সীমান্ত থেকে নেমে আসা বাকঁখালী নদীবেষ্টিত দোছড়ি ও বাইশারী ইউনিয়নের চিত্র পাল্টে দিতে যাচ্ছে দুই সেতু। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডির) অর্থ্যায়নে (৮ডিসেম্বর )বৃহস্পতিবার ছাগলখাইয়া ৬৪মিটার সেতু ও ৮কিলোমিটার ইদগড় -বাইশারী আলীক্ষ্যং সড়কসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের উদ্ধোধন করবেন পাবত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি।
সেতু অর্ধ লক্ষ মানুষের বহু দিনের কাঙ্কিত স্বপ্ন ছিল। দোছড়ি অংশে সড়কের কাজ শেষ হলে সীমান্তবর্তী ইউনিয়নের সঙ্গে সরাসরি বাইশারী ও আশপাশের এলাকার মানুষের যোগাযোগ স্থাপিত হবে। সেই সঙ্গে দীর্ঘদিন পিছিয়ে থাকা এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন হবে।
আরও পড়ুন…বৈরাগীর হত্যাকারিদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার পাশাপাশি দুটি ইউনিয়ন বাইশারী ও দোছড়ি। দুই ইউনিয়ন মিলে প্রায় অর্ধ লক্ষ মানুষের বাস। স্বাধীনতার পর থেকে দুটি ইউনিয়নের মানুষ যোগাযোগ করে আসছিল সমতল জেলার অন্য একটি উপজেলার দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে। কিন্তু এই দীর্ঘ পথকে সংকীর্ণ করে অভ্যান্তরীণ যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে।
রাবার বাগানের বুকচিরে হরিণখাইয়া, বাকঁখালী, ছাগলখাইয়া হয়ে দোছড়ি ইউনিয়নের সঙ্গে সরাসরি সড়কপথে যোগাযোগ তৈরী হয়েছে। বিশেষ করে বাঁকখালী নদীতে ১২৮মিটার ও ছাগলখাইয়ায় ৬৪ মিটার দুটি সেতু দুই ইউনিয়নের মানুষকে একীভূত করেছে।
সেতু দুটি নতুন দিগন্তের সুচনা হয়েছে এতদঞ্চলে। এতে করে পিছিয়ে থাকা এ জনপদে অবকাঠামোগত ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে। পার্বত্য এলাকার মানুষ সরাসরি তাদের সড়কপথে নির্বিঘেœ ও কম সময়ে যাতায়ত করতে পারবে। পাশাপাশি পাহাড় প্রকৃতি ঘেরা সেতু এলাকায় পর্যটনের বিকাশ যেমন ঘটবে তেমনই কৃষি পণ্য, রাবার বানিজ্যসহ বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে।
আরও পড়ুন…জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আটক
এই বিষয়ে বাইশারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলম বলেন, বাঁখালী, ছাগলখাইয়া ও গর্জনখালের উপর তিনটি ব্রিজের কারনে পাশাপাশি দুটি ইউনিয়নের মানুষের সম্পূর্ণ জীবনযাত্রা পাল্টে যাবে। এখানকার জমির মূল্য যেমন বাড়বে তেমনি এই সড়ক হয়ে রাবার ও কৃষি পণ্য সহজেই পরিবহণ করা যাবে।
দোছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইমরান বলেন, ব্রিজ হওয়াতে বাঁকখালী ও দোছড়ি দুটি মৌজার মানুষের আমূল পরিবর্তণ ঘটবে। বাড়বে নাগরিক সুবিধা। তবে বাকঁখালী ব্রিজের শেষ অংশে রাস্তার বাকি কাজ সম্পন্ন করার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানান।
বাইশারী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতা আবুল কালাম জানান, একসময় এখানকার মানুষের উপজেলায় যেতে কয়েকদিন আগে প্রস্তুতি নিতে হতো। বাজারে যাওয়ার একমাত্র মাধ্যম ছিল নৌকা। কিন্তু এখন মুহুর্তের মধ্যে গাড়ি যোগে সেতু পার হয়ে পোছে যাচ্ছে নিজ গন্তব্যে। অবহেলিত জনপদ ও দূর্গম এলাকায় এ উন্নয়নের মহাযজ্ঞের কারনে এরইমধ্যে জমিজমার দাম বেড়েছে কয়েক গুণ। পাল্টে যাচ্ছে এলাকার চেহারা। সেতু দুটি চালু হওয়ার মাধ্যমে দূর্গম এলাকার মানুষ দ্রæত সড়ক যোগাযোগ সুবিধা পাবে।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম বলেন, ২০২০ অর্থবছরে বাইশারী-দোছড়ি সড়কে বাঁকখালী নদীর উপর ৬কোটি ২৯লাখ ৮১হাজার ৮২৮ টাকা ব্যায়ে ১২৮ মিটার এবং ছাগলখাইয়া এলাকায় ৩কোটি ৩৭লাখ ৫২হাজার ২৮৪ টাকায় ৬৪মিটার দুটি সেতুর টেন্ডার আহŸান করা হয়।
আরও পড়ুন…আমাদের সাথে যৌথ আন্দোলন করে রাজনীতি শিখেছে বিএনপি
এর মধ্যে বৃহস্পতিবার ছাগলখাইয়া ৬৪মিটার দুটি সেতু ও ৮কিলোমিটার ইদগড় -আলীক্ষ্যং হেডম্যান পাড়া বৌদ্ধ বিহার হয়ে মিরঝিরি পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সড়কসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের উদ্ধোধন করা হবে। আর এর ফলে পাল্টে যাচ্ছে এলাকার চেহারা। সেতু ও সড়ক চালু হওয়ার মাধ্যমে দূর্গম এলাকার মানুষ দ্রæত যোগাযোগ সুবিধা পাবে।
ইবাংলা/জেএন/৬ ডিসেম্বর, ২০২২
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.