নোয়াখালী সদর উপজেলার ৯ নম্বর কালাদরাপ ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (তহশীলদার) মোহাম্মদ মাসুদ আহমেদকে ঘুষের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য গণপিটুনি দিয়ে ১০ ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে স্থানীয় ভুক্তভোগী জনসাধারণ।
ওই ঘটনায় গত ২ জুন একাধিক গণমাধ্যমে “নোয়াখালীর কালাদরাপ ইউনিয়ন ভূমি অফিস : ঘুষের টাকা ফেরত দিতে তহশিলদারকে গণপিটুনি” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর ওই ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুদ আহমেদ এর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। মামলা নং-০১/২০২২।
মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) বেলা ১২ টায় নোয়াখালী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এস.এ শাখায় ওই মামলার শুনানী করেন রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আহসান হাফিজ।
আরও পড়ুন…বাধ্যতামূলক অবসরে ৩ এসপি
মামলার শুনানী চলাকালীন সময়ে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর প্রতিনিধি, দৈনিক ভোরের কাগজ নোয়াখালী প্রতিনিধি মোহাম্মদ সোহেল ও অভিযুক্ত ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুদ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, ঘটনার বিবরণ তুলে ধরে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা (ইউএনও) নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, তৎকালীন কালাদরাপ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুদ আহমেদ এর বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে সুনিদিষ্ট অভিযোগ আমরা লিখিত এবং সাধারণ মানুষের বক্তব্যে যেটি পেয়েছি সেটি হলো, সে বিভিন্ন ভূমি সেবা, যেগুলো সাধারণ মানুষ পাওয়ার কথা, সেগুলো দেওয়ার বিনিময়ে সে মানুষ থেকে অনেকের কাছ থেকে উৎকোষ গ্রহণ করেছে এবং অনৈতিকভাবে টাকা দাবি করেছে।
যখন ভুক্তভোগীরা তাকে আটক করে, তখন স্থানীয় চেয়ারম্যানের মাধ্যমে আমরা তাকে নিয়ে আসি। পরে তাকে প্রাথমিকভাবে ওইখান থেকে বদলি করা হয় এবং আইনি যে প্রক্রিয়া সেই প্রক্রিয়ায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে।
সাধারণ মানুষ থেকে ঘুষগ্রহনের বিষয়ে ইউএনও বলেন, স্থানীয় মানুষদের সাথে যে টাকা-পয়সার লেনদেন হয়েছে, সেগুলো তারা ব্যক্তিগতভাবে তার সঙ্গে কথা বলেছে বলে আমি শুনেছি। যেহেতু বিভাগী মামলাটি তদন্তের প্রক্রিয়াধীন আছে, এই মামলার তদন্তের পর তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সরকারি খাস জমি বন্দোবস্ত, জমা খারিজ, খাজনা দাখিলাসহ ভূমি অফিসের সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে লাখ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে কাজ না করায় ঘুষের টাকা ফেরতের দাবিতে গত ৩১ মে (মঙ্গলবার) নিজ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে গণপিটুনি দেয় ভুক্তভোগী সেবা প্রত্যাশীরা।
পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহাদাত উল্যাহ সেলিম পুলিশের সহযোগিতায় অভিযুক্ত ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুদ আহমেদকে উদ্ধার করেন।
আরও পড়ুন…এশিয়ান কাপের স্বাগতিক হিসেবে দায়িত্ব পেল কাতার
এরআগে অবরুদ্ধ অবস্থায় উপস্থিত ভুক্তভোগী ও সাধারণ মানুষের সামনে কালাদরাপ ইউপি চেয়ারম্যান এবং সুধারাম থানার এসআই মনির হোসেনের কাছে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে নেওয়া ঘুষের টাকা ফেতর দেওয়ার অঙ্গিকার করে মুচলেখা দেন অভিযুক্ত মাসুদ আহমেদ। মুচলেখায় মাসুদ আহম্মদ লিখেন, আমি জনসাধারণের কাজ করবো বলে নেওয়া টাকা কাজ সমাপ্ত না হওয়ায় ফেরত দিতে বাদ্য থাকিব ও সত্য বলে স্বীকার করিলাম।
ইবাংলা/জেএন/১৮ অক্টোবর ২০২২
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.