ফরিদপুরে এক্সপ্রেসওয়েতে অ্যাম্বুলেন্সে আগুন লেগে নিহত ৭ জনের পরিচয় মিলেছে। তারা সবাই একই পরিবারের। তাদের বাড়ি ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের ফেলাননগর গ্রামের।
শনিবার ১১টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের ফেলাননগর গ্রামের প্রবাসী আজিজার রহমানের স্ত্রী তাছলিমা বেগম (৫৫), তার মেয়ে কমলা পারভীন (২৬), বিউটি বেগম (২৪), নাতি হাসিব (৮), হাফসা (২), আরিফ (১২) ও মেহেদি (১২)। এরমধ্যে কমলা বেগম ঢাকায় বসবাস করেন। ছোট মেয়ে বিউটি বেগম উপজেলার শেখর ইউনিয়নের মাইটকুমরা গ্রামের মাহমুদ ইসলাম রনির স্ত্রী।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের ফেলাননগর গ্রামের সৌদি প্রবাসী আজিজার রহমানের স্ত্রী তাছলিমা বেগম হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় এক মাস আগে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা শেষে বড় মেয়ে কমলা বেগমের বাসায় ছিলেন। শনিবার সকালে তারা ঢাকা থেকে বোয়ালমারী গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পথিমধ্যে দুর্ঘটনায় সাতজনই প্রাণ হারান।
বোয়ালমারী থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল ওহাব বলেন, এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
আরও পড়ুন>> ভাঙ্গায় মাইক্রোবাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, নিহত ৬
বোয়ালমারী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোশারেফ হোসাইন বলেন, খবর পেয়ে ওই বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দেওয়া হয়। ওই পরিবারে শোকের মাতম চলছে। খুবই হৃদয় বিদারক ঘটনা, যা সহ্য করার মতো নয়।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার জানান, ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) বিপুল চন্দ্র দে’কে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত শেষে তিন কর্মদিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। এছাড়া নিহতদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রদান করা হবে।
এদিকে, অ্যাম্বুলেন্সে অগ্নিকাণ্ডে আহত অ্যাম্বুলেন্স চালককে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। শনিবার দুপুর ৩টার দিকে দিকে তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটের উদ্দেশ্যে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
আহত ওই অ্যাম্বুলেন্স চালকের নাম মিতুল (২৫)। তিনি ফরিদপুর শহরের লক্ষ্মিপুর মহল্লার তকি মোল্যা সড়কের সুভাষ চন্দ্র মালোর সন্তান। দুর্ঘটনার পর দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে তাকে ফরিদপুরের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এর আগে, বেলা ১১টার দিকে ভাঙ্গা উপজেলার মালিগ্রামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এক্সপ্রেসওয়েতে চলন্ত অ্যাম্বুলেন্সে আগুন লেগে সাতজন নিহত হন। আর একমাত্র জীবিত ব্যক্তি হিসেবে ওই অ্যাম্বুলেন্সের চালককে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে তিনিও মারা যান। এ অ্যাম্বুলেন্সে অগ্নিকাণ্ডে তিনজন নারী ও দুই শিশুসহ সাতজন নিহত হন।
কী কারণে অ্যাম্বুলেন্সটিতে আগুন লেগে যায় তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ভাঙ্গা থানার ওসি জিয়ারুল ইসলাম বলেন, সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কারণে অ্যাম্বুলেন্সটিতে আগুন ধরে যায় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইবাংলা/এসআরএস
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.