সপ্তাহে ব্যবধানে বাজারে চাল, ডাল ও ডিমের দাম বেড়েছে। অপরদিকে কমেছে মুরগির দাম। ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে কমেছে ১৫ টাকা। আর পাকিস্তানি কক বা সোনালী মুরগি দাম কেজিতে কমেছে ৬০ টাকা পর্যন্ত।সপ্তাহের ব্যবধানে মুরগির দাম কমলেও অপরিবর্তিত রয়েছে বেশিরভাগ সবজির দাম। তবে বাজারে সব ধরনের শীতের সবজি ভরপুর রয়েছে। এর সঙ্গে অপরিবর্তিত রয়েছে পেঁয়াজ ও আলুর দাম। মাছের দামে তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি।
শুক্রবার সকালে (৭ জানুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, মুসুরির ডালের দাম বেড়েছে। দেশি ডালের কেজি ১১৫ থেকে ১২০ টাকা। গত সপ্তাহে ছিল ১০০ থেকে ১০৫ টাকা কেজি। বেড়েছে ইন্ডিয়ান ডালের দাম। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকা। গত সপ্তাহে ছিল ৯০ টাকা কেজি। এসব বাজারে ভোজ্যতেলের প্রতি লিটার খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের তেলের লিটারও বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়।
বাজারে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। এছাড়া প্যাকেট চিনি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকায়। আটা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকায়। বাজারে বেড়েছে ডিমের দাম। লাল ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১০৫ থেকে ১১০ টাকায়। হাঁসের ডিমের ডজন বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা। সোনালি (কক) মুরগির ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়।
বাজারে কমেছে মুরগির দাম। ১৫ টাকা দাম কমে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা। গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ১৯০ থেকে ২০০ টাকা। ২০ টাকা দাম কমে সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৭০ টাকায়। গত সপ্তাহে সোনালি মুরগির কেজি ছিল ২৯০ টাকা। লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৩০ টাকা।
মুরগি বিক্রেতা মো. রুবেল বলেন, শীত বেড়ে যাওয়ায় মুরগির দাম বাজারে কম থাকার কথা। প্রতি বছরই শীতে সোনালি মুরগির দাম কম থাকে কিন্তু এবার সিন্ডিকেটের কারণে বেড়েছে দাম।
বাজারে বেড়েছে চালের দাম। এসব বাজারে নাজিরশাইল চালে কেজিতে বেড়েছে ১ থেকে ২ টাকা। নাজিরশাইল চালের কেজি ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মিনিকেট চালে প্রতি কেজিতে ১ থেকে ২ টাকা দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬৩ থেকে ৬৪ টাকা, আটাশ চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ১ থেকে ২ টাকা। আটাশ চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫১ থেকে ৫২ টাকা। এক সপ্তাহ আগেও আটাশ চালের কেজি ছিল ৪৯-৫০ টাকা।
কারওয়ান বাজারের চাল বিক্রেতা কলিম উদ্দীন বলেন, হঠাৎ করেই বেড়েছে বাজারে চালের দাম। পাইকাররা বলছে বাজারে ধানের সংকট ও ধানের দাম বাড়তে থাকায় চালের দাম বেড়েছে। তিনি বলেন, মোটা ধানের সিজন হওয়া সত্ত্বেও দাম বেড়েছে। আসলে বড় বড় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান চালের ব্যবসা শুরু করেছে, এরা একবারে অনেক চাল কিনে মজুদ করে, এরপর হঠাৎ করে বাজারে দাম বাড়িয়ে দেয়।
অপরদিকে সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা ফুলকপির পিস বিক্রি করছেন ৩০ থেকে ৫০ টাকা। বিচি ছাড়া শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। বিচি শিম বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে এ সবজিগুলোর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। একইসঙ্গে অপরিবর্তিত রয়েছে আলুর দাম। গত সপ্তাহের মতো নতুন আলুর কেজি ২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
দাম অপরিবর্তিত থাকার তালিকায় রয়েছে পাকা টমেটো। গত সপ্তাহের মতো পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা। তবে গাজরের দাম কেজিতে ১০ টাকা কমে কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা।
এছাড়া বরবটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা। মুলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, শালগমের (ওল কপি) কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, লালশাকের আঁটি ১০ থেকে ১৫ টাকা, মুলাশাকের আঁটি ১০ থেকে ১৫ টাক বিক্রি হচ্ছে। আর পালংশাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। এ গুলোর দামও সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে।
সবজির দামের বিষয়ে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী মান্নান বলেন, শীতের সব ধরনের সবজি এখন বাজারে ভরপুর। তবে গত বছরের মতো এবার সবজির দাম কমার সম্ভাবনা কম। আমাদের ধারণা এখন যে দামে সবজি বিক্রি হচ্ছে, সামনে এর থেকে কমার সম্ভাবনা নেই।
মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে কাতল মাছ। শিং ও টাকি মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা। শোল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬৫০ টাকা। তেলাপিয়া ও পাঙাস মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা।
এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকা। ছোট ইলিশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। নলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা কেজি।
ইবাংলা / নাঈম/ ০৭ জানুয়ারি, ২০২২