দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার খট্টামাধব পাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাওছার রহমানের বিরুদ্ধে গরীব অসহায় দুস্থ্য মানুষদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দেওয়া ঈদ উপহার হিসেবে চালের সঙ্গে নিজের ছবি দিয়ে বিতরণের অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া চালের সঙ্গে চেয়ারম্যানের ছবি দেওয়ায় ক্ষোভ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে। ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় এমপিকে তারা অভিযোগ করেছেন। এদিকে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের।পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ঈদ উপহার হিসেবে সারাদেশের ন্যায় হাকিমপুর উপজেলার খট্টামাধবপাড়া ইউনিয়নে গরীব অসহায় দুস্থ্য ৪ হাজার মানুষের জন্য প্রত্যেককে ১০ কেজি করে ৪০ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়।
গত ২৭ এপ্রিল থেকে পরিষদের কার্যালয়ে এই চাল বিতরণ শুরু হয় যা গতকাল ২৯ এপ্রিল শুক্রবার পর্যন্ত চলে। এসময় প্রত্যেক উপকারভোগীকে চাল বিতরণের সময় একটি করে টোকেন দেওয়া হচ্ছে যা দেখিয়ে চাল নিতে হচ্ছে। যেখানে প্রধানমন্ত্রীর ছবির সাথে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান তার নিজের ছবি ব্যবহার করেছেন।
উপজেলার খট্টামাধবপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মালেক মন্ডল বলেন, খট্টামাধবপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহারের চাল বিতরণের সময় তার নিজের ছবি সম্বলিত টোকেন দিচ্ছে। যেখানে প্রধানমন্ত্রী এই চাল দিচ্ছে সেখানে তার ছবি কিভাবে ব্যবহার করে সে। এটি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বিষয়টি নিয়ে আমাদের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। বিষয়টি জানার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দিনাজপুর-৬ আসনের এমপি শিবলী সাদিককে অবহিত করেছি।
খট্টামাধবপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান কাওছার রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহারের ভিজিএফের চালের সঙ্গে দেওয়া টোকেনে ছবি দেওয়া আর না দেওয়া এটি কোনো বিষয় নয়। আমি মনে করি উনি শুধু আমাদের দলীয় প্রধান নয় উনি আমাদের সরকার প্রধান। উনি ঈদ উপহার হিসেবে চাল দিচ্ছে আমি এখানে স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি।
আমার দ্বারা এই চালগুলো দেওয়া হচ্ছে ওখানে কোথাও লিখা নেই চেয়ারম্যানের সৌজন্যে বা সহযোগীতায় দেওয়া হচ্ছে শুধুমাত্র এতগুলো মানুষকে চিহ্নিত করতেই এই টোকেন দেওয়া হয়েছে। তবে এই টোকেন দেওয়া আইনের মধ্যে আছে কিনা জানিনা, যদি আইনের বহির্ভূত হয় তাহলে পরবর্তীতে আর করবো না। আমি আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি ছিলাম আমি দল থেকে নমিনেশন চেয়েছিলাম কিন্তু পাইনি যার কারণে স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করে জয়লাভ করেছি। এই কারণে কিছু মানুষ আছে যারা হয়ত অভিযোগ করেছে বা তাদের অভিযোগ থাকবেই বলে মন্তব্য করেন।
হাকিমপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কাওছার আলী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহারের দেওয়া চালের সঙ্গে কোনো চেয়ারম্যান তার ছবি লাগিয়ে বিতরণ করতে পারে না। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নূর-এ আলম বলেন, কেন সে এমনটি করলো এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন থেকে তাকে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শরিফুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দেওয়া ঈদ উপহারের সঙ্গে কেউ কোনো ধরনের ছবি দিয়ে সেটি বিতরণের কোনো সুযোগ নেই। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ইবাংলা/ জেএন /৩০ এপ্রিল, ২০২২