উজানের পাহাড়ি ঢল ও টানা ভারী বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট বন্যায় সিলেট ও মৌলভীবাজারের বিভিন্ন উপজেলায় প্রায় ৫০ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
শনিবার (১৮ জুন) দুপুরে বন্যার ত্রাণ কার্যক্রম নিয়ে সমন্বয় সভায় সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ড. মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, সুরমা নদীর পর কুশিয়ারা নদীর পানিও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে সিলেট-সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে।
অন্যদিকে বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, বালাগঞ্জসহ আশপাশের এলাকায় নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। একই সঙ্গে টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল অব্যাহত রয়েছে।
এ ছাড়াও সিলেট রেল স্টেশনে বন্যার পানি উঠে যাওয়ায় সিলেট থেকে সারাদেশে রেল যোগাযোগ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার (১৮ জুন )দুপুরের পর থেকে ঢাকা বা চট্টগ্রাম থেকে ট্রেন চলবে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার মাইজগাও স্টেশন পর্যন্ত। এর আগে সিলেটের আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালও বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। তাই সিলেটের সঙ্গে বাস যোগাযোগও বন্ধ হয়ে গেছে।
এদিকে পাউবোর দেওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সুরমা নদী সিলেট (নগরী) পয়েন্টে বিপদসীমার ৬৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমা নদী কানাইঘাট পয়েন্টে ৯৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
এদিকে কুশিয়ারা নদী শেওলা পয়েন্টে বিপদসীমার ওপরে ২৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শেরপুর ও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে কুশিয়ারা এবং অমলসিদ পয়েন্টে সুরমার পানি বাড়ছে।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমেদ জানান, পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় নদ-নদীর পানিও বাড়ছে। ফলে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।
সিলেটে আবহাওয়া অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী বলেন, শনিবার সকাল থেকে দুপুর অবধি ৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ১০৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী চলমান বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় পরিস্থিতি আরও নাজুক হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পূর্বাভাস অনুযায়ী অন্তত আরও দুদিন বৃষ্টিপাত হবে। একই সময়ে উজানেও ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। এতে নদ-নদীর পানি বাড়বে।
সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ড. মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন বলেন, বন্যা উপদ্রুত অঞ্চল থেকে দুর্গতদের জন্য দ্রুত উদ্ধার করা যায় বা জরুরি ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানো যায় সেজন্য প্রশাসনের তরফ থেকে সেনাবাহিনী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাহায্য করা হচ্ছে। উদ্ধারকাজে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি আজ শনিবার থেকে নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী ও কোস্টগার্ড যুক্ত হয়েছে।
ইবাংলা / জেএন / ১৮ জুন,২০২২