বন্যার কারণে পাঠদানে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে মাদারীপুর জেলার পাঁচ উপজেলার অন্তত ৪০টির মত প্রাথমিক বিদ্যালয়। এতে আগামীতে শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে শঙ্কিত শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা।
মাদারীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্যমতে, জেলার নিম্নাঞ্চলগুলোতে বন্যার পানি এরই মধ্যে উঠতে শুরু করেছে।
জেলায় পাঁচ উপজেলায় ৭২২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ৪০টি বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে, মাঠে ও যাতায়াতের রাস্তায় পানি উঠেছে।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা বেশি শিবচর উপজেলায়। পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদী তীরবর্তী হওয়ায় ঝুঁকিটা বেশি।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পানিবন্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে রয়েছে রাজৈর উপজেলায় রাঘদী নাগরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পুকুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হরিনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হিজলবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সদর উপজেলার ইটখোলা বাজিতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরঘুনসী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জাফরাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ পূর্ব মহিষেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাহেরচর কাতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কালকিনি উপজেলার চরফতে বাহাদুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শিবচরে উপজেলার খাসচর বাচামারা আজদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ২৯ টি বিদ্যালয়।
এসব বিদ্যালয়ের কোনটিতে শ্রেণিকক্ষে, কোনোটায় বিদ্যালয় মাঠে এবং কোনোটায় যাতায়াতের রাস্তায় পানি উঠে গেছে।
এতে দীর্ঘ দেড় বছর পর ১২ সেপ্টেম্বর থেকে বিদ্যালয় চালু হলে এসব বিদ্যালয়ে পাঠদান নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেবে। ফলে হতাশ হয়ে পড়েছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা।
সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রাশিদা খাতুন বলেন, ‘আমরা অনেকগুলো বিদ্যালয় পরিদর্শন করেছি। এর মধ্যে ৫টি বিদ্যালয়ের যাতায়াতের রাস্তা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে আপাতত পাঠদানে কোনো সমস্যা হবে না।’
‘করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্যবান্ধব পরিবেশ গঠনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। আগামীতে আরও কঠিন পরিস্থিতি হলে স্কুল চালানো সমস্যা হবে।’
শিবচর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ উপজেলায় চর ও নিম্নাঞ্চল বেশি। যে কারণে ২৬টি বিদ্যালয়ে পানি উঠেছে। আরও কিছু বিদ্যালয় ঝুঁকিতে রয়েছে। পানি বাড়তে থাকলে আরও অন্তত ২০টি বিদ্যালয় পানিতে প্লাবিত হবে।’
‘আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানিয়েছি। তারাও কয়েকটি বিদ্যালয় পরিদর্শনকালে। এর মধ্যে সন্নাসীরচর ইউনিয়নের খাসচর বাচামারা আজাদ বিদ্যালয়টি ভাঙনের মুখে রয়েছে।’
এ ব্যাপারে মাদারীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন আহম্মেদ জানান, ‘জেলার যেসব বিদ্যালয় পানি উঠতে পারে, তার একটি তালিকা তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি।
‘এখন পর্যন্ত বেশ কিছু বিদ্যালয়ের মাঠে পানি উঠেছে। কিছু বিদ্যালয়ের চলাচলের রাস্তায় পানি উঠেছে তবে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে সেভাবে পানি ওঠেনি। যদি পানি উঠে, তাহলে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর মধ্যে শিবচর উপজেলার চরাঞ্চলের বিদ্যালয়গুলো বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।’
ইবাংলা / ১১ সেপ্টেম্বর