ভুমধ্যসাগর থেকে ৩ মাসে উদ্ধার সাড়ে ৬শ’ বাংলাদেশি

ই-বাংলা প্রবাস ডেস্ক :

মৃত্যুঝুঁকি জেনেও ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা দিয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার আশায় লিবিয়া থেকে ইউরোপের পথে পা-বাড়াচ্ছে দেশের অনেক তরুণ। গ্রামের উঠতি বয়সী তরুণদের প্রথমে লিবিয়া ও পরে ইউরোপের উদ্দেশে নৌকায় উঠিয়ে সাগরে ভাসিয়ে দেয় দালালরা।

ভূমধ্যসাগরে ভাসতে ভাসতে হয়ে ওঠে খবরের শিরোনাম অথবা শরনার্থী হয়ে ভেসে উঠেন ইরোপে। অল্প কিছু মানুষ প্রাণে বেঁচে ফিরলেও দালালরা রয়ে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। বেঁচে থাকাদের ঠাঁই হয়ে ইউরোপের সাগরপাড়ের শরনার্থী ক্যাম্পে।

ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে চলতি বছরের মে মাস থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত ৫টি ঘটনাতেই উদ্ধার হয়েছেন ৬২৩ জন বাংলাদেশি। নিখোঁজ ৯৩ জন, মৃত্যুর সঠিক কোন পরিসংখ্যানও পাওয়া যায়নি। তাদের বেশিরভাগই মাদারীপুর, শরীয়তপুরসহ আশেপাশের জেলার বাসিন্দা। উদ্ধার হওয়ার পর আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম এর মাধ্যমে তাদের দেশে ফিরতে হয়েছে।

ভূমধ্যসাগর পারি দিতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসা এক যুবক বলেন, ‘যে জায়গায় ৬০ জন যাওয়ার কথা সেখানে ১২০ জন দেয়। আমরা নৌকায় ওঠার পরপরই নৌকার ৩ ভাগে পানি উঠে যায়। কেউ মরুক, বাঁচুক এটা ওদের বিষয় না।’

আরেক যুবক বলেন, ‘সাতদিন পর গ্যাস এনে দেয়ার পর রান্না করে খেয়েছি। পানিটুকুও দেয়নি, না খেয়ে থেকেছি। আগে থেকেই বলে বোট থেকে কেউ পড়ে গেলে উদ্ধার করতে পারবে না। শুট করে মেরে ফেলবে।’

দুবাই থেকে লিবিয়া পৌঁছার পর এক ঘরে ঠাসাঠাসি করে থাকা। এরপর নৌকায় করে তিউনিসিয়ার উপকূলে, সেখান থেকে আরেক নৌকায় ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালির উদ্দেশে যাত্রা। ভুক্তভোগী আরো এক যুবক জানান, ‘দালাল আমাদের বলে এভাবে ইতালি যাওয়া যাবে। আমরা বলেছি ওইখানে কাজ করবো। বলে কাজ করলে ওইখানে মাফিয়া ধরবে।’

আরো এক যুবক জানান, ‘আমরা আগে চিন্তা করতাম লিবিয়া গেলেই ভাই-ব্রাদাররা ইউরোপে পৌঁছে যাচ্ছে। বিষয়টা আসলে এমন না। মৃত্যু ডাকতে থাকে এক কথায়।’ বাংলাদেশ থেকে কিভাবে লিবিয়া গেলেন তারা? জানালেন, চারটি ধাপ পার করে বিমানবন্দর থেকে যাত্রা শুরু হয় তাদের।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ম্যাসেঞ্জার গ্রুপ “লিবিয়া টু ইতালির খবর” থেকে জানা যায় মূল পাচারকারির ভুমিকায় আছে বাংলাদেশেরই রুবেল নামের একজন। লিবিয়া থেকে নৌকা ছাড়ার পর রূবেলের আর খোঁজ মেলেনি।

লিবিয়া থেকে নৌকায় করে পাচারের কাজটিই করেন রুবেল।সবশেষ নৌকা ডুবির ঘটনায় জানাজানির পর রূবেল এখন দুবাইতে আত্মগোপনে। বাংলাদেশ থেকে যারা রূবেলকে সহযোগিতা করে সেই গ্রুপটির ওপর নজরদারি করছে আইনশৃংখলা বাহিনী। সূত্র : ডিবিসি নিউজ।

ই-বাংলা/ আইএফ/ ১১ জুলাই, ২০২১

Contact Us