ঈদে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি কমানোর পাশাপাশি বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) থেকে সাত দিন গণপরিবহনের সুষ্ঠু চলাচল নিশ্চিত করতে দেশের সব মহাসড়কে মোটরসাইকেল চলাচল নিয়ন্ত্রণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতি।
তবে যৌক্তিক কারণ দেখালে মহাসড়কে মোটরসাইকেল চালানো যাবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। বিশেষ করে ঢাকার পাশে জেলাগুলোতে মোটরসাইকেলে বাড়ি যাওয়া যাবে। এছাড়া এক জেলা থেকে আরেক জেলায় মোটরসাইকেলে যাওয়া যাবে না।
সম্প্রতি সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ জানায়, অনুমোদিত এলাকার বাইরে মোটরসাইকেল রাইড-শেয়ারিং করা যাবে না এবং পবিত্র ঈদুল আজহার আগের তিন দিন, ঈদের দিন এবং ঈদের পরের তিন দিন সারা দেশের মহাসড়কে যৌক্তিক কারণ ছাড়া মোটরসাইকেল চালানো যাবে না। পাশাপাশি এক জেলায় রেজিস্ট্রেশনকৃত মোটরসাইকেল অন্য জেলায় চালানো যাবে না। তবে যৌক্তিক ও অনিবার্য প্রয়োজনে পুলিশের অনুমতি নিয়ে মোটরসাইকেল চালানো যাবে।
জানা যায়, করোনা সংকটে বিগত ২ বছরে দেশের পরিবহনের বহরে ১০ লাখ মোটরসাইকেল নতুনভাবে যুক্ত হয়েছে। বর্তমানে ৩৫ লাখের বেশি মোটরসাইকেল রাস্তায় চলাচল করে; যা দেশের যানজট বাড়িয়ে দিয়েছে। এবারের ঈদে জাতীয় মহাসড়কে এসব যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে ভয়াবহ যানজটের ভোগান্তিতে পড়তে হতে পারে।
এবারের ঈদে গণপরিবহন সংকটকে কাজে লাগিয়ে ১২ লাখ ট্রিপ যাত্রী রাজধানী ঢাকা থেকে আশপাশের জেলাসহ বিভিন্ন দূর-দূরান্তে মোটরসাইকেলে যাত্রা হতে পারে। এ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন আন্তঃজেলায় রাইড শেয়ারিং পন্থায় আরও প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ লাখ ট্রিপ যাত্রী মোটরসাইকেলে বাড়ি যাবে। ঈদ যাত্রী বহরে দেশের জাতীয় মহাসড়কে ২০ থেকে ২৫ লাখ মোটরসাইকেল রাস্তায় থাকবে। এসব মোটরসাইকেলে স্ত্রী-সন্তান লাগেজ-ব্যাগেজ নিয়ে ভারসাম্যহীন অবস্থায় বেপরোয়াভাবে বাস-কারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।
বিগত ঈদে ৩১৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২৩ জন নিহত ৬২২ জন আহত হয়েছিল। এতে কেবল মোটরসাইকেলে ১৪৪টি দুর্ঘটনায় ১৩৯ জন নিহত, ১৯৯ জন আহত হয়েছিল; যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৪৫ দশমিক ২৮ শতাংশ, নিহতের ৪৩ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ এবং আহতের ৩১ দশমিক ৯৯ শতাংশ। এবারের ঈদে অতীতের যেকোনো সময়ের প্রায় তিন গুণ যাত্রী মোটরসাইকেলে যাত্রা করতে পারে। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকিও তিনগুণ বেড়ে যেতে পারে। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ করা গেলে এবারের ঈদে ৫০ শতাংশ দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব।
নিত্যপণ্য, কাঁচামাল, ওষুধ, জ্বালানি তেল, গার্মেন্টস সামগ্রী, রপ্তানি পণ্য, পচনশীল দ্রব্য, পশুবোঝাই ট্রাক ছাড়া ভারী পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান এবং লরি ঈদের আগের তিন দিন, ঈদের দিন এবং ঈদের পরের তিন দিন সারা দেশের মহাসড়কে চলাচল নিষিদ্ধ। এ নির্দেশনা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
ইবাংলা/জেএন/৭ জুলাই,২০২২