জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বিভিন্ন দেশে শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশ এই বিষয়ে জাতিসংঘের ভবিষ্যত চাহিদা পূরণে আরও সৈন্য সরবরাহ অব্যাহত রাখবে।
বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতিসংঘের মহাসচিব মঙ্গলবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাতকালে বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের ভূমিকার প্রশংসা করেন।
বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুুল মোমেন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা অভিযানের উচ্চ-পর্যায়ে এবং বিশ্বে জাতিসংঘের বিভিন্ন রাজনৈতিক মিশনের এসআরএসজি (মহাসচিবের বিশেষ প্রতিনিধি) পদে আরও বাংলাদেশি নাগরিক নিয়োগের জন্য মহাসচিবকে অনুরোধ করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে মহাসচিবকে অবহিত করেন এবং সকল রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে জাতিসংঘের সহায়তা কামনা করেন।
এসময় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের উদারতার প্রশংসা করে গুতেরেস মিয়ানমারে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরাতে জাতিসংঘের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।
গুতেরেস প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের অসাধারণ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করে আশা করেন যে বাংলাদেশ আগামী বছরগুলোতে বিশেষ করে এসডিজি অর্জনে আরও সাফল্য অব্যাহত রাখবে।
এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিউইয়র্ক সফররত মহাসচিবের মিয়ানমার বিষয়ক নবনিযুক্ত বিশেষ দূত (এসইএসজি) ড. নোয়েলিন হেইজারের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে মোমেন রোহিঙ্গা সঙ্কটের একটি টেকসই সমাধানের জন্য বিশেষ করে রাখাইন রাজ্যে একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে বাস্তু‘চ্যুত মানুষদের নিরাপদ, সুরক্ষা ও মর্যদার সঙ্গে তাদের বাড়িতে ফিরে যেতে পারে সেজন্য আঞ্চলিক দেশগুলোসহ সকল অংশীজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য এসইএসজিকে অনুরোধ করেন।
হেইজার আশ্বস্ত করেন যে রোহিঙ্গা ইস্যুটি তার এজেন্ডায় থাকবে এবং যত দ্রুত সম্ভব এই সংকটের একটি টেকসই সমাধান খুঁজে বের করার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজন, আঞ্চলিক দেশ সমূহ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক নেতা, রোহিঙ্গা নেতা এবং মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত থাকবেন।
বিশেষ দূত ২০১৭ সালে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তার সহানুভূতি ও নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, স্বদেশে ফেরার কোনো আশা না থাকায় রোহিঙ্গারা ক্রমশ অবৈধ ও অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে।
মোমেন তাকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধে এবং ক্যাম্পে রোহিঙ্গা শিশুদের মিয়ানমার-কারিকুলাম-ভিত্তিক শিক্ষা প্রদানের জন্য বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের বিষয়েও অবহিত করেন। ডা. মোমেন হেইজারকে তার যত দ্রুত সম্ভব কক্সবাজার ক্যাম্প এবং ভাষানের চর পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানান। সূত্র : বাসস
ইবাংলা/ ই/ ৩ মার্চ, ২০২২