পুলিশি হেফাজতে মাহসা আমিনি নামে এক তরুণীর মৃত্যুকে ঘিরে এখনো আন্দোলন-বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে ইরানে। এর মাঝে বিক্ষোভ চলাকালে দেশটির নিরাপত্তাবাহিনীর নির্যাতনে আরও এক কিশোরীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। তবে সে অভিযোগ অস্বীকার করছে তেহরান।
ইরানের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শুক্রবার (৭ অক্টোবর) ১৬ বছর বয়সী কিশোরী সারিনা ইসমাইলজাদেহ ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
আরও পড়ুন…ভারতকে হারাতে বাংলাদেশের চাই ১৬০
সোশ্যাল মিডিয়া রিপোর্ট ও মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে থাকা ২২ বছর বয়সী তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভে সারিনা ইসমায়েলজাদেহকে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা লাঠিপেটা করে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতে, সারিনা ইসমাইলজাদেহ, ইউটিউবে খুবই জনপ্রিয়। ২৩ সেপ্টেম্বর আলবোর্জ প্রদেশের গোহারদাশতে বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাকে লাঠিপেটা করলে তার মৃত্যু হয়।
যদিও আলবোর্জ প্রদেশের প্রধান বিচারপতি বলেছেন, ইসমাইলজাদেহ মারা যাওয়ার প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, একটি পাঁচতলা ভবনের ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যার করেন।
বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন বলছে, দেশটিতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে অন্তত ১৫০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও কয়েকশ মানুষ। আটক করা হয়েছে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারীকে। নারীরা এই আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন।
ইরানে জনসম্মুখে নারীদের বাধ্যতামূলক হিজাব পরাসহ কঠোর পর্দা পালনের নিয়ম রয়েছে। এই বিধিগুলো তদারক করার জন্য রয়েছে দেশটির ‘নৈতিকতাবিষয়ক’ পুলিশ। এই পুলিশের একটি দল গত ১৩ সেপ্টেম্বর ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনিকে তেহরান থেকে আটক করে।
আমিনি তার পরিবারের সঙ্গে তেহরানে ঘুরতে গিয়েছিলেন। আটকের পর মাহসা আমিনি থানায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত ১৬ সেপ্টেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় মাহসা আমিনির। এ ঘটনায় ব্যাপক নিন্দার ঝড় বইছে।
আরও পড়ুন…কমতে শুরু করেছে, নিত্যপণ্যের দাম: পরিকল্পনামন্ত্রী
ইরানের রাস্তায় বিক্ষোভে নামে তরুণ তরুণীসহ বহু মানুষ। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নারীদের কেউ কেউ মাথার হিজাব খুলে পুড়িয়ে ফেলেন। কেউ কেউ জনপরিসরে নিজেদের চুল কেটে ফেলেছেন। বিক্ষোভ থেকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনির পদত্যাগও দাবি করা হয়।
ইবাংলা/জেএন/০৮ অক্টোবর ২০২২
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.