ফিরোজায় ফিরেছেন খালেদা জিয়া
ইবাংলা ডেস্ক
দীর্ঘ দুই মাস ২১ দিন রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে গুলশানের ভাড়া বাসায় ফিরেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এভার কেয়ার হাসপাতাল থেকে খালেদা জিয়াকে বহনকারী গাড়ি বহর রওনা হয়ে রাত সাড়ে ৮টায় গুলশানের বাসভবনে এসে পৌঁছায়।
এ সময় খালেদা জিয়ার গাড়ির চারপাশে বিএনপির চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী ও দলের নেতাকর্মী দ্বারা বেষ্টিত থাকে। এ সময় নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই, খালেদা জিয়ার কিছু হলো জলবে আগুন ঘরে ঘরে, কে বলে রে জিয়া নাই, জিয়া সারা বাংলায়, এক জিয়া লোকান্তরে লক্ষ জিয়া ঘরে ঘরে প্রভৃতি স্লোগান দিতে থাকেন।
এভার কেয়ার হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরার পথে খালেদা জিয়ার গাড়ি বহড়কে বার বার থেমে থেমে চলতে হয়েছে। বসুন্ধরা থেকে গুলশান-২-এর ফিরোজা পর্যন্ত পুরো পথ খালেদা জিয়াকে বহনকারী গাড়ি থেমে থেমে চলতে দেখা যায়।
এ সময় বেগম জিয়ার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিএসএফকে বেশ তৎপর দেখা যায় এমনকি দলের নেতাকর্মীদের তাদের প্রিয় নেত্রীকে গাড়ির চারপাশে আগলে রেখে এগিয়ে চলতে দেখা যায়। খালেদা জিয়ার গাড়ির আশপাশে যেন কোনো যানবাহন আসতে না পারে সে জন্য সজাগ ছিল পুলিশও। দীর্ঘ এক ঘণ্টার অধিক সময়ে বাসার সামনে এসে পৌঁছায় গাড়ি বহর।
বাসভবনের সামনে গাড়ি বহর আসার পর নেতাকর্মীদের ভিড়ের কারণে গাড়ি বাসার ভেতরে ডুকতে বেশ বেগ পেতে হয়৷ এ সময় বিএনপির মহাসচিবসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা নেতাকর্মীদের এমন ভিড়ের কারণে বিরক্তি প্রকাশ করেন। উল্লেখ্য খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, দাঁত, চোখের সমস্যাসহ সর্বশেষ লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত ছিলেন।
গত বছরের ১৩ নভেম্বর খালেদা জিয়ার রক্তবমি হওয়ার পরপরই এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১০ জনের একটি বিশেষ মেডিকেল টিম তাঁকে চিকিৎসাসেবা দেয়।
গত ২৮ নভেম্বর খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা তাঁর বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন, ‘লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ায় খালেদা জিয়ার রক্তক্ষরণ হচ্ছিল।’ তিনবার এই রক্তক্ষরণ সামাল দেওয়া গেলেও চতুর্থবারের জন্য আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।
ওই সময়ে চিকিৎসকেরা জানান, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে তাঁরা অসহায় বোধ করছেন। বাংলাদেশে এ ধরনের রক্তক্ষরণ সামাল দেওয়ার কারিগরি সুযোগ নেই। তাঁকে দ্রুত দেশের বাইরে নিতে হবে। তারা যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র বা জার্মানির বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসার সুপারিশও করেন।
পরিবারের পক্ষ থেকেও বিদেশে চিকিৎসায় সরকারের অনুমতি নেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু আইনি বাধ্যবাধকতায় দেশের বাইরে যেতে দেওয়া সম্ভব নয় বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
ইবাংলা /এইচ /১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২