বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। ঢাকা শহরে এখনও ৫৩টি খালের অস্তিত্ব আছে। এসব খাল উদ্ধার ও সীমানা নির্ধারণ করতে হবে। এগুলো পুনরায় দখল না হওয়া নিশ্চিত করতে পারলে মানুষ আর ভেনিস যাবেন না, ঢাকায়ই ঘুরতে আসবেন বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বছিলা এলাকায় লাউতলা খালের অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ অভিযান পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। রোববার (২৩ জানুয়ারি) থেকে এই খালের উদ্ধার অভিযান শুরু করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। সর্বশেষ গতকাল সোমবার খাল ভরাট করে গড়ে ওঠা অবৈধ ট্রাক টার্মিনাল উচ্ছেদ করে খালের খননকাজ শুরু হয়।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ঢাকা শহরে ২ কোটির বেশি মানুষ বসবাস করে। এই মানুষগুলোর জীবন স্বস্তিদায়ক, সুন্দর ও আনন্দপূর্ণ করতে হলে কয়েকজন মানুষের স্বার্থে আঘাত লাগতে পারে। কারণ, কিছু মানুষ খালের জায়গা দখল করে আছেন। তবে কয়েকজন মানুষের জন্য ২ কোটি মানুষের জীবন অতিষ্ঠ করতে দেওয়া যাবে না।
মন্ত্রী আরও বলেন, ঢাকাকে অবশ্যই তার ঐতিহ্যে ফিরিয়ে আনতে হবে। অতীতে কর্মচারীনির্ভর প্রতিষ্ঠানের কাছে খালের দায়িত্ব ছিল। সেখান থেকে সুফল পাওয়া যায়নি। কারণ, তাদের সঙ্গে জনগণের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তাই খাল জনপ্রতিনিধিত্বমূলক প্রতিষ্ঠানের কাছে হস্তান্তর করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে জনগণের সম্পৃক্ততা থাকায় দায়িত্ব পালন করা সহজ।
স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর অর্থনৈতিক সক্ষমতা বেড়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, মন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার সময় দেশের ৩২৮টি পৌরসভার মধ্যে মাত্র ৩৮টা পৌরসভা তাদের কর্মচারীদের বেতন দিত। এখন সব পৌরসভা চলমান বেতন কর্মীদের দিতে পারে। সব প্রতিষ্ঠানের রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ বেড়েছে। আর্থিক সক্ষমতা অর্জন করে মানুষের কল্যাণকর দায়িত্ব পালন করতে সব প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী হতে হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, আজকে খাল উদ্ধার পরিদর্শনে আসার কারণ জনগণের আশা–আকাঙ্ক্ষা পূরণে মেয়র যে কাজ করছেন, সরকার এর সঙ্গে আছে। যত ঝুঁকিই আসুক না কেন, মেয়রকে সহযোগিতা করা হবে। মানুষের কল্যাণে যেখানেই খাল উদ্ধার প্রয়োজন হবে, সেখানেই অভিযান পরিচালনা করা হবে। ঢাকা ওয়াসা থেকে বুঝে পাওয়া খালগুলোতে দৃশ্যমান কিছু পরিবর্তন করে দেখাতে পারলে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও গণপূর্তের আওতায় থাকা খালগুলোও করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
এ সময় ঢাকা উত্তর সিটির মো. মেয়র আতিকুল ইসলাম, ঢাকা-১৩ আসনের সংসদ সদস্য সাদেক খান, স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা, স্থানীয় কাউন্সিলর ও সিটি করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ইবাংলা / নাঈম/ ২৫ জানুয়ারি, ২০২২