বরগুনার আমতলী উপজেলার চাওড়া ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের খোরশেদ হাওলাদারের ছেলে আউয়াল হাওলাদার (৩৫) জীবিকার সন্ধানে গত এক বছর আগে সৌদি আরবে যান। গত ১০ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান। টাকার অভাবে তার লাশ দেশে আনতে পারছেনা পরিবার। মৃত্যু কালে স্ত্রী,এক ছেলে ও দুই কন্যা সন্তান রেখে গেছেন। বর্তমানে তার পরিবারে শোকের অন্ধকার ছায়া নেমে এসেছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায় , আউয়াল হাওলাদার দীর্ঘদিন ধরে বেকার থাকায় গত ২০২১ সালের ২১ আগষ্ট মাসে বেসরকারি সংস্থা (এনজিও), কৃষি ব্যাংক, আত্মীয় স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশিদের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে সৌদি আরবে যান। সেখানে কাজ করে বাড়ীতেও কিছু টাকা- পয়সা পাঠাতে থাকেন।
আরও পড়ুন…রাজনীতির নামে যারা আগুন সন্ত্রাস করবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে
৬ষ্ঠ শ্রেনীতে পড়ুয়া মৃত্যু আউয়ালের একমাত্র ছেলে আরিফ কেঁদে কেঁদে বলেন,কয়েক দিন হয়েছে আমার আব্বা ফোন দেয় না। মানষে কয় আমার আব্বা নাকি মইরা গেছে! আমার আব্বা মরে নাই। যদি মইরা যাইত তাইলে আব্বার লাশ বাড়িত আনতে এত দেরি লাগে ক্যা,আমনেরা সবাই আমার লগে মিচা কতা কইতাছেন, আমারে কান্দাইয়া আমনেগো লাভ কী। এসব বলে মৃত্যু আউয়ালের ছেলে অচেতন হয়ে পরেছে। কোনো মানুষ দেখলে এভাবেই আহাজারি শুরু করেন আউয়ালের অবুঝ শিশুরা ।
অপর দিকে চতুর্থ শ্রেনীতে পড়ুয়া মৃত্যু আউয়ালের মেয়ে মারিয়া আহাজারি করে বলেন,আমার আব্বারে আইন্নাদেন, আব্বার মুখটা আমারে একবার দেহান, আমার আব্বা সৌদি গেছে। গত মাসেও টাহা পাডাইছে। আব্বার সাথে প্রত্যেকদিন কথা না কইলে আমার রাইতে ঘুম আয় না। এসব বলে কেঁদে কেঁদে বুক ভাসাচ্ছেন তার একমাত্র মেয়ে।মৃত্যু আউয়ালের প্রথম শ্রেনীতে পড়ুয়া ছোট মেয়ে কারিমা নির্বাক হয়ে বসে থাকেন।
বাবার লাশ কখন আসবে পথে দিকে চেয়ে আছেন আউয়ালের অবুজ শিশুরা ও তার পরিবারের স্বজনরা।পরিবারের উপার্জনক্ষম এক মাত্র ব্যক্তির মৃতৃতে ২ মেয়ে ১ ছেলেকে সাথে নিয়ে স্বামীর ছবি নিয়ে কেঁদে কেঁদে দিনাতিপাত করছেন নিহত আউয়ালের স্ত্রী খাদিজা (৩০)।
মৃত্যু আউয়ালের পিতা খোরশেদ হাওলাদার বলেন, গত এক বছর পূর্বে ধার দেনা করে আউয়ালকে বিদেশে পাঠাই কিন্তু বছর না যেতেই আমার ছেলে স্টোক করে সেখানে মারা গেলো। আমি কিছুই চাই না, এখন শুধু ছেলের লাশ চাই। ওর লাশটা যেনো আমাদের মসজিদের পাশে কবর দিতে পারি।ছেলের লাশটা পাইলেও কিছু সান্তনা পাইতাম। বিদেশ থেকে ছেলের লাশটারে আনার জন্য প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা চাই।’
আরও পড়ুন…সরাইলে ইয়াবাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার
তিনি আরও বলেন,আউয়ালের লাশ সৌদি আরবের আল কাসিম জেলার গুরাইদার মারগাজী হাসপাতালে রয়েছে। আউয়াল সৌদি গিয়ে ফ্রি ভিসায় কাজ করতেন । যেদিন আউয়াল মারা যান সেদিন সৌদি নাগরিক সলেমান দাখাইন এর কাজ করেছিলো। কিন্তু আউয়ালের নিয়োগ দাতা সলেমান দাখাইন না হওয়ায় লাশ দেশে না পাঠিয়ে সে হাসপাতালে রেখে দিয়েছেন। আমরা সৌদি আরবে যোগাযোগ করলে সেখান থেকে জানানো হয়, লাশ আনতে হলে ২ থেকে তিন লাখ টাকা দিতে হবে। নতুবা লাশ পাঠাতে পারবেনা।
সবকিছু বিক্রয় ও ধার ধেনা করে ছেলেকে বিদেশ পাঠাইছি। ধারদেনাই পরিশোধ করা হয়নি। কিভাবে এত টাকা জোগাড় করবো। কোথায় পাবো এত টাকা।
এ বিষয়ে আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভারপ্রাপ্ত (ইউএনও) এস এম সাদিক তানভীর জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে অসহায় পরিবারটিকে সকল প্রকার সহযোগিতা করা হবে। মৃত্যু আউয়ালের লাশটি দেশে আনার জন্যে প্রবাসী কল্যানমন্ত্রী ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করবেন বলে তিনি জানান।
সম্প্রতি,গত ১০সেপ্টেম্বর সৌদি আরবে তিনি অসুস্থ হয়ে পরেন। পরে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হয়ে তিনি সেখানে মারা যান। আউয়ালের মৃত্যুতে পরিবারে নেমে এসেছে অন্ধকারের ছায়া । পরিবারের উপার্জনক্ষম এক মাত্র ব্যক্তির মৃতৃতে ২ মেয়ে ১ ছেলেকে সাথে নিয়ে স্বামীর ছবি নিয়ে কেঁদে কেঁদে দিনাতিপাত করছেন নিহত আউয়ালের স্ত্রী খাদিজা (৩০)।
আউয়ালের পিতা খোরশেদ হাওলাদার বলেন, এক বছর পূর্বে আউয়ালকে বিদেশে পাঠায় কিন্তু বছর না যেতেই আমার ছেলে স্টোক করে মারা গেলো। এখন আমি শুধু ছেলের লাস চাই যেনো মসজিদের পাশে কবর দিতে পারি। তিনি আরো বলেন, ‘ছেলের লাশটা পাইলেও কিছু সান্তনা পাইতাম। বিদেশ থেকে ছেলের লাশটারে আনার জন্য প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা চাই।’
আউয়ালের লাশ সৌ আরবের আল কাসিম জেলার গুরাইদার মারগাজী হাসপাতালে রয়েছে। আউয়াল সৌদি গিয়ে ফ্রি ভিসায় কাজ করতেন । যেদিন আউয়াল মারা যান সেদিন সৌদি নাগরিক সলেমান দাখাইন এর কাজ করছিল। কিন্তু আউয়ালের নিয়োগ দাতা সলেমান দাখাইন না হওয়ায় লাশ দেশে না পাঠিয়ে সে হাসপাতালে রেখে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন…পুকুর ভরাট করে ভবন নির্মাণ, ৭ জনের নামে মামলা
আউয়ালের পরিবার পরিবার সৌদি আরবে যোগাযোগ করলে সেখান থেকে জানানো হয় লাশ আনতে হলে ২ থেকে তিন লাখ টাকা দিতে হবে। নতুবা লাশ পাঠাতে পারবেনা। অসহায় দরিদ্র এ পরিবারের সবকিছু বিক্রয় ধার ধেনা করে বিদেশ গিয়ে ছিলেন আউয়াল। ধারদেনাই পরিশোধ করা হয়নি। কিভাবে এত টাকা জোগাড় করবে। কোথায় পাবেএত টাকা । বাবার লাশ কখন আসবে পথে দিকে চেয়ে আছেন আউয়ালের অবুজ শিশুরা ও তার পরিবারের স্বজনরা।
ইবাংলা/জেএন/২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২