মোংলায় ৪০ গীর্জায় বড়দিন উৎসব

জেলা প্রতিনিধি, বাগেরহাট

খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ উৎসব ‘শুভ বড়দিন’। এ বড়দিন উপলক্ষে শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পর থেকেই মোংলার বিভিন্ন এলাকার গীর্জাগুলোতে একে একে শুরু হয় প্রার্থনা। তবে প্রচন্ড শীতের কারণে এবার গীর্জাগুলোতে প্রার্থনার সময় এগিয়ে আনা হয়েছে।

Islami Bank

এর আগে রাত ১২ টায় প্রার্থনা শুরু হলেও এবার তা স্থানভেদে শুরু সন্ধ্যার পর পরই। সেন্ট পলস্ ধর্মপল্লীর আয়োজনে পৌর শহরের শেলাবুনিয়ার প্রধান ও কেন্দ্রীয় সাধুপল কাথলিক গীর্জায় বড়দিনের প্রার্থনা শুরু হয় রাত ১১টায়। গীর্জায় ঘন্টা/ঘন্টি বাজানোর মধ্যদিয়ে প্রার্থনার আনুষ্ঠানিকতার শুরু হয়।

প্রার্থনা অনুষ্ঠানের শুরুতে গীর্জার পালক পরোহিত ফাদার দানিয়েল মন্ডল সবাইকে নিয়ে একসাথে যিশু খ্রিষ্টকে স্মরণ করেন। এ সময় মহামারী করোনা-ওমিক্রন ভাইরাস থেকে মুক্তির প্রত্যাশায় দেশ ও জাতীর মঙ্গল কামনা করে প্রার্থনা করেন। প্রার্থনা করা হয় ইতালিয়ান খ্রিষ্ট ধর্মযাজক ফাদার মারিনো রিগনের আত্মার শান্তি কামনায়।

এছাড়া খ্রিষ্ট সম্প্রদায়ের প্রয়াত ও অসুস্থদের জন্যেও বিশেষ প্রার্থনা করেন সকলে মিলে। প্রার্থনা শেষে গীর্জার সামনের গোসালা উম্মুক্ত করে সেখানে যিশু খ্রিষ্টকে স্মরণ ও সম্মান করে শ্রদ্ধা জানান ছোট বড় সকলেই। এবার শেলাবুনিয়ার প্রধান এই কাথলিক গীজার্সহ মোট ৪০টি গীর্জায় অনুষ্ঠিত হয় বড়দিনের এ প্রার্থনা। শেলাবুনিয়া, মাছমারা, মালগাজী, চিলা ও বুড়িরডাঙ্গাসহ খ্রিষ্টান অধ্যুষিত অন্যান্য এলাকাগুলোতেও নানা আনুষ্ঠানিকতা এবং উৎসবের মধ্যদিয়ে বড়দিন উদযাপিত হচ্ছে।

শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালেও গীর্জায় গীর্জায় অনুষ্ঠিত হয়েছে বড়দিনের প্রার্থনা। বড়দিন উপলক্ষে খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের উপস্যানালয় ও বাড়ী-ঘরগুলোতে জাকজমকপূর্ণ আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে। এদিকে বড়দিন উপলক্ষে বিগত বছরগুলোতে গীর্জা ও খ্রিষ্টান পল্লীগুলোতে পুলিশের কঠোর নজরদারীসহ বিশেষ টহল ব্যবস্থা থাকলেও এবার তার কিছু ছিলো না। তাই এনিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীরা।

one pherma

শেলাবুনিয়া এলাকার হিউবাট সরকার বলেন, শুক্রবার রাত সোয়া ১১টার দিকে আমাদের গীর্জার মুল গেইট থেকে মাত্র কয়েক গজ দূরে রাস্তার উপরে মদ খেয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে বেশ কয়েকজন মাতলামি করছিলো। রাস্তা আটকিয়ে তারা সেখানে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করায় সেখান থেকে ভ্যানে ও পায়ে হেটে গীর্জায় আসতে লোকজনকে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে।

আর যারা মদ খেয়ে মাতলামী করেছে তারা খ্রিষ্ট ধর্মের নয়। যদি বড়দিন উপলক্ষে এখানে (গীর্জায়) কিংবা টহলে পুলিশ থাকতো তাহলে এমন বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হতো না। এর আগে তো পুলিশ দেখেছি, এবার কি হলো বুঝতে পারছিনা।

শেলাবুনিয়ার কাথলিক গীর্জায় প্রার্থনায় আসা পলাশ মন্ডল ও শাওন হালদার বলেন, রাত সাড়ে ১১টার একটু আগে দেখেছি এখানে একজন না দুইজন পুলিশ এসেছেন। একজনই হবে, কারণ পুলিশের পোশাকে একজনকেই দেখেছি। যাকে দেখেছি তার হাতে লাঠি ও অস্ত্র কিছুই দেখতে পায়নি। এখানে ডিউটিতে এসেছে নাকি অন্য কাজে তা বুঝা মুসকিল।

এছাড়া মাছমারা ও মালগাজী গীর্জা এলাকাসহ আশপাশের কোথাও পুলিশের ডিউটি কিংবা টহল না থাকার ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়েছেন ওই এলাকার খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোকজনেরা।
এদিকে শুভ বড়দিন উপলক্ষে খ্রীষ্ট সম্প্রদায়ের লোকজনকে শুভেচ্ছা বার্তা জানিয়েছেন স্থানীয় সাংসদ ও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রনালয়ের উপমন্ত্রী আলহাজ্ব বেগম হাবিবুন নাহার, উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার, পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আঃ রহমান ও উপজেলা নিবার্হী অফিসার কমলেশ মজুমদার।

ইবাংলা /টিআর/২৫ ডিসেম্বর

Contact Us