প্রায় তিন মাস পর পর খোলা হয় কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স। এসব দানবাক্সে মেলে কোটি টাকা। পাশাপাশি বিদেশি মুদ্রা আর স্বর্ণালংকারও পাওয়া যায়। তবে এবার টাকা-স্বর্ণালংকারের সঙ্গে মিলেছে একটি চিঠি। স্বামীর দুঃখের কথা জানিয়ে এ চিঠিটি লিখেছেন এক গৃহবধূ।
শনিবার (০৬ নভেমবর) সকাল ৯টার দিকে মসজিদের আটটি দানবাক্স খুলে টাকা-স্বর্ণালংকারের সঙ্গে এ চিঠি পাওয়া গেছে। অচেনা গৃহবধূর চিঠিটি পড়েন টাকা গণনার তদারকি কাজে নিয়োজিত কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা খানম। চিঠির একটি ছবিও তুলে রাখেন তিনি।
ওই গৃহবধূ চিঠিতে লেখেন- ‘হে আল্লাহ, পাগলা মসজিদের রহমতে মাসুমকে টাকা-পয়সা আসার ব্যবস্থা করে দিও। হে আল্লাহ তুমি সাহায্য কর। তুমি ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। হে আল্লাহ পাগলা মসজিদের রহমতে আমার স্বামী যেন অনেক টাকা-পয়সার মালিক হন।
- সব ঋণ থেকে, অভাব থেকে-মানুষের কটু কথা থেকে মুক্তি পান। হে আল্লাহ তুমি দয়া কর। পাগলা মসজিদের রহমতে আমার স্বামীর সব দুঃখ দূর করে দিও। অনেক আশা নিয়ে এসেছি তোমার দরবারে। খালি হাতে ফিরিয়ে দিও না পাগলা মসজিদের রহমতে’।
এদিকে, দুপুর সোয়া ২টা পর্যন্ত প্রশাসন, ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ পাগলা মসজিদ কমপ্লেক্স মাদরাসা-এতিমখানার কয়েকশ শিক্ষক-শিক্ষার্থী টাকা গণনা করে তিন কোটি টাকা পান।
পাগলা মসজিদে দান করলে মনের ইচ্ছাপূরণ হয়- এমন বিশ্বাসে মুসলমান ছাড়াও অন্যান্য ধর্মের লোকজন এখানে দান করে থাকেন। টাকা ছাড়াও পাওয়া যায় চাল, ডাল, গবাদিপশু আর হাঁস-মুরগি। এসব পণ্য নিলামে বিক্রি করে জমা করা হয় মসজিদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে।
জনশ্রুতি রয়েছে, ৫০ বছর আগে এক সাধু পুরুষ নরসুন্দা নদীর মাঝখানে পানিতে মাদুর পেতে আশ্রয় নেন। তার মৃত্যুর পর সমাধির পাশে এ মসজিদটি গড়ে ওঠে। সেই থেকে পাগলা মসজিদ নামে পরিচিতি পায় মসজিদটি।
ইবাংলা/ এইচ/০৭ নভেম্বর, ২০২১