কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলায় ইফতার পার্টি আয়োজনকে কেন্দ্র করে যুবদলের দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বেশ কয়েকজন যুবদল নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
রবিবার(২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নাগেশ্বরীর দক্ষিণ বেপারিরহাট এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে আহতদের একজন কুড়িগ্রাম পৌর এলাকার হাসপাতাল পাড়ার ফয়েজ উদ্দিন বাচ্চুর ছেলে যুবদলকর্মী ইমরান হোসেন আকাশ (৩০) নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। পরে চিকিৎসা শেষে ছাড়পত্র নিয়ে হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান।
জেলা যুবদলের সভাপতি রায়হান কবির বলেন, দেশনেত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি উপলক্ষে নাগেশ্বরী মহিলা কলেজ মাঠে উপজেলা যুবদলের পক্ষ থেকে ইফতার পার্টি ও দোয়ার আয়োজন করা হয়। কিন্তু জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান রানার আপত্তিতে স্থানীয় প্রশাসন সেটি বন্ধ করে দেয়।
পরবর্তীতে উপজেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ফরহাদ হোসেনের চাতালে এই ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়। সেই ইফতার পার্টিতে জেলার যুবদল নেতাকর্মীরা এবং সাধারণ সম্পাদক নাদিম আহমেদের নেতৃত্বে অংশ নেয়ার জন্য রওয়ানা হন।
জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান রানার সমর্থিত কিছু যুবদল কর্মী পথিমধ্যে ব্যাপারিরহাট এলাকায় আমাদের গতিরোধ করলে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এ সময় আমাদের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহতও হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে ইফতার পার্টিতে আমাদের যাবার সুযোগ করে দেয়।
জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নাদিম আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটি ন্যাক্কারজনক। এটি দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে। তিনি দাবি করেন সংঘর্ষের সময় বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে। এবং একটি মোটরসাইকেলের কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছে না।
এই বিষয়ে সাইফুর রহমান রানা সমর্থক উপজেলা যুবদলের এক অংশের আহবায়ক নুরুজ্জামাল হক বলেন, আমাদের পক্ষ থেকেও একটি ইফতার পার্টি আয়োজন করা হয়েছিল। সেই মোতাবেক জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক রানা ভাই ও আমি নিজে জেলা যুবদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে আমন্ত্রণ করেছিলাম। কিন্তু কে বা কারা উপজেলা যুবদলের ব্যানারে নাগেশ্বরী মহিলা কলেজে আরেকটি ইফতার পার্টির আয়োজন করে। সেটি আমরা পুলিশ ও কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে বন্ধ করে দেই।
কিন্তু তারপরও তারা একি সময়ে ইফতার পার্টি অন্যত্র আয়োজন করেন। সেখানে জেলা যুবদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আসার খবর পেয়ে আমরা দক্ষিণ ব্যাপারিরহাটে তাদের সাথে সাক্ষাত করি। এ সময় সভাপতিসহ জেলার নেতৃবৃন্দ আমাকে অপমানজনক কথাবার্তা বললে হাতাহাতি বেঁধে যায়। এতে আমিসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছি। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে।
এই বিষয়ে জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান রানা বলেন,আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। তাই এ বিষয়ে আমার কোন মন্তব্য নেই। এছাড়া এ ঘটনায় যুবদলের পক্ষ থেকে কেউ আমাকে অভিযোগও করেনি।
নাগেশ্বরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নবিউল হাসান বলেন,ইফতার পার্টি আয়োজনকে কেন্দ্র করে যুবদলের দু’গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল। আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেই। তবে এই বিষয়ে থানায় কেউ অভিযোগ করেনি।
ইবাংলা/এসআর /২৫ এপ্রিল, ২০২২