নিরাপদ ইলিশের বংশ বিস্তারে আগামীকাল রোববার দিবাগত রাত ১২টা থেকে ২৫ অক্টোবর রাত ১২টা পর্যন্ত ২২ দিন বন্ধ থাকবে ইলিশ আহরণ। এ নিষেধাজ্ঞা চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত প্রায় ৯০ কিলোমিটার এলাকায় চলবে। এই সময়ে ইলিশ আহরণ, বিপণন, মজুদ, ক্রয়-বিক্রয় ও সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে জেলা মৎস্য বিভাগ।
মৎস্য সংরক্ষণ আইনে এই ২২ দিন নিষেধাজ্ঞার ভঙ্গ করলে আইনভঙ্গকারীর কমপক্ষে ১ থেকে ২ বছর সশ্রম কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ইলিশ গবেষক ড. মো. আনিছুর রহমান।
তিনি বলেন, এবার বড় বড় সাইজের ইলিশ ধরা পড়েছে অনেক। তাই আমরা আশা করছি ইলিশ প্রচুর ডিম ছাড়বে। এতে করে আগামীতে ইলিশের আশানুরূপ উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৪ উপজেলায় ৫১ হাজার ১৯০ জেলে পরিবার ইলিশ আহরণ এর উপর নির্ভর করে চলে। নিষেধাজ্ঞার সময়ে এ বছর সরকারের পক্ষ থেকে ৫১ হাজার জেলেকে খাদ্য সহায়তা হিসেবে ২০ কেজি করে চাল দেয়া হবে। এমনকি এসব জেলে পরিবারগুলোর বিকল্প কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তবে ইলিশ প্রজনন মৌসুম সম্পর্কে স্থানীয় জেলেরা বলেন, ‘আমরা সরকারের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। যার কারণে বন্ধ হওয়া মাত্রই নৌকা ও জাল ডাঙায় উঠিয়ে রাখবো। তবে এ সময়ে সরকারি সহায়তা সম্পর্কে তারা বলেন, ২০ কেজি করে চাল একেবারেই কম। যা দিয়ে আমাদের সংসার চালাতে কষ্ট হবে। তাই তারা সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন।’
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান বলেন, ‘সরকারের দেয়া নির্ধারিত সময় ও নির্দেশনামতে আমরা ইলিশ প্রজনন রক্ষা শতভাগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্সের সভা করেছি। এ বছর মা ইলিশ রক্ষায় জনপ্রতিনিধির পাশাপাশি, স্কুল শিক্ষক, মসজিদের ইমাম ও সাংবাদিকরাও জেলেদের সচেতন করার লক্ষ্যে কাজ করবেন। এ ছাড়াও জেলার ৪ উপজেলায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে দিন-রাত কাজ করবেন। জেলেদেরকে কোনোভাবেই নদীতে নামতে দেয়া হবে না।’ প্রয়োজনে র্যাবের সহযোগিতা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
এ প্রসঙ্গে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) অঞ্জনা খান মজলিশ দৈনিক আমাদের সময় অনলাইনকে বলেন, ‘আশা করছি মা ইলিশ রক্ষায় নদীর তীরবর্তী এলাকায় চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা আন্তরিক সহযোগিতা করবেন। আর জেলেদের প্রতি আহ্বান এই নিষেধাজ্ঞার সময় মা ইলিশ রক্ষা করলে জেলেরাই বেশি নদীতে ইলিশ মাছ ধরতে পারবে। এই মাছ জেলেদেরই সম্পদ।’