বর্ষার চুড়িতে রিনিঝিনি সুর শুনে এসেছে আষাঢ়

 ফারুক সরকার প্রধান

বর্ষার চুড়িতে রিনিঝিনি সুর শুনে
গ্রীষ্মের তপ্ততা মিটিয়ে দিয়ে এসেছে
আকাশের কালো মেঘ নিয়ে ঋতুদেবের আষাঢ়।

আষাঢ়ের ঘামে যদি এখনো কাঁঠালের স্বপ্ন থাকে
চেয়ে দেখো আশে পাশে – তুমি একা নও,
রয়েছে সবাই লেন দেনের অপেক্ষায় – ভেজা কাঁক,
ডুমুড়ের নীচে অস্থির শালিক আর ঘরহাড়া কপোতিনী।

জলডুবি জলে ডুবে যেন কাঁদে – বাতাবী আর পেয়ারার
ডালে বসে নেই চড়ুইয়ের দল, থৈ থৈ নদী নালা হাওড়
আর খাল বিল ঝিল পুকুর ভরা মৎস-উৎসবের কালে।

হেলেঞ্চা আর কলমিলতা আছে অপেক্ষায় নূতন বউয়ের,
কটিতে আছে তার কলসি ভরা টান মধুময় মালঞ্চের।
রাজমৌসুমিতে তবুও কেন অযথা অতৃপ্তি তোমার?

জুঁই গন্ধরাজ আর হাস্নাহেনার পুলকিত শৈলীরীতি চালে
নাই বা পেলে তুমি কাঁঠালিচাঁপা আর কদমের ডালে
রোদ চুরির আনন্দ। তবুও দেখে যাও বিভোর সবাই।

তালে ঝুলন্ত বাবুই দেখে সবুজের সমারোহ, বুঝে না
মোটেও জামরুল, বেল কদবেল আতাফল আর সফেদার
সাথে ওরবড়ই কেন মূল্যহীন তুচ্ছ অযোগ্য এতো।

গরিমায় ডাকা আর বৈভবে ভাসা পহেলা আষাঢ় তাই
এনেছে ঠাকুরালী কেয়া কামিনীর। সখী যামিনী-গলায় লাজে
আছে অধীর অপেক্ষায়। শাপলা, পদ্ম আর অলকানন্দের সাজে
কলাবতী আর মোড়গফুল কাঁদে না কখনো কবিদের মাঝে।

রাজনীতির লাঠিহাত আর মানবিকতার উদ্ভট আচরণ নিয়ে শোনো
প্রচুর গীতিকাব্য – অহং আর উল্লাস। খোলে দাও পূবের জানালা
এবার, বিনা অযুহাতেই শোনাও জগৎ মাতার বর্ষার আনন্দের গান।
উল্লাসের লাঙ্গল নিয়ে বারংবার মাতাল আমি, রেখে যাক হৃদয়ের বানে
ভেসে আসা কাঁচমতির কচুড়ীপনা আর আষাঢ়ের ধারা আপ্লুত প্রাণে।

১লা আষাঢ়, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
সিল্কেবোর্গ, ডেনমার্ক

ইবাংলা / জেএন / ২৯ জুন,২০২২

Contact Us