এ বছর ডিসেম্বর মাসের শেষে দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভা ও নির্বাচন। প্রেসক্লাবের নির্বাচনের জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞগণ মনে করেন। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রেসক্লাব এখন সরব। নেতা-নেত্রীসহ সাধারণ সদস্যদের উপস্থিতি অনেক বেড়ে গেছে।
আগামী দুই বছরের জন্য মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ফোরাম থেকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদে কে মনোনয়ন পাচ্ছেন এ বিষয়ে কৌতূহলের শেষ নেই। অনেকেই প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের যোগাযোগ বাড়িয়ে দিয়েছেন এবং নেত্রীর দেখা বা সহানুভূতির আশায় নিজ খরচে অনেকে আমেরিকাও পাড়ি দিয়েছে বলে সূত্রে জানা যায়।
আরও পড়ুন…চলতি বছরে বৈশ্বিক আইনশৃঙ্খলা সূচকে বাংলাদেশের উন্নতি
তবে প্রেসক্লাব ক্যান্টিনে ও গেস্ট রুম বা বারান্দা আর বাগানে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত জল্পনা কল্পনার আর আলোচনার শেষ নেই।জাতীয় প্রেস ক্লাবের নির্বাচন আগ্রহী প্রার্থীরা অক্টোবরের শুরু থেকে ক্লাব সদস্যদের সহানুভূতি ও সমর্থনের আশায় সকালে বিকালে টেবিলে টেবিলে আলাপ আর লবিং করছে।
ফোরাম নেতাদের ভক্তি আর শ্রদ্ধা দিয়ে তাদের মন গলানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে আগ্রহী প্রার্থীদের অতীতের কর্মকান্ড নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। নতুন সদস্য পদ প্রদানে ব্যর্থতা এবং প্লেস ক্লাবের ৩২ তলা বঙ্গবন্ধু মিডিয়া কমপ্লেক্স নির্মাণে কেন হাত দেওয়া হয়নি এ বিষয়ে ও সমালোচনার ঝড় বইছে। বিগত কয়েক বছর যাবত মিডিয়া কমপ্লেক্স ভবনের উদ্বোধনী সাইনবোর্ড দেখতে দেখতে সদস্যরা বিরক্ত।
জানা গেছে আওয়ামী ফোরামের সভাপতি পদে নির্বাচন করার জন্য যারা আগ্রহী তারা হলেন সাইফুল আলম (সম্পাদক যুগান্তর ও সাবেক সভাপতি জাতীয় প্রেস ক্লাব), ফরিদা ইয়াসমিন (বর্তমান সভাপতি), ফোরাম নেতা ইকবাল সোবহান
চৌধুরী বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল এবং বিএফইউজের বর্তমান সভাপতি ওমর ফারুক এবং ডিইউজের সাবেক সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ। সাধারণ সম্পাদক পদে সাহেদ চৌধুরী (সমকাল) শ্যামল দত্ত (ভোরের কাগজ) মাঈনুল আলম (ইত্তেফাক) আবু জাফর সূর্য (সাবেক সভাপতি ডিইউজে) এরা সবাই সদস্যদের সমর্থন ও নেতাদের সহানুভূতি আদায়ের সদা ব্যস্ত।
আরও পড়ুন…পুলিশী বাঁধায় বরগুনায় যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত
আরো জানা গেছে এবার প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর ডিনার কার্ড অনেক সদস্য আগ্রহী প্রার্থীদের কাছ থেকে পেয়েছেন। টাকা দিয়ে এ ডিনার কার্ড কিনতে হয়নি যাকে বলে বাড়তি সুবিধা যা অনেক সদস্য ভোগ করেছেন। সামনের এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আগাম প্রস্তুতি হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সাংবাদিকদের নিয়ে বুধবার (২৬ অক্টোবর) সকাল ১১ টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের তৃতীয় তলায় ফোরাম সভার আয়োজন করা হয়। সভার শুরুতে হট্টগোল বেঁধে যায়।
সাবেক সভাপতি শফিকুর রহমান ইকবাল সোবাহন চৌধুরীকে সভাপতির আসনে দেখতে পেয়ে হইচই শুরু করেন এবং তার হাত থেকে মাইক কেড়ে নিয়ে বক্তৃতা শুরু করেন বলে জানা গেছে। ইকবাল সোবাহান চৌধুরীকে শফিকুর রহমান গালমন্দ করেন। পরে শফিকুর রহমান ও মোল্লা জালালের নেতৃত্বে উপস্থিত সংখ্যাগরিষ্ট সদস্যদের গ্রুপ নিয়ে সভা থেকে বের হয়ে পড়েন।
এ সময় আবু জাফর সূর্যসহ আরো অনেক ইউনিয়ন নেতা এ গ্রুপের অগ্রভাগে ছিলেন।শফিকুর রহমান ও মোল্লা জালাল আগামী নির্বাচনে সাইফুল আলমকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে শ্যামল দত্তের নাম ঘোষণা করেন। কোর কমিটির নাম ঘোষনা করে আগামী ২ই নভেম্বর সকাল ১১ টায় কোর কমিটির সভা আহ্বান করে সভাসমাপ্তি ঘোষণা করেন।
এদিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সাংবাদিক ফোরাম ইকবাল সোবহান চৌধুরী ও ওমর ফারুকের নেতৃত্বে সকাল ১১ টা থেকে বিকাল তিনটা পর্যন্ত সভা চলে। এই সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএফইউজের মহাসচিব দ্বীপ আজাদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী, ফোরাম নেতা আব্দুল জলিল ভূঁইয়া, মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়াসহ আরো অনেকে।
সভায় ইকবাল সোবাহান চৌধুরীকে ফোরামের শীর্ষ নেতা ঘোষণা করে কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই সভা মুল্তবি ঘোষণা করা হয়। আওয়ামী সাংবাদিক ফোরাম দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে ভিন্ন জায়গায় গ্রুপ মিটিং করাতে এ ফোরামের জন্য শুভ লক্ষণ নয় বলে অনেকেই মনে করেন এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকে।
আরও পড়ুন…মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধের বিধান ঘোষণা করে রিট
সাধারণ সদস্যরা এ বিভক্তিকে ভালো চোখে দেখছে না এবং বিপক্ষ দলের জন্য সুফল বয়ে আনবে বলে ফোরামের অনেক সাবেক নেতা মনে করেন তবে এ জটিলতার অবসান জরুরি।
ইবাংলা/জেএন/২৭ অক্টোবর ২০২২