স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর তৈরি করল মাউশি

নিজস্ব প্রতিবেদক :

স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর-(এসওপি) তৈরি করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর।

সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য এতে আলাদা আলাদা করে নির্দেশনা দেয়া রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এর প্রতিপালনও শুরু করেছে। সবার প্রত্যাশা নিরাপদেই শ্রেণীকক্ষে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হবে।

প্রায় দেড় বছর পর আজ থেকে খুলছে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। করোনা সংক্রমণের বিষয়টি মাথায় রেখে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর এরইমধ্যে বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে। তবে এর বেশিরভাগই ছিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক। তবে বৃহস্পতিবার মাউশি যে এসওপির আলোকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে বলেছে, তাতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, শিক্ষা কর্মকর্তার পাশাপাশি অভিভাবকদের প্রতিও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

এই এসওপিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের ৮ দফা নির্দশনা দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ৫ই সেপ্টেম্বর জারি করা নির্দেশনা অনুসরণ করার পাশাপাশি অতিমারী পরিস্থিতিতে করণীয় ও বর্জনীয় নিয়ে প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট সবাইকে সুস্পষ্ট ধারণা দিতে হবে। অন্তত ৮০ শতাংশ শিক্ষক কর্মচারীর টিকা নেয়া নিশ্চিত করতে হবে।

শিক্ষকদের প্রতি নির্দেশনা :

শিক্ষার্থীদের মানসিক অবস্থা বিবেচনায় মনোসামাজিক সহায়তা এবং অনুপ্রেরণাদায়ক বক্তব্য দেয়াসহ শিক্ষকদেরও আট দফা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে এসওপিতে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে :

১. মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে জারি করা ‘গাইডলাইন’ এবং ৫ সেপ্টেম্বরের দেয়া নির্দেশিত কার্যক্রম সঠিকভাবে অনুসরণ নিশ্চিত করা।

২. শিক্ষার্থীদের মানসিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে তাদের মনোসামাজিক সহায়তা দেওয়া।

৩. শ্রেণি কার্যক্রমের শুরুতে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ক মোটিভেশনাল ব্রিফিং দেওয়া।

৪. স্কুল খোলার অল্প কিছুদিনের মধ্যে শিক্ষার্থীদের দুর্বল দিকগুলো চিহ্নিত করে তা প্রশমনে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।

৫. আনন্দঘন পরিবেশের মাধ্যমে শ্রেণি পাঠদান করা।

৬. হাঁচি কাশির শিষ্টাচার নিজে পালন করবেন ও শিক্ষার্থীদের এ বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করবেন। কোন শিক্ষক ক্লাস শেষে পরবর্তী শিক্ষক না আসা পর্যন্ত শ্রেণিকক্ষ ত্যাগ করবেন না।

৮. মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে জারি করা গাইডলাইন এবং নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ করবেন।

শিক্ষার্থীদের প্রতি নির্দেশনা :

রুটিন অনুযায়ী নিয়মিত ক্লাসে আসা, অসুস্থতা বোধ করলে শ্রেণীশিক্ষককে সাথে সাথে জানানো, স্বাস্থ্যবিধি মেনা চলাসহ শিক্ষার্থীদেরও ৮ দফা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে :

১. রুটিন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত আগমন।

২. প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নির্দেশিত দূরত্ব মেনে প্রবেশ, শ্রেণিকক্ষে বসা ও প্রতিষ্ঠান হতে বহির্গমন করা।

৩. অসুস্থতা অনুভব করলে সঙ্গে সঙ্গে বাবা-মাকে জানানো।

৪. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবস্থানকালে শারীরিক অসুস্থতা অনুভব করলে শ্রেণি শিক্ষককে তাৎক্ষণিক অবহিত করা।

৫. অকারণে শ্রেণি কক্ষ থেকে বাইরে না যাওয়া।

৬. হাঁচি-কাশি, কফ ও থুথু ফেলার শিষ্টাচার মেনে চলা এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা।

৭. শ্রেণিকক্ষে প্রবেশের আগে সঠিক নিয়ম অনুসরণ করে হাত ধোয়া বা স্যানিটাইজ করা।

৮. প্রতিষ্ঠানে আসা যাওয়ার পথে এবং অবস্থানকালে সঠিক নিয়মে মাস্ক পরিধান এবং ন্যূনতম ৩ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা।

অভিভাবকদের প্রতি নির্দেশনা :

আর সন্তানদের মাস্ক পরা নিশ্চিত করা, পরিবারের কেউ করোনা আক্রান্ত হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে জানানোসহ অভিভাবকদের জন্যও রয়েছে ৮ দফা নির্দেশনা। এগুলোর মধ্যে রয়েছে :

১. সন্তানকে মাস্ক পরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠানো নিশ্চিত করা।

২. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার জন্য সন্তানকে উৎসাহিত করা।

৩. সন্তানকে নিজ স্বাস্থ্য সম্পর্কে ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে সচেতন করা।

৪. প্রতিষ্ঠানে সঠিক সময়ে যাওয়া ও সঠিক সময়ে বাসায় আসা নিশ্চিত করা।

৫. সন্তান অথবা পরিবারের কোন সদস্য কোভিড আক্রান্ত হলে প্রতিষ্ঠান প্রধানকে অবিলম্বে জানানো।

৬. প্রতিষ্ঠানের দেওয়া নির্দেশনা সন্তান ও অভিভাবক উভয়ই অনুসরণ করবেন।

৭. শুধু খাবার পানি বাসা হতে আনার বিষয়ে সন্তানকে উৎসাহিত ও নিশ্চিত করবেন।

৮. অন্য কোন প্রকার খাবার বাসা থেকে নিয়ে না আসা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবস্থানকালে বাইরের খাবার না খাওয়ার বিষয়ে সচেতন করবেন।

এছাড়া প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি, উপজেলা, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য আলাদা আলাদা নির্দেশনা দেয়া রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সবাই মিলে নির্দেশনা মেনে চললে নিরাপদে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা সম্ভব হবে বলে মনে করছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর।

ইবাংলা / টিপি / ১২ সেপ্টেম্বর

Contact Us