ফাংগাল একনে যার প্রকৃত নাম ম্যালাসেজিয়া ফলিকিউলিটিস। ত্বকে ম্যালাসেজিয়া ইস্টের মাত্রা বেড়ে যাওয়া কিংবা ইমব্যালেন্সের কারণে ফাংগাল একনে হয়ে থাকে। সাধারণ একনের মতো এই একনেগুলো শুধুমাত্র মুখের পাশাপাশি কপালে, বুকে কিংবা পিঠেও দেখা যায়। ছোট ছোট দানাযুক্ত এই একনেগুলো সাধারণত ত্বকের নির্দিষ্ট একটি জায়গায় এর বিস্তার ঘটায়।
যেজন্য ফাংগাল একনে হয়:
ফাংগাল একনে হওয়ার পেছনে দায়ী মুলত ফাংগাস। সাধারনত ত্বক থেকে উৎপন্ন হওয়া তেল কিংবা আমাদের ত্বকের যত্নে ব্যবহৃত কোনো প্রোডাক্টের অতিরিক্ত তেল থেকে ত্বকে থাকা ফাংগাস খাদ্যগ্রহণ করে এবং ত্বকে ছড়িয়ে যায়। আমাদের ত্বকে ম্যালাসিজিয়া ইস্ট (এক ধরনের ফাংগাস) এর মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণেই ফাংগাল একনে হয়। এছাড়াও আরো কিছু কারন রয়েছে,যেমন- দীর্ঘ সময় ধরে অ্যান্টি বায়োটিকস সেবনের ফলে কিংবা ত্বকে ব্যবহারের ফলে ফাংগাল একনে বেড়ে যেতে পারে।
আরও পড়ুন:ত্বকের উজ্জ্বলতায় নিমপাতা
স্কিন কেয়ার রুটিনে যদি তেলযুক্ত কোনো প্রোডাক্ট ব্যবহার করলে এই ইস্ট ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পায় এবং ত্বকে ফাংগাল একনে দ্রুত ছড়িয়ে যায়। এছাড়া খাবারে চিনির পরিমাণ বেশি হলে ফাংগাল একনে বেড়ে যায়। কেননা ইস্টের দ্রুত বৃদ্ধির পেছনে চিনি অনেক বেশি দায়ী। ওয়ার্ক আউট কিংবা জিম থেকে এসে ভেজা কাপড় পরে থাকলে কিংবা গরমে ঘামার কারণে ঐ জামা পরে থাকলে ফাংগাল একনের উপদ্রব বেড়ে যায়। তাছাড়া ফাংগাল একনে আছে এমন কারো সংস্পর্শে আসলে ফাংগাল একনে হতে পারে। এমনকি তার ব্যবহার্য তোয়ালে, জামা কিংবা রুমাল ব্যবহারে এটি ছড়িয়ে যেতে পারে।
ফাংগাল একনে রোধে করণীয়
১. অ্যান্টি ড্যানড্রাফ শ্যাম্পুর ব্যবহার
চুলের ড্যানড্রাফ ফাংগাল একনের জন্য অনেকটাই দায়ী। অ্যান্টি ড্যানড্রাফ শ্যাম্পু ফাংগাল একনের ট্রিটমেন্ট হিসেবে তাই খুবই কার্যকর। এ ধরনের শ্যাম্পুতে আছে অ্যান্টি-ফাংগাল উপাদান, যা ত্বকের এই একনেগুলোকে কমাতে সাহায্য করে।
২. ত্বককে এক্সফোলিয়েট করা
ত্বককে নিয়মিত এক্সফোলিয়েট করলে ত্বকের ডেডসেল এবং ত্বকে জমে থাকা অতিরিক্ত তেল এবং ময়লা ত্বকের ইস্টকে কনট্রোল করতে সাহায্য করে। তাই ফাংগাল একনে ছড়ানো কমাতে ত্বককে এক্সফোলিয়েট করা জরুরি।
৩. ফেইস ওয়াইপস এবং বডি ওয়াইপসের ব্যবহার
আমরা বাসার বাহিরে থাকলে গরম কিংবা ঘামের প্রবণতা বেড়ে যায়। আর সেখান থেকে একনে হওয়ার প্রবণতাও বেড়ে যায়। তাই ফাংগাল একনের সমস্যা থেকে বাঁচতে ব্যাগে স্যালিসাইলিক এসিড যুক্ত ফেইস ওয়াইপস ব্যবহার করতে পারেন। আর যাদের শরীরের পেছনে কিংবা বডিতে ফাংগাল একনে আছে তাদের পক্ষে জিম কিংবা ওয়ার্কআটের পর শরীর ভেজা রাখা উচিত নয়। সেক্ষেত্রে বডি ওয়াইপ ব্যবহার করুন।
৪. সঠিক প্রোডাক্ট সিলেকশন করা
ত্বকে ফাংগাল একনে থাকলে স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টে স্যালিসাইলিক এসিড যুক্ত প্রোডাক্ট এড করতে হবে। এই উপাদানটি একনে প্রতিরোধে দারুণ কার্যকরী। এছাড়া এখন অনেক বিউটি কেয়ার প্রোডাক্টগুলোতে ফাংগাল একনে সেফ কিনা বিষয়টি উল্লেখ থাকে।
৫. অয়েল-ফ্রি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা
স্কিনে তেলযুক্ত প্রোডাক্ট ব্যবহার করা ফাংগাল একনে প্রবণ ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। কারণ এখান থেকেই একনে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই ত্বকে ফাংগাল একনের সমস্যা থাকলে ময়েশ্চারাইজার হিসেবে অয়েল-ফ্রি ময়েশ্চাইজার ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া মেকআপ প্রোডাক্টস সিলেক্ট করার সময়েও অয়েল-ফ্রি প্রোডাক্ট বেছে নিতে হবে।
ইবাংলা/টিপি/২৯ নভেম্বর, ২০২১