জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছোট্ট একটা ক্যাম্পাস হলেও এখানে পড়াশোনা করে প্রায় ১৭ থেকে ১৮ হাজার শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ে সামনের রাস্তা পার হয়ে যেতে হয় টিএসসিতে আর রাস্তা পার হতেই যত বিপত্তির মুখে পড়ে শিক্ষার্থীরা দেখা যাচ্ছে কখনো কোনো কোনো গাড়ি সজোরে এসে ধাক্কা দিচ্ছে কাউকে বা পায়ের উপর উঠে যাচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায় প্রধান ফটকের সামনে ৪টি রাস্তা একত্রিত হয়েছে। গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ির গাড়িগুলো রায়সাহেব বাজার দিয়ে জবির প্রধান ফটকের সামনে দিয়ে যায়। এদিকে সদরঘাট থেকে ছেড়ে আসা গাড়িগুলোও প্রধান ফটকের সামনে দিয়ে যায়।
এছাড়া ঢাকা নদীবন্দরের সমস্ত যাত্রীরাও এই রাস্তা ব্যবহার করেন।অনেক সময় দেখা যায় প্রায় ১৫ মিনিট আটকে আছে গাড়ির পর গাড়ি আর শিক্ষার্থীদের পার হতে হচ্ছে গাড়ি হাত দিয়ে সড়িয়ে বা খালি রিকশা থাকলে তার উপর দিয়ে ডিঙ্গিয়ে।
এছাড়াও যানজট লাগার অন্যতম প্রধান কারণ হলো বাইক রাইডার, রিকশা পার্কিং। সব বাস জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে দিয়ে ঘুরাতে হয় যার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩নং গেটের পাশেই ভিক্টর ক্লাসিক, সাভার পরিবহন, তানজিল, বিহঙ্গ, আজমেরী গ্লোরী, ৭ নাম্বার বাস যাত্রী ওঠা-নামানোর কাজ করে যা জ্যামের অন্যতম কারণ।
১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আয়নাল হক রিসাদ বলেন, আমি, আমার বন্ধু নাঈম আর জাকির মিলে একদিন রাস্তা পার হচ্ছিলাম তখন এক ভ্যানওয়ালা সজোরে চালিয়ে এসে আমাদের দুইজনের উপর দিয়ে উঠে যেতে ধরে, আমি হাত দিয়ে ভ্যান থামানোর চেষ্টা করি, এতে হাতের কব্জিতেও ব্যথা পাই।
আর জাকিরের পায়ে চাকা এসে লাগে, জাকিরের সাদা প্যান্টে কাদা লাগে, প্যান্ট কিছুটা ফেটে যায়, আর ভিতরে চামড়া উঠে যায় এবং সামান্য আঘাতপ্রাপ্ত হয়। তিনি আরো বলেন মূলত ওরা মেইন গেটের সামনের রাস্তাটায় গাড়ি একদমই স্লো করতে চায় না। যে স্পিডব্রেকারটা দেওয়া আছে সেটা আরেকটু উচু করা দরকার।
জবি শিক্ষার্থী সাবিকুন্নাহার বলেন, রাস্তা পার হওয়ার সময় কিছু রিকশাওয়ালা মামাদের হাত দিয়ে ইশারা দিলেও তারা গতি কমায় না বরং একরকম ধাক্কা দিয়েই চলে যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে নানা সময়ে প্রধান গেটের একটি ফুটওভার ব্রিজ বা সহজে রাস্তা পারাপারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার কথা আশ্বাস পাওয়া গেলেও তা আলোর মুখ দেখেনি এখনো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দায়িত্বরত ক্যাম্পাসের প্রধান গেটের এক নিরাপত্তারক্ষী জানান, এখানে মূলত বিভিন্ন হকার দাঁড়ায় যেমন আখের রস বিক্রেতা,ফল বিক্রেতা পান সিগারেট এবং শরবত এর দোকানগুলো যদি সড়ানো যায় তাহলে শিক্ষার্থীদের জন্য কিছুটা সুবিধা হবে। যানজট কিছুটা কমবে।
আরো বলেন যে কিছু ট্রাফিক আছেন তারা শিক্ষার্থীদের সুবিধার কথা না ভেবে বাস ঘুড়াতে দেন। এদিকে লম্বা জ্যাম পড়ে থাকে শিক্ষার্থীরা রাস্তা পার হতে পারে না। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন রাস্তার উপর যে স্পিডব্রেকার রয়েছে তা নামমাত্র, মনে হচ্ছে এটা কিছুটা উচু হলে গতি কিছুটা কমিয়ে গাড়ি চালাবে চালকরা।
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল জানান,অব্যবস্থাপনা দূরীকরণে সিটি কর্পোরশন, ডিএমপি ও ট্রাফিককে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এর পরেও আমরা কথা বলবো কেন এটা হচ্ছে না, কতদিন লাগবে আরো।আমাদের আশ্বস্ত করেও কেন কোন সাড়া দিচ্ছে না জবাবদিহিতা চাইব।
ইবাংলা /জেএন /১৬ জুন,২০২২