কলম্বিয়ার সবচেয়ে বড় অপরাধী চক্রের প্রধান ও মাদক সম্রাট দাইরো আন্তোনিও উসুগাকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। গতকাল শনিবার পানামা সীমান্তবর্তী অ্যান্টিকোয়া প্রদেশের প্রত্যন্ত আস্তানা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। দাইরো আন্তোনিও উসুগা ওরফে অ্যাতোনিয়েলকে ধরতে এই বিশেষ অভিযানে অংশ নেয় দেশটির সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী এবং পুলিশ।
পুলিশ জানায়, এক দশক আগে নববর্ষের পার্টিতে পুলিশের একটি অভিযানে তার ভাই নিহত হওয়ার পর গালফ ক্ল্যানের প্রধান হয়ে ওঠেন অ্যাতোনিয়েল, যেটি আগে উসুগা ক্ল্যান নামে পরিচিত ছিল।
কলম্বিয়ার নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, এই দলটি দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী অপরাধী চক্র। আর যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষের বর্ণনা অনুযায়ী, ‘এরা ভারী অস্ত্রে সজ্জিত চরম সহিংস একটি দল।’
বিবিসি জানিয়েছে, কলম্বিয়ার অনেকগুলো প্রদেশে এই চক্রটি বিস্তৃত। তাদের বিদেশেও ভালো যোগাযোগ রয়েছে। ধারণা করা হয়, এই দলে ১৮০০ সশস্ত্র সদস্য রয়েছে, যাদের চরম ডানপন্থী আধাসামরিক বাহিনীগুলো থেকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কলম্বিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্র, এমনকি রাশিয়ায় মাদক পাচারের রুটগুলো নিয়ন্ত্রণ করে এই চক্রটি।
তবে কলম্বিয়ার সরকার মনে করে, সাম্প্রতিক সময়ে তারা এই দলটিকে অনেকটাই দমন করতে পেরেছে। কারণ তাদের অভিযানে এদের অনেক নেতা জঙ্গলের প্রত্যন্ত এলাকাগুলোয় লুকাতে বাধ্য হয়েছে।
এদিকে, অ্যাতোনিয়েলকে গ্রেপ্তারের পর এক টেলিভিশন বার্তায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আইভ্যান ডুকে। এখনো এই অভিযান সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। তবে প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, এই অভিযানে একজন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।
৫০ বছর বয়সী এই মাদক ব্যবসায়ীকে ধরতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অসংখ্য অভিযান চালানো হয়েছে, যেসব অভিযানে হাজার হাজার কর্মকর্তা অংশ নিয়েছেন। কিন্তু কোন অভিযানই সফল হয়নি।
এর আগে, অ্যাতোনিয়েল সম্পর্কে তথ্য পেতে আট লাখ (সাত কোটি টাকার বেশি) মার্কিন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল কলম্বিয়ার সরকার, আর তাকে ধরিয়ে দিতে পাঁচ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৪৫ কোটি টাকা) ঘোষণা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।
২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিচারে অভিযুক্ত হয়েছেন অ্যাতোনিয়েল। ফলে তাকে বিচারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হতে পারে।
সে ক্ষেত্রে তাকে নিউইয়র্কের আদালতেও হাজির হতে দেখা যাবে। যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পাচার, পুলিশ কর্মকর্তাদের হত্যা এবং মাদক কারবারে শিশুদের নিয়োগ দেয়ার মতো অনেকগুলো অভিযোগের মুখোমুখি হতে হবে অ্যাতোনিয়েলকে।