/জেএন/১১ ডিসেম্বর, ২০২২
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.