হবু বরের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে ফেরার পথে বাধ সাধে লকডাউন। বাড়ি ফিরতে না পেরে অবশেষে হবু বরকে বিয়ে করে স্থায়ী হলেন স্বামীর বাড়িতেই। চীনে বিয়ে নিয়ে নানা রীতি রয়েছে। দেশটির ছোট শহর ও গ্রামীণ কিছু এলাকায় বহুদিন ধরে পালন করা তেমনই একটি রীতি হচ্ছে, বিয়ের আগেই বাড়ি থেকে ঠিক করা পাত্রের বাড়িতে যান পাত্রী। এবং একদিন ওই পাত্রী থাকেন পাত্রের পরিবারের সবার সাথে। তেমনই এক দিনের জন্য ২৮ বছর বয়সী তরুণী ঝাও জিয়াওকিং অন্য শহরে গিয়েছিলেন পাত্র ঝাও ফেইয়ের সঙ্গে দেখা করতে।
ঝাওয়ের পাত্রটি চীনের জিয়ানইয়াং শহরে থাকেন, সেখানে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় হঠাৎ লকডাউন আরোপ করে প্রশাসন। চিন্তায় পড়ে যান ঝাও। কী করবেন, কোথায় যাবেন! আর চীনের লকডাউন তো খুবই কঠোর। চীনা কর্তৃপক্ষের কড়া করোনা নীতির কারণেই বিধিনিষেধ কঠোর ভাবেই পালন করতে হয়।
শেষে উপায় না পেয়ে ঝাওকে থাকতে হয় পাত্রের বাড়িতেই। একইসঙ্গে। যদিও এ ব্যাপারে প্রথমদিকে ঝাও কিছুটা দ্বিধান্তিত ছিলেন। কারণ, ওই ছেলেকে বিয়ে করার ব্যাপারে তখনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি তিনি। কিন্তু উপায় নেই, থাকতে হচ্ছে তো একই বাড়িতেই!
লকডাউনের সময় ঝাও ও ফেই আরও কাছাকাছি আসেন। সাধারণ দেখা-সাক্ষাৎ ক্রমশ পরিণত হয় শক্ত বন্ধনে। দু’জনের সম্পর্কের পরিবর্তিত এই রূপ চোখ এড়ায়নি পাত্রের বাড়ির লোকদেরও। তারাই দু’জনকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসা করেন, বিয়ের ব্যাপারে কী চিন্তা তাদের? এই প্রশ্নে একসঙ্গেই সম্মতি দেয় যুগল।
নিজের জীবনসঙ্গীকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত ঝাও স্থানীয় চীনা সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমি অনলাইনে আপেল বিক্রি করি। এ জন্য আমাকে অনেক রাত জেগে কাজ করতে হয়। ব্যবসার পুরো বিষয়টিই নির্ভর করে অনলাইন বাজারের ওপর। আমি যখন রাত জেগে কাজ করি, ফেই আমার জন্য জেগে বসে থাকে। মাঝেমাঝেই গরম কফির কাপে আমাদের বন্ধুত্ব আরও গাঢ় হয়েছে। আমি ফেইকে পেয়ে খুব খুশি।’ অবশ্য প্রথমে ছবি দেখে ফেইয়ের ব্যাপারে খুব বেশি আগ্রহী ছিলেন না ঝাও জিয়াওকিং। কিন্তু লকডাউনের কল্যাণে তারা একে অপরের কাছে এসেছেন, পেয়েছেন মনের মতো জীবনসঙ্গী।
ইবাংলা /টিপি/ ১৯ জানুয়ারি, ২০২২