প্রাচীরে গ্রিল না থাকায় নিরাপত্তাহীনতায় জবি শিক্ষার্থীরা

রিসাত রহমান, জবি প্রতিনিধিঃ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্রী কমনরুমের অবস্থান নতুন (বিবিএ) ভবনের নিচতলায়। যার একপাশ অবস্থিত সদরঘাটগামী রাস্তা এবং দ্বিতীয় গেইট যা সবার কাছে ক্যাম্পাসের জিম-ওয়াসী গেইট নামেও পরিচিত । রাস্তার মুখোমুখি কমনরুমের একপাশে উন্মুক্ত করিডোর ও সিঁড়িতে বসে ছাত্রীদের অবসরের অধিকাংশ সময় পার হয়।

তবে এখন যেন সেই অবসরের সময়টাই গুটিয়ে নিতে হচ্ছে ছাত্রীদেরকে। রুমের সামনে দেয়াল ঘেঁষে সদরঘাটগামী রাস্তা। প্রায় ৭ থেকে ৮মাস আগে রাস্তা ও ড্রেনের সংস্কার কাজ হওয়ার পরে ফুটপাতের উচ্চতা অনেকটা বৃদ্ধি পায়। যার দরুন ফুটপাতে দাঁড়িয়ে দেয়ালের উপর দিয়ে কমনরুমের একাংশ দেখা যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানান যে, সিঁড়ির ভিতরে অংশটায় অনেক ছাত্রীরাই বসে তাদের অবসর কাটায়, বই পড়ে,কেউ কেউ গান গায়।ক্যাম্পাসের এতো অধিক সংখ্যক ছাত্রীর তুলনায় কমন রুমের জায়গার পরিমাণ শোচনীয় হাওয়ায় ছাত্রীদেরকে এই অল্পএকটা জায়গার মধ্যেই তাদের অবসর কাটাতে হয়।কিন্তু এখন সে সময়টুকু যেন তারা সেখানে বসতে পারছেন না একদিকে ফুটপাত উচু হয়েছে অন্যদিকে দেওয়ালের উপর সব গ্রিল খুলে গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের এমন বসার যায়গায় এমন করুন দশা নিয়ে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বল বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ঠিকমতো বিবিএ ভবনের নিচে জিম ওয়াসি গেটের ভিতর ঠিকমতো ছাত্রীরা বসতেও পারেন না। এ ব্যাপারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী প্রিতিলতা জানান, দেওয়ালটা উঁচু হলে ভালো হবে বাইরে থেকে কেউ যেন দেখতে না পারে। কারন শিক্ষার্থীরা এখানে একটু খোলামেলা ভাবেই বসেন।

সরেজমিন দেখা যায়, সীমানাপ্রাচীরের দেওয়ালের উপরের অংশের রডের গ্রিল ভাঙ্গা। দেওয়ালের উপরের পিলারও ভেঙে পড়ে গেছে। যার ফলে দেওয়াল টপকে যেকোনো বহিরাগত সহজেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর প্রবেশ করতে পারে। এদিকে সীমানাপ্রাচীরের অনেকাংশে ফাটল ধরেছে। এমনকি দেওয়ালের কিছুটা অংশ ভেঙে ফুটপাতে পড়ে আছে।

ফলে সীমানাপ্রাচীর ঘেঁষা ফুটপাত দিয়ে চলাচলকারী শিক্ষার্থী, পথচারী যে কেউ দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন। সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে বিভিন্ন স্থানে যাওয়ার একমাত্র রাস্তার ফুটপাত এটি। চলাচলের প্রধান এ সড়কটিতে সর্বসাধারণের জন্য একপাশে অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয় সীমানাপ্রাচীর ঘেঁষেই রয়েছে ফুটপাতটি।

১৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শান্তা ইসলাম জানান, দেওয়াল উচু হলে আর পরিবেশটা সুন্দর হলে আমরা সবাই এখানে বসে নিজেদের অবসর সময়টুকু উপভোগ করতে পারবো।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড.মোস্তফা কামাল জানান, আমরা দীর্ঘ দুই বছর ধরে দেওয়ালটির কাজে হাত দেওয়ার কথা কর্তৃপক্ষকে অবগত করে আসছি। ইঞ্জিনিয়ার দপ্তর বিষয়টি ভালোভাবে ব্যাখ্যা করতে পারবে কেন কাজের অগ্রগতি হচ্ছে না। শিক্ষার্থীরা যেমন চাচ্ছেন দেওয়ালটা উচু হউক, আমরাও চাচ্ছি দেওয়ালটা আরো কয়েক ইঞ্চি উচু করে গ্রিল লাগাতে যাতে শিক্ষার্থীরা নিরাপদ থাকে। এখানে অবসর সময় কাটাতে বসা শিক্ষার্থীরা বিড়ম্বনায় যেন না পড়তে হয় আমরা সে বিষয়টি দেখছি।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড.মোঃ আইনুল ইসলাম জানান, আমরা বিষয়টি অবগত আছি ইঞ্জিনিয়ারের সাথে কথা বলে সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করে কাজ শুরু করা হবে।
প্রকৌশলি দফতরে যোগাযোগ করা হলে প্রধান প্রকৌশলি মোঃ হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী জানান সীমানা প্রাচীরের কাজের জন্য দাপ্তরিক প্রাক্কলনে ইষ্টিমেট করা হয়ে গেছে। শিক্ষক সমিতির রিপোর্ট জমা দিলেই সীমানা প্রাচীরের কাজ শুরু হবে।

ইবাংলা/জেএন/১৭ মে, ২০২২

Contact Us