হেঁটে গিয়ে হজ করা দিনাজপুরের একমাত্র হাজি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন মারা গেছেন। রবিবার দিবাগত রাতে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ১১৫ বছর।
জানা গেছে, রবিবার দিবাগত রাত ১২টা ২০ মিনিটে দিনাজপুর সদর উপজেলার ৯ নম্বর আস্করপুর ইউনিয়নের খসরুর মোড়ে মেয়ের বাসায় ইন্তেকাল করেন মহিউদ্দিন। দুই ছেলে ও চার মেয়ে রেখে গেছেন তিনি।
সোমবার দুপুর দুইটায় রামসাগর জামে মসজিদে জানাজা শেষে নিজ বাড়ি দীঘিপাড়ায় তার দাফন সম্পন্ন হবে।
হাজি মহিউদ্দিন ১৯০৬ সালে ১০ আগস্ট দিনাজপুর সদর উপজেলার ৯ নম্বর আস্কপুর ইউনিয়নের রামসাগর দিঘিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মরহুম ইজার উদ্দিন।
উল্লেখ্য, মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ১৯৬৮ সালে হজ করেছিলেন। সেই সময় তার কাছে হজ করার মতো আর্থিক সার্মথ্য ছিল না। অদম্য ইচ্ছা নিয়ে আর এলাকাবাসীর সহায়তায় হেঁটেই হজ করতে যান তিনি। তার হজ যাত্রায় সময় লেগেছিল ১৮ মাস।
এক সাক্ষাৎকারে তিনি গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, “বাসা থেকে প্রথমে ঢাকায় যাই, তারপর পতেঙ্গা পৌঁছাই। পতেঙ্গা থেকে জাহাজে সিংহল (শ্রীলংকা) হয়ে পাকিস্তান যাই। এরপর একে একে আফগানিস্তান, ইরান, ইরাক, জর্ডান, মিশর, কুয়েত হয়ে সৌদি আরব পৌঁছাই। সেখানে মক্কা হয়ে সর্বশেষে দেখা পেলাম মদিনার। মদিনায় পৌঁছে তিনমাস খাদেমের পদধূলি নিয়েছি। খাদেমের নাম ছিল ইসমাইল।”
তিনি আরও বলেছিলেন, “সবাই বিমানে না যেয়ে হেঁটে হজ করলে বহুদেশ দেখতে পারবেন। ইরাক, ইরানে চলে গাঁধার হাল। এই হালিদের সঙ্গে গল্পগুজব করতে পারবেন। তাদের পদধূলি নিতে পারবেন। এতে আশা করি বহু নেকি পাওয়া যাবে। ধান চাষ করলে যেমন ধান পাওয়া যায়, বিষয়টি ঠিক তেমনি। জমি না চাষ করলে যেমন ধান পাওয়া যাবে না, ঠিক তেমনই হজ চাষ না করলে নেকি পাওয়া সম্ভব না।”