বিদায়ী বছরে উন্নয়ন প্রকল্প যেসব ছুঁয়েছে স্বপ্ন

ইবাংলা ডেস্ক

আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর দেশে একের পর এক উন্নয়ন করে চলেছে। এরই ধারবাহিকতায় ২০২৩ সালেও অনেকগুলো প্রকল্পের উদ্বোধন করেছে বর্তমান সরকার।

বিদায়ী বছরে স্বপ্ন ছুঁয়েছে মেট্রোরেল, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ, মাতারবাড়ী বন্দরের চ্যানেল, পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে এবং ঢাকা-কক্সবাজার রুটে রেলসহ বেশ কিছু প্রকল্প।

মেট্রোরেল

আরও পড়ুন…ফের জিএম কাদেরকে প্রাণনাশের হুমকি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলতি বছরের ৪ নভেম্বর আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত বহুল প্রতীক্ষিত মেট্রোরেল সার্ভিসের দ্বিতীয় ধাপের উদ্বোধন করেন। এরপর ৫ নভেম্বর থেকে উত্তরা-মতিঝিল রুটে প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলছে মেট্রোরেল। বেলা সাড়ে ১১টার পর মতিঝিল-আগারগাঁও রুটে চলাচল বন্ধ থাকলেও উত্তরা-আগারগাঁও সেকশনে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চলছে মেট্রোরেল।

২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেলের প্রথম ধাপের উদ্বোধন করা হয়। মূলত যানজট নিরসনে রাজধানীজুড়ে মেট্রোরেল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। মেট্রোরেলের সর্বনিম্ন ভাড়া নির্ধারণ করা হয় ২০ টাকা আর সর্বোচ্চ ভাড়া ১০০ টাকা।

উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত মোট ১৭টি স্টেশন চালু হলে এই ২১.২৬ কিলোমিটার পথ ভ্রমণ করতে মেট্রোরেলের মোট সময় লাগবে মাত্র ৪০ মিনিট। মেট্রোরেল প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী এবং প্রতিদিন ৫ লাখ যাত্রী বহন করতে সক্ষম হবে এবং প্রতি চার মিনিটে প্রতিটি স্টেশনে একটি ট্রেন আসবে।

আরও পড়ুন…প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ১ম ধাপের ফল কবে, যা জানা গেল

জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) মেট্রোরেল নির্মাণ করছে। আর প্রকল্পে সহজ শর্তে ঋণ সহায়তা দিচ্ছে। জাইকা প্রকল্পের জন্য ১৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা দিয়েছে।

উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার রেলপথ তৈরির পরিকল্পনা থাকলেও পরে মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত আরও দেড় কিলোমিটারের বেশি দৈর্ঘ্য বাড়ানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ফলে এর খরচ বেড়ে যায় প্রায় সাড়ে এগারো হাজার কোটি টাকা। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, এমআরটি-৬ লাইনের সংশোধিত প্রাক্কলিত ব্যয় ৩৩ হাজার ৪৭১ দশমিক ৯৯ কোটি টাকা।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল

চলতি বছরের ২৮ অক্টোবর বহুল প্রত্যাশিত চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত দেশের প্রথম যোগাযোগ পথ টানেলের ফলক উন্মোচন করা হয়। এটি উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নদীর তলদেশে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম সড়ক টানেল এটি।

আরও পড়ুন…তেজগাঁওয়ে ট্রেনে আগুন, নিহত ৪

২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি টানেলের খননকাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। নির্মাণকাজ শুরুর প্রায় সাড়ে চার বছর পর টানেলের উদ্বোধন করা হয়। টানেলের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের পর গাড়ি চলাচল শুরু হয় ২৯ অক্টোবর সকাল ৬টা থেকে।

দেশের প্রথম টানেলের সংযোগ সড়কসহ মোট দৈর্ঘ্য ৯ দশমিক ৩৯ কিলোমিটার। প্রধান টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। এ ছাড়া সংযোগ সড়ক ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার লম্বা। আনোয়ারা প্রান্তে থাকা একমাত্র ভায়াডাক্ট বা ওভারপাস ৭২৭ মিটার দীর্ঘ। টানেলের ভেতরে থাকা দুটি টিউব বা সুড়ঙ্গের প্রতিটির দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার। প্রতিটি টিউবে দুটি করে মোট চারটি লেন রয়েছে।

দেশের প্রথম এ টানেল নির্মিত হয়েছে বাংলাদেশ এবং চীন সরকারের আর্থিক সহায়তায়। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে খরচ হচ্ছে ১০ হাজার ৬৮৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে ৪ হাজার ৬১৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা। আর চীন সরকার ৬ হাজার ৭০ কোটি টাকা। চীন সরকার এ সহায়তা ঋণ হিসেবে দিচ্ছে। এ ঋণ সুদসহ ফেরত দিতে হবে।

আরও পড়ুন…শাহরুখ খানের স্ত্রীকে আইনি নোটিশ

এ ছাড়া টানেলের আগামী পাঁচ বছরের জন্য রক্ষণাবেক্ষণ এবং টোল আদায়ের দায়িত্বও পেয়েছে প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন কোম্পানি (সিসিসিসি) লিমিটেড। তাই এ প্রতিষ্ঠানকে দিতে হবে ৯৮৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৩০০ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে চারটি স্ক্যানার কেনা এবং স্থাপনের কাজে।

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

চলতি বছরের ২ সেপ্টেম্বর উদ্বোধন হয়েছে বহুল প্রতীক্ষিত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। ওইদিন বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক্সপ্রেসওয়ের ১১.৫ কিলোমিটার অর্থাৎ বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশের উদ্বোধন করেন। দ্রুতগতির এই উড়ালসড়কের দৈর্ঘ্য ১৯.৭৩ কিলোমিটার।

উদ্বোধনের পর ৩ সেপ্টেম্বর সকাল ৬টা থেকে কাওলা-তেজগাঁও পর্যন্ত অংশে সাধারণ যানবাহন চলাচল করতে খুলে দেওয়া হয়। এই সড়ক দিয়ে বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেটে পৌঁছাতে সময় লাগবে মাত্র ১০ মিনিট। যা যানজটের কারণে এখন প্রায় ১ ঘণ্টার মতো লাগে।

আরও পড়ুন…২০২৪ সালে রেমিট্যান্স আসবে ২৩ বিলিয়ন ডলার

শহরের যানজট নিরসন করতে প্রকল্প হাতে নেওয়ার এক দশকেরও বেশি সময় পরে এটির উদ্বোধন করা হয়। বিদেশি বিনিয়োগে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) অধীনে পরিবহন খাতে এটাই প্রথম প্রকল্প। সম্পূর্ণ এক্সপ্রেসওয়ে অর্থাৎ তেজগাঁও-কুতুবখালী পর্যন্ত ২০২৪ সালের জুনে চালু করার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে।

কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশে ওঠা নামার জন্য মোট ১৫ টি র‍্যাম্প থাকবে। এর মধ্যে ১৩টি র‍্যাম্প ৩ সেপ্টেম্বর যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। আর পুরো উড়ালসড়কে ৩১টি স্থান দিয়ে যানবাহন ওঠানামা (র‌্যাম্প) করতে পারবে।

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে শহরের যানজট কমাতে যে দুটি এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি করা হচ্ছে তার মধ্যে একটি। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, উড়ালসেতুর সম্পূর্ণ সুবিধা পেতে দুটি এক্সপ্রেসওয়ে চালু হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। দুটি এক্সপ্রেসওয়ে চালু হলে বাংলাদেশের উত্তর, পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে ঢাকা হয়ে যাতায়াতের সময় রাজধানীর যানজট এড়ানো সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এ ছাড়া ট্রাক এবং লরি, যা এখন দিনের বেলা শহরে প্রবেশ করতে পারে না, সেগুলোও এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করতে পারবে।

পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ

চলতি বছরের ১০ অক্টোবর পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-ভাঙ্গা রুটে নতুন ট্রেন সার্ভিস উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রকল্পের বিবরণ অনুযায়ী, বাংলাদেশ রেলওয়ে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন রেল ট্র্যাক নির্মাণ করছে। এর ৮২ কিলোমিটার অংশ ঢাকা ও ভাঙ্গাকে সংযুক্ত করে, যা ১০ অক্টোবর খুলে দেওয়া হয় এবং এর যশোর সংযোগকারী অবশিষ্ট অংশটি আগামী বছরের জুনে চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গত বছরের জুনে যুগান্তকারী পদ্মা সেতু উদ্বোধনের এক বছর দুই মাস পর পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-ভাঙ্গা রেল সার্ভিস উদ্বোধন করা হয়। গত ৭ সেপ্টেম্বর পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকা-ভাঙ্গা রুটে বিশেষ ট্রেনের ট্রায়াল সম্পন্ন হয়।

আরও পড়ুন…দুই শতাধিক প্রার্থীকে শোকজ, মামলার প্রস্তুতি চলছে

এর আগে, পদ্মা সেতুতে পাথরহীন রেললাইনের কাজ শেষ হওয়ার পর গত ৪ এপ্রিল ভাঙ্গা থেকে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্ত পর্যন্ত ট্রায়াল ট্রেন চালায় বাংলাদেশ রেলওয়ে। গত বছরের ১৪ অক্টোবর ‘পদ্মা সেতু রেল সংযোগ নির্মাণ প্রকল্প’র আওতায় ঢাকা ও যশোরের মধ্যে রেল সংযোগ নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হয়। এটি উদ্বোধন করেন প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এতে ২১ হাজার ৩৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা ঋণ দিচ্ছে চীনের এক্সিম ব্যাংক।

সমাপ্ত হওয়ার পর রেল যোগাযোগ পদ্মা সেতুর মাধ্যমে দেশের মধ্য এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানী শহরের প্রবেশ পথ আরও বর্ধিত হবে—যা মুন্সিগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও নড়াইল জেলার নতুন এলাকাকে যুক্ত করবে বলে প্রকল্পের বিশদ বিবরণে উল্লেখ করা হয়। প্রকল্পটি ঢাকা-যশোর-খুলনাকে ২১২ দশমিক শূন্য পাঁচ কিলোমিটার সংক্ষিপ্ত রুট দিয়ে বিকল্প রেলপথ সংযোগ স্থাপন করবে।

মাতারবাড়ী সমুদ্র বন্দর চ্যানেল

এ বছরের ১১ নভেম্বর কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে বহুল প্রতীক্ষিত দেশের প্রথম গভীর সমুদ্র বন্দরের চ্যানেল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে এই চ্যানেলে কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এই বন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতির গেম চেঞ্জার হিসেবে ভূমিকা পালন করবে। জোয়ার-ভাটায় যেকোন সময়ে ৮হাজার টিইইউএস’র জাহাজ ভিড়তে পারবে এখানে। ফলে আন্তর্জাতিক শিপিং লাইনগুলোর জন্য বাংলাদেশে জাহাজ নিয়োজিত করার সুবিধা বাড়বে। এতে পণ্য পরিবহনে খরচ উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসবে। এ বন্দরকে ঘিরে মাতারবাড়ী-মহেশখালী এলাকায় ব্যাপক শিল্পায়নসহ গড়ে উঠবে অর্থনৈতিক অঞ্চল। ফলে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে, দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিকসহ পেশাজীবীদের জীবিকার সুযোগ সৃষ্টি হবে। দেশের বেকার সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে এই বন্দর ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করবে।

আরও পড়ুন…৪ দেশের ১৪ ব্যক্তির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২৬ সালে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে। এই বন্দরের মাধ্যমে ২০২৬ সালের মধ্যে আনুমানিক ০.৬ থেকে ১.১ মিলিয়ন টিইইউস (বিশ ফুট দৈর্ঘ্যের কন্টেইনার) এবং ২০৪১ সালের মধ্যে আনুমানিক ২.২ হতে ২.৬ মিলিয়ন টিইইউস কন্টেইনার কার্গো হ্যান্ডেল করা সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে। মাতারবাড়ী বন্দরকে কেন্দ্র করে এখানে বাণিজ্যিক হাব গড়ে তোলা হবে। চট্টগ্রাম বন্দর যেমন দেশের অর্থনীতির লাইফ লাইন, তেমনি মাতারবাড়ী বন্দরও দেশের অর্থনীতির জন্য আরেকটি প্যারালাল লাইফ লাইনে পরিণত হবে বলেও আশা করা হচ্ছে।

পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে

চলতি বছরের ১৪ নভেম্বর উচ্চ গতির সড়ক পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের প্রথম ১৪ লেনের এ সড়কের নাম ‘শেখ হাসিনা সরণি’। এটি উদ্বোধনের মাধ্যমে ঢাকার পূর্ব থেকে পশ্চিমে নতুন সংযোগ তৈরি হয়। যদিও শতভাগ কাজ শেষ হওয়ার আগেই সাধারণের চলাচলের এ পথটা খুলে দেওয়া হয়।

পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে হলো, ঢাকার নতুন গেইটওয়ে। এটি দেশের প্রথম ১৪ লেনের মহাসড়ক। যার ৮টি এক্সপ্রেসওয়ে। এরই মধ্যে শতভাগ কাজ শেষ; কুড়িল থেকে কাঞ্চন সড়ক বাতির কাজও শেষ। মহাসড়কের দুপাশে রয়েছে ১০০ ফুট খাল। বিশেষ ব্যবস্থা থাকায় ভারি বৃষ্টিতেও এ পথে তৈরি হবে না কোনো জলাবদ্ধতা। এ ছাড়া শহরের জলাবদ্ধতা নিরসন করতেও এই প্রকল্প বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।

ইতোমধ্যে সড়ক ডিভাইডারে বসেছে ৩৩ হাজার নানা জাতের গাছ। রোড মার্কিংয়ের কাজ শেষ হওয়ায় যুক্ত হয়েছে নতুন মাত্রা। কুড়িল থেকে কাঞ্চন পর্যন্ত ১২.৩০ কিলোমিটার দেশের প্রথম ১৪ লেনের সড়ক এটি। এই পথে কুড়িল থেকে কাঞ্চন যাওয়া যাবে বিনা বাধায়।

আরও পড়ুন…ব্রাউজিং হিস্ট্রি জেনে নিচ্ছে ফেসবুক? আটকানোর উপায় জানুন

কুড়িল থেকে বালু নদী পর্যন্ত বাকি পথটার দুপাশে আছে আট লেনের রাস্তা। যা আশপাশের এলাকাকে এই সড়কে যুক্ত করবে এবং সঙ্গে রয়েছে দুই পাশের খাল। এটি কেবল এই এলাকা না, ঢাকা উত্তরের একটি বড় অংশের জলাবদ্ধতা নিরসনে সহায়তা করবে।

ঢাকা-কক্সবাজার রুটে রেল

গত ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজার রেল সংযোগ উদ্বোধন করেন। এ সময় ডিসেম্বর থেকে দুটি ট্রেন চালুর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর ১ ডিসেম্বর দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’ ঢাকার উদ্দেশ্যে কক্সবাজার আইকনিক রেলওয়ে স্টেশন ছেড়ে যায়। রাত ৯টা ১০ মিনিটে এই ট্রেন ঢাকায় পৌঁছায়। ফিরতি ট্রেন কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে ঢাকার কমলাপুর স্টেশন ছেড়ে যায় রাত সাড়ে ১০টায়।

এই রুটে ট্রেনের গতিসীমা ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটার নির্ধারণ করা হয়েছে। কয়েক দফা পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচলের সফল কার্যক্রম শেষে গত ১১ নভেম্বর কক্সবাজার রেল সংযোগ উদ্বোধন করা হয়। এই রুটে ট্রেন চলাচলকে কেন্দ্র করে পর্যটকসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ এবং উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে। কক্সবাজারে পর্যটন শিল্পের জন্য তৈরি হয়েছে নতুন সম্ভাবনা।

এই রুটে আপাতত দুটি ট্রেন চলাচল করছে। ট্রেনের সর্বনিম্ন ভাড়া যেটি ধরা হয়েছে সেটি হচ্ছে ১৮৮ টাকা। আর এটি নন এসি মেইল ট্রেন। সর্বোচ্চ ভাড়া এসি বার্থে ১ হাজার ৭২৫ টাকা। বর্তমানে রেলের যে ভাড়ার হার আছে সেই অনুযায়ী নির্ধারণ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন…বিধ্বস্ত নিউজিল্যান্ড, ঐতিহাসিক জয় টাইগারদের

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, নতুন এই ট্রেনে মোট ১৬টি কোচ রয়েছে। আসন রয়েছে ৭৮০টি। ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত শোভন চেয়ারের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৯৫ টাকা। এসি চেয়ারের ভাড়া ১ হাজার ৩২৫ টাকা, এসি সিটের ভাড়া ১ হাজার ৫৯০ টাকা এবং এসি বার্থের ভাড়া (ঘুমিয়ে যাওয়ার আসন) ২ হাজার ৩৮০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।অন্যদিকে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত শোভন চেয়ারের ভাড়া ২০৫ টাকা, স্নিগ্ধা শ্রেণির ৩৮৬ টাকা, এসি সিটের ৪৬৬ এবং এসি বার্থের ভাড়া ৬৯৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

ইবাংলা বাএ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.

Contact Us