পদ্মার ভাঙনে দৌলতিদয়া ঘাট ও শতাধিক পরিবার

রাজবাড়ী প্রতিনিধি :

গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে বিন্নি নদ নদীতে পানি বাড়তে থাকায়। পানি বৃদ্ধি পেয়ে পদ্মা নদীতে তীব্র স্রোতের সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে দেশের গুরুত্বপূর্ণ দৌলতদিয়া ফেরিঘাট, লঞ্চঘাট ও ঘাট সংলগ্ন কয়েকটি গ্রামে ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে।

ভাঙনে লঞ্চঘাট হতে ১ নং ফেরিঘাট এলাকার মধ্যে তিনটি পয়েন্টে অন্তত ৫০ মিটার এলাকার জিও ব্যাগ ধসে গেছে। এতে করে ওই এলাকায় বড় ধরনের ঝুঁকির সৃষ্টি হয়েছে। হুমকির মুখে পড়েছে ফেরিঘাটসহ সংলগ্ন মজিদ শেখের পাড়ার দেড় শতাধিক পরিবার। এছাড়া ৭ নং ঘাট ও ঘাট সংলগ্ন সাত্তার মেম্বার পাড়ার অর্ধশত পরিবারও চরম হুমকিতে রয়েছে।

শুক্রবার (২ জুলাই) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভাঙন প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড জরুরি ভিত্তিতে লঞ্চঘাট এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলছে। কিন্তু ফেরিঘাট রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের কোনো তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি।

দুপুরের দিকে ১ নং ফেরিঘাট ঘুরে দেখা যায়, সেখানে অন্তত ৩টি পয়েন্টের জিও ব্যাগ ধসে প্রচন্ড ঝুঁকির সৃষ্টি হয়েছে। পাশ দিয়েই বয়ে যাচ্ছে তীব্র স্রোত।

এ সময় পাড়ের বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য বাবু মোল্লা, বেনজির আহমেদ, বিলাস বেপারিসহ কয়েকজন বলেন, আমরা অনেক আগে থেকে এখানে ভাঙন ঝুঁকির বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষকে বলে আসছি।

মাঝে দিন দশেক আগে কিছু জিও ব্যাগ ফেলেছিল। কিন্তু গত ৩ দিন ধরে এখানে ৩টি পয়েন্টে ৫০ মিটারের মতো এলাকা ধসে গেলেও তারা কোনই ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আরেকটু পানি বেড়ে গেলে ভাঙন পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেবে। তখন ঘাটের সঙ্গে সঙ্গে এখানকার অন্তত ২০০ পরিবারের ভিটেমাটি বিলীন হয়ে যাবে।

শুক্রবার বেলা ২টার দিকে ৭ নং ফেরিঘাট সংলগ্ন সাত্তার মেম্বার পাড়ায় দেখা যায়, আলতাফ মোল্লা ও সূর্যবানু দম্পতি পাশ থেকে কোদাল দিয়ে বালি কেটে বস্তায় ভরে প্রাণপণ চেষ্টা করছেন তাদের ভিটেমাটি রক্ষার জন্য।

বুধবার বিকেল থেকে ওখানে বড়বড় ঢেউয়ের আঘাতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। তারা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, এখানে এখনো স্রোতের সৃষ্টি হয়নি। ঢেউয়ের আঘাতে ভাঙছে। কেউ এদিকে ফিরেও তাকাচ্ছে না।

এ সময় সাহেরা বেগম, রফিক শেখ, মমিন সরদার, বাবু মন্ডলসহ অনেকেই বলেন, শুস্ক মৌসুমে এ এলাকা থেকে প্রভাবশালীরা বালু কেটে নিয়ে যাওয়ায় এখন অল্পতেই আমাদের গ্রামটি ধসে যাচ্ছে। তবে কিছু জিও ব্যাগ ফেললে মনে হয় এখনো পাড়ের বাড়িঘরগুলো রক্ষা করা সম্ভব।

দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মন্ডল জানান, দৌলতদিয়ার লঞ্চঘাট, ফেরিঘাট ও ঘাট সংলগ্ন কয়েকটি গ্রাম এবং ঘাটের উজানে আরো কয়েকটি গ্রামে ভাঙন শুরু হয়ে গেছে। ঘাটগুলো ছাড়াও হুমকিতে রয়েছে বহু পরিবার। জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানাচ্ছি।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আজিজুল হক খান মামুন বলেন, আমি ভাঙন পরিস্থিতি সরেজমিন দেখে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসক, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যানকে অবগত করেছি। আশা করছি দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ইই/ দৌল/ ২ জুলাই, ২০২১

পরিবারশতাধিক
Comments (0)
Add Comment