শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের অপসারণ চেয়ে শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন চলছে দ্বিতীয় দিনের। এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে দিন। কনকনে শীত ও প্রতিকূল পরিবেশ উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা এ কঠোর কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।
উপাচার্যের বাসভবনের সামনের সড়কে বসে বুধবার (১৯ জানুয়ারি) বিকেল ৩টা থেকে এ অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা। এরই মধ্যে কয়েকজন শারীরিকভাবে অসুস্থতা অনুভব করছেন।
এদিকে, বুধবার (১৯ জানুয়ারি) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. তুলসী কুমার দাস, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধানসহ শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধি দল শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে তাঁদের প্রত্যাখ্যান করে কথা বলার সুযোগ দেননি।
পরে দুটি পৃথক বিবৃতির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ডিন উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং প্রশাসনকে সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানান। এ ছাড়া গতকাল উপাচার্য অনলাইনে শিক্ষকদের সঙ্গে এবং পরে নিজ বাসভবনে কর্মকর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করেন।
রোববার (১৬ জানুয়ারি) বেগম সিরাজুন্নেছা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট প্রত্যাহারসহ তিন দফা দাবিতে শুরু হয় ছাত্রীদের আন্দোলন। পরে সে আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা যোগ দেন। উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনাও ঘটে।
এক পর্যায়ে পুলিশ গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করলে আহত হন শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে ওই রাতেই আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। যদিও পুলিশ ৩০০ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করে।
এদিকে, বুধবার (১৯ জানুয়ারি) বিকেলে দুঃখ প্রকাশ করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। চলমান ঘটনায় সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের মাধ্যমে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এতে দোষী হলে সরকারের নির্দেশ মেনে নেবেন বলে জানিয়েছেন উপাচার্য।
‘উপাচার্য কোনো রকম সংশ্লিষ্ট নয়’ দাবি করে অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ রাবার বুলেট ছুড়েছে, সাউন্ড গ্রেনেড মেরেছে। এ জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত, খুবই মর্মাহত।’
ইবাংলা/ টিআর / ২০জানুয়ারি