পেট্রোলের খরচ বাঁচাতে এক জোড়া ঘোড়া কিনে ফেললেন অলোক কুমার রায় নামে এক যুবক। নিত্যদিনের যাতায়াতের সঙ্গী হিসেবে ঘোড়াকেই বেছে নিয়েছেন তিনি। পেট্রলের খরচ বাঁচানোর পাশাপাশি বিশ্ব উষ্ণায়নের হাত থেকে পৃথিবীকে বাঁচানোরও বার্তা দিয়েছেন তিনি।
ওই যুবককে এমন কাণ্ড দেখে স্থানীয়রা অত্যন্ত উৎসাহী হয়ে পড়েছেন। তার কাছে অশ্বারোহণের প্রশিক্ষণ নিতে ছুটে আসছেন প্রত্যেকে। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলির চুঁচুড়া থানার ব্যান্ডেলের বলগড় রোডে।
আরও পড়ুন : ‘আমার বউ ফেরত চাই’
ভারতীয় সংবাদ সংস্থা আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, কেন্দ্র পেট্রোল-ডিজেলের শুল্কে ছাড় দিয়েছে। তবে এখনও ভ্যাট কমায়নি রাজ্য। তার ফলে বিপাকে আমজনতা। আর তাই বিরক্ত হয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রাক্তন সেনা কর্মী ওই যুবক।
জানা যায়, অলোক মিনতি রায়ের ছেলে। তিনি প্রায় আট বছর কর্মসূত্রে সৌদি আরবে থাকতেন। সেখানে একটি নাম করা কোম্পানির হেভি ইকুইপমেন্ট অপারেটর ছিলেন তিনি। করোনাকালে গত বছর ব্যান্ডেলের বাড়িতে ফিরে আসেন। কিন্তু সৌদি আরবে থাকাকালীন ঘোড়ায় চড়া শিখেছিলেন। মোটরবাইকপ্রেমী অলোকের একাধিক বাইক রয়েছে। তাই জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিতে কার্যত নাকাল যুবক।
এই পরিস্থিতিতে মাথায় অন্য ভাবনা আসে অলকের। পরিবেশ সচেতন অলোক ঘোড়া কেনার কথা ভাবেন। সেই চিন্তাভাবনার ফলশ্রুতি হিসেবে চলতি বছরের জন্মাষ্টমীর দিন কলকাতার হেস্টিংস থেকে কাটিয়াওয়ারা প্রজাতির ঘোড়া কেনেন। খরচ পড়ে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা। আদর করে ঘোড়ার নাম রাখেন রাজু।
আরও পড়ুন : বধুবেশে কন্যা গেল পরীক্ষার হলে
এরপর চলতি মাসের কালীপুজার দিন হেস্টিংস থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা দিয়ে আরও একটি ঘোড়া কেনেন। তার পোশাকি নাম রাখেন মুসকান। পেট্রোল কিনতে যে টাকা খরচ হতো সেই টাকা প্রিয় ঘোড়াদের খাওয়া খরচ হিসেবে ব্যয় করেন অলোক। রাজুর পিঠে চড়ে ব্যান্ডেলের বিভিন্ন এলাকায় যান। প্রয়োজনীয় কাজ সারেন।
রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় অলোকের ঘোড়ার টগবগ শব্দ শুনে অনেকেই রীতিমতো অবাক হয়ে যান। অলোক জানান, “রোজ বাইকের তেলের খরচ লাগত ২৫০ টাকা। শুধু তাই নয় এই বাইক থেকে পরিবেশের দূষণ হতো। তাই ভাবলাম একটা সুস্থ ঘোড়ার পেছনে যদি খাওয়ার খরচ হিসেবে ওই টাকা খরচ করা যায় তাহলে পরিবেশ দূষণ এবং উষ্ণায়নের হাত থেকে বাঁচবে পৃথিবী।” তাই শেষমেশ এই সিদ্ধান্ত নেন অলোক। বর্তমানে অনেকেই অলোকের কাছে ঘোড়ায় চড়ার প্রশিক্ষণ নেওয়ার আবদার জানাতে শুরু করেছেন। আবদার শুনে বেজায় খুশি অলোকও।
ইবাংলা/এএমখান/২৬ নভেম্বর, ২০২১